মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশ উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নে চ্যাম্পিয়ন

প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার


বিশেষ সংবাদদাতা : বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সীপ্রশংসা করে ঢাকায় নবনিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জুলিয়া নিবলেট আজ বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নে একজন চ্যাম্পিয়ন।
বাংলাদেশে নবনিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জুলিয়া নিবলেট গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে সাক্ষাতকালে এ কথা বলেন। বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার নতুন হাইকমিশনার জুলিয়া নিবলেট।
গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে অস্ট্রেলিয়ার নতুন হাইকমিশনার এই প্রশংসা করেন বলে জানিয়েছেন তার প্রেস সচিব ইহসানুল করিম। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ওই সাক্ষাৎ শেষে তার প্রেস সচিব সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেছেন নতুন হাইকমিশনার। তিনি বলেন, ইউ আর দি চাম্পিয়ন অব উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড ইকনোমিক ডেভেলপমেন্ট।
শেখ হাসিনা ১৯৭২ সাল থেকে তৈরি হওয়া দুই দেশের সুসম্পর্কে কথা উল্লেখ করে সন্তোষ প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, প্রথম ওইসিডি (অর্গানাইজেশন ফর ইকনোমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) দেশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়া ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।
প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার সরকার ও জনগণের অসামান্য অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী তাকে ধন্যবাদ জানান।
অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার বাংলাদেশের নারী উন্নয়নের প্রশংসা করলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে পেছনে রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়। নারী শিক্ষা ও নারীর উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি বঙ্গবন্ধুর শাসনামলেই প্রথম শুরু হয়। তিনি সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা করেন; বাধ্যতামূলক করেন প্রাথমিক শিক্ষা।
ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ক্ষমতায় এসে দেখলাম আমাদের উচ্চ পদে কোনো নারীরা নেই। প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী, বিচার বিভাগ, স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিসহ সব খাতেই আমরা নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করলাম। উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত বিনামূল্যে বই দেয়ার এবং ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের অংশগ্রহণ বেশি হওয়ার কথাও তুলে ধরেন তিনি। সব ধরনের খেলায় বাংলাদেশের নারীদের অংশগ্রহণের কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা
প্রেস সচিব ইহসানুল বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা বিশ্বায়িত সমস্যা। আমরা সচেতনতা তৈরি করছি এবং মানুষের কাছ থেকে এর অভূতপূর্ব সাড়া পাচ্ছি।
সচেতনতা বাড়াতে ইমাম, অভিভাবক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় ও তাদের সন্ত্রাসবাদবিরোধী জনসচেতনা তৈরিতে অন্তর্ভুক্ত করার কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা, ক্রীড়া, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন খাতে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আরও জোরদার সম্পর্ক দেখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন বলে জানান ইহসানুল করিম।
তিনি বলেন, নতুন হাইকমিশনার জ্বালানি, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার একসঙ্গে কাজ করতে চাওয়ার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। দুই দেশের মধ্যে ক্রীড়া সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি সমঝোতা স্মারক সই হতে যাচ্ছে বলেও সাক্ষাতে জানিয়েছেন নতুন হাইকমিশনার। এসময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন।
কৃষি ও শিপবিল্ডিংয়ে নরওয়ের সহায়তা কামনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পারস্পরিক স্বার্থে আরো উন্নয়ন এবং বাংলাদেশের কৃষি ও শিপবিল্ডিং সেক্টরের বিকাশে নরওয়ের সহায়তা কামনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের ফিসারিজ সেক্টরের উন্নয়ন, ব্রিডিং ফিঙ্গারলিং, ফিশারিজ ম্যানেজমেন্টে এবং বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চলে মেরিন মৎস্য প্রকল্পে যৌথ উদ্যোগে প্রকল্প গ্রহণে নরওয়ের সহায়তা চেয়েছেন।
ঢাকায় নরওয়ের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মেরেটে লুনডেমো গতকাল বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের শিপবিল্ডিং এবং শিপ রিসাইক্লিং’র অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার দেশের দক্ষিণ অঞ্চলে একটি নতুন শিপইয়ার্ড স্থাপন করেছে। নরওয়ে সেখানে তাদের একটি নিজস্ব শিপইয়ার্ড নির্মাণ করতে পারে। তারা চাইলে এর জন্য আমরা তাদেরকে জমি দেব।
বৈঠকে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে শিপইয়ার্ড শিল্পের অগ্রগতির প্রশংসা করে বলেন, চট্টগ্রামে তাদের দুটি জাহাজ নির্মাণ করা হয়েছে। আরো চারটি জাহাজ নির্মাণের ব্যাপারে মধ্যস্থতা চলছে।
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগের ব্যাপারে বিশেষ করে স্বাস্থ্য, টেলিকম এবং শিপবিল্ডিং সেক্টরে তার দেশের আগ্রহের কথা জানান।
নরওয়ের দূত বলেন, বাংলাদেশে তার অবস্থানকালে এই দক্ষিণ এশীয় দেশটিতে প্রভূত উন্নয়ন বিশেষ করে দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণের অবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। তিনি বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।
মেরেট বলেন, তার দেশে পাঁচ বছর আগে অনুরূপ এক সন্ত্রাসী হামলায় প্রায় ৭৭ জন লোক প্রাণ হারায়। এদের মধ্যে অধিকাংশই ছিল শিশু। দূত বলেন, নরওয়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন