ইনকিলাব ডেস্ক : কাশ্মীরি জনগণের লাগাতার বিক্ষোভ দমনে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক হিংস্রতা আর অমানবিকতার পরে অবশেষে কাশ্মীর উপত্যকায় জরুরি অবস্থা শিথিল করা হয়। প্রায় দুই মাস সময়ের এই বিক্ষোভ-আন্দোলনে মানুষের জীবনহানির পাশাপাশি বহু সংখ্যক নিরপরাধ কাশ্মীরি চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর ছররা গুলির আঘাতে। অতঃপর গতকাল সোমবার থেকে এই জরুরি অবস্থা শিথিল করা হয়। পালওয়ামা জেলা এবং এর বাইরের কিছু অংশ ছাড়া কাশ্মীরের অন্যান্য এলাকায় পরিবেশ কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসায় জরুরি অবস্থা শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
কাশ্মীরের হিজবুল নেতা বুরহানি ওয়ানির মৃত্যুর মধ্যদিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠে কাশ্মীর উপত্যকা। গত ৮ জুলাই হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান ওয়ানিকে হত্যা করে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। এর পরই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো কাশ্মীর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গত ৯ জুলাই থেকে রাজ্যে কারফিউ জারি করা হয়। ৫১ দিনের সহিংসতায় এই রাজ্যে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে ৭০ জন কাশ্মীরি। এছাড়া আহত হয়েছে আরো ১১ হাজার মানুষ। গত রোববার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার মাসিক রেডিও অনুষ্ঠান ‘মান কি বাতে’ বলেন একতা ও মমতাই পারে কাশ্মীর উপত্যকায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে। প্রধানমন্ত্রী মোদি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ কাশ্মীরকে রক্ষা করতে ২২ জন এমপি নিয়োগ দেয়ার বিষয়টির সমালোচনা করেন যারা কাশ্মীর পরিস্থিতি সম্পর্কে আন্তর্জাতিক বিশ্বে দেশটির পক্ষে সমর্থন আদায় করার চেষ্টা করবেন। তবে ভারতের পক্ষ থেকে অনুপ্রবেশ ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পাকিস্তানের কাছে আলোচনার প্রস্তাবনা দেওয়া হলেও কাশ্মীর ইস্যুতে এখনো ভারত আলোচনায় রাজী নয়।
এদিকে, রাজ্যের এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, পুরো উপত্যকা থেকে কারফিউ প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে পুলওয়ামা শহর এবং শ্রীনগরের নওহাট্টা ও এমআর গুঞ্জের থানাগুলোতে এ কারফিউ জারি থাকবে। গত রোববার নিরাপত্তা বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বৈঠকে এ কারফিউ প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে শনিবার কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি। ওই সময় কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কাশ্মীরের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ৩ সেপ্টেম্বর সর্বদলীয় একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। এ দলে থাকছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। পিটিআই, ওয়েবসাইট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন