শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

জাবিতে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

জাবি সংবাদদাতা : শিক্ষকদের কোন পদ খালি না থাকলেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার ও রাজনীতি বিভাগে চারজন শিক্ষককে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
আর্থিক লেনদেন ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে বিভাগের সভাপতি বশির আহমেদ এ নিয়োগ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সভাপতি বশির আহমেদের মেয়াদ শেষ হবে ১৭ সেপ্টেম্বর। তাই তিনি শেষ মুহূর্তে তড়িঘড়ি করে ওই বিভাগে প্রভাষক ক্যাটাগরীর কোনো পদ ফাঁকা না থাকলেও তিনজন স্থায়ী প্রভাষক, তিনজন অস্থায়ী প্রভাষক ও একজন সহকারী অধ্যাপক পদের জন্য ৩১ জুলাই একটি সার্কুলার দেন। তার মেয়াদ শেষ মুহূর্তে হওয়ায় তিনি ২৯ আগস্টই মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার তারিখ নির্ধারণ করেন।
বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, নামে মাত্র মৌখিক পরীক্ষা শেষে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ভাল ফলাফল ধারীদের উপেক্ষা করে ২২তম ব্যাচের শাকিল আহমেদ, ৩০তম ব্যাচের সানোয়ার সিরাজ, বিএম হাসান মাহমুদ এবং ৩৮তম ব্যাচের নাসরিন সুলতানা সুবর্নাকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সুপারিশপ্রাপ্তদের চেয়ে ভাল ফলাফলধারী কমপক্ষে ২০জন প্রার্থীকে বাদ দেয়া হয়েছে।
যাদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, এর মধ্যে নাসরিন সুলতানা সুবর্না বিভাগের সভাপতি বশির আহমেদের সাথে সখ্যতার সূত্রে নিয়োগ পাচ্ছেন বলে বিভাগের একাধিক সূত্র জানিয়েছেন। সুর্বনা বিভাগে শিক্ষক হওয়ার আগেই তিনি বিভিন্ন শিক্ষকদের রুমে গিয়ে সবার কাছে বলেন তিনি এ বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাচ্ছেন। আর এ নিয়োগে তাকে সাহায্য করবেন বিভাগের সভাপতি বশির আহমেদ। একাধিক শিক্ষক বিষয়টি এ সংবাদদাতাকে জানিয়েছেন। নিয়োগের আগেই তিনি কিভাবে শিক্ষক হওয়ার কথা জানেন তা নিয়ে বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে আলোচনা সমালোচনা চলছে। এছাড়া বিভাগের প্রায় সব শিক্ষকের মতামত উপেক্ষা করে তাকে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। তার গ্রামের বাড়ি ফেনী জেলার দাগনভূঁঞা থানায়। তার বাবা মৃত শাহ আলম বিএসসি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ছিলেন।
অন্যদিকে আরেকজন সানোয়ার সিরাজ (৩০তম ব্যাচ)। তিনি স্বজনপ্রীতির সূত্রে নিয়োগ পাচ্ছেন বলে জানা যায়। তিনি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ উল হাসানের নিকটাত্মীয়।
এছাড়া আরেকজন বিএম হাসান মাহমুদ বর্তমানে একটি ব্যাংকে কর্মরত রয়েছেন। দীর্ঘদিন একাডেমিক কর্মকা-ের বাইরে থেকে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। বিভাগের সভাপতি বশির আহমেদের সাথে তার এ আর্থিক লেনদেন হয়েছে বলে একটি গোপন সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া একজন ব্যাংকের কর্মকর্তা কিভাবে শিক্ষক হন তা নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে সমালোচনা চলছে।
এছাড়া শাকিল আহমেদ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক পদে কর্মরত রয়েছেন। তিনি সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন বলে জানা যায়।
এর আগে ২০১৪ সালে বশির আহমেদ প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়া বিশের অধিক প্রার্থীকে উপেক্ষা করে স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে ২য় শ্রেণীপ্রাপ্ত মো. তারিকুল ইসলামকে নিয়োগ দেন।
এ বিষয়ে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন বলেন, এক প্রকার প্রতারণার মাধ্যমে কোন আলোচনা ছাড়াই বশির আহমেদ এ নিয়োগ দিচ্ছেন। যেখানে কোন শিক্ষকেরই বিভাগে দরকার নেই। তারপরও অপ্রয়োজনীয় ভাবে এ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তার মানে আমাদেরও সন্দেহ হচ্ছে এখানে কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ রয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক বশির আহমদে বলেন, উচ্চশিক্ষা, ছুটি ও অবসরে ৮ জন শিক্ষক যাওয়ার ফলে বিভাগে শিক্ষকের প্রয়োজন। তাই এ ৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যোগ্যতার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ৪ জনের একটি বোর্ড ছিল। যেখানে ভিসিও ছিলেন। আমরা তাদেরকে অনেক যাচাই বাছাই করেই নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছি। আর্থিক লেনদেন ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন এটা সঠিক না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন