শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

সংবিধান রক্ষার শপথ ভঙ্গ করেছেন খাদ্যমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী

আদালত অবমাননায় আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

প্রকাশের সময় : ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৫০ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : আদালত অবমাননার দায়ে দন্ডিত দুই মন্ত্রী তাদের ‘সংবিধান রক্ষার শপথ ভঙ্গ করেছেন বলে আপিল বিভাগের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে। আদালত অবমাননায় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে জরিমানা করে আপিল বিভাগের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় গতকাল প্রকাশ করা হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতকে নিয়ে করা মন্তব্যের জন্য দুই মন্ত্রীর নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের আপিল বিভাগ গত ২৭ মার্চ ওই রায় দেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৫৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ সেই রায়টি প্রকাশিত হয়।
রায়ে বলা হয়, “সংবিধানে বর্ণিত আইনের শাসন রক্ষার যে শপথ বিবাদীরা নিয়েছেন, সেই দায়িত্বের প্রতি তারা অবহেলা করেছেন। আমাদের কোনো সন্দেহ নেই যে বিবাদীরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বক্তব্য রেখেছেন। তাঁরা দোষও স্বীকার করেছেন। তারা আইন লঙ্ঘন করেছেন এবং সংবিধান রক্ষা ও সংরক্ষণে তাদের শপথ ভঙ্গ করেছেন।” বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে এই প্রতিষ্ঠানকে খাটো করেছেন।
সংখ্যাগরিষ্ঠের মতের ভিত্তিতে হওয়া এই রায় লিখেছেন বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এর মধ্যে বিচারপতি ইমান আলীর সঙ্গে অপর চার বিচারপতি একমত পোষণ করায় তার লেখা রায়ই আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা, বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার রায়ের বিষয়ে বিচারপতি ইমান আলীর সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন।
অন্যদিকে বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি মো. নিজামুল হক।
বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী তার রায়ে বলেছেন, “আমি আমার ভাই মোহাম্মদ ইমান আলীর রায় পড়েছি। অবমাননাকারীদের দোষী সাব্যস্ত করা এবং তাদেরকে দেওয়া দ-ের বিষয়ে দ্বিমত পোষণের কোনো প্রশ্ন থাকতে পারে না। তবে অবমাননাকারীদের শপথ লঙ্ঘন বিষয়ক অংশের সঙ্গে আমি একমত পোষণ করতে পারছি না।” কারণ, শপথ ভঙ্গ করার বিষয়টি এখানে বিচার্য ছিল না। এ বিষয়ে বিবাদীদের কোনো নোটিশও দেওয়া হয়নি। তাঁরা এখন মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী হিসেবে রয়েছেন। সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তাঁরা আদালত অবমাননা করেছেন কি করেননি, তা বিচার্য বিষয় ছিল।
আদালত অবমাননায় দোষী সাব্যস্ত করে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদ- দেয় আদালত। অনাদায়ে সাত দিনের কারাদ-ের নির্দেশও দেওয়া হয়। ওই অর্থ সাত দিনের মধ্যে ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ও লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশে দিতে বলা হয়। পরে তারা সেই অর্থ পরিশোধও করেন।
প্রসঙ্গত’ গত ৫ মার্চ একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির আদেশ পাওয়া মীর কাসেম আলীর আপিল মামলা পুনরায় শুনানির দাবি জানান। ওই শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ও রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেলকে অংশ না নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। একই অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকও প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Mohammed Saleh Bablu ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১০:২২ এএম says : 0
সংবিধান রক্ষায় শপথ বঙ্গ করলে মন্ত্রীত্ব থাকবে কিনা ?
Total Reply(0)
রাসেল ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১১:৪৭ এএম says : 0
সরকারকে বিপদে ফেলার জন্য বেফাঁস কথাই যথেষ্ট।
Total Reply(0)
সৌরভ ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ৩:৪৩ পিএম says : 0
দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কাছে এ ধরনের বক্তব্য প্রত্যাশিত নয়।
Total Reply(0)
Millat ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ৩:৫৩ পিএম says : 0
তারা আইন লঙ্ঘন করেছেন এবং সংবিধান রক্ষা ও সংরক্ষণে তাদের শপথ ভঙ্গ করেছেন।
Total Reply(0)
Nilufar.Tasneen. ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ৮:৫১ পিএম says : 0
Minister thakar Odhekar nai Podothak Korun.
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন