গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বড় একা। তিনি একরকম বন্দি অবস্থায় রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বিহীন আওয়ামী লীগ ভুল পথে চলছে। মাঝিবিহীন নৌকা চলছে। একটু ধাক্কা দিলে নৌকা ডুবে যেতে পারে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ২০ দলীয় জোটের শরিক জাতীয় পার্টি (জাফর) আয়োজিত স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ববাংলা ঘোষণা দিবসের ৫১ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ২০ দলীয় জোটের মুখপাত্র নজরুল ইসলাম খান বলেন, যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয়। দেশবাসী অশান্তি ও কষ্টে থাকলেও তাদের কিছু আসে যায় না। বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের নেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। শহীদ জিয়া দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মহান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেক্টর কমান্ডার থাকা অবস্থায় স্বাধীনতার আগেই সেখানে বাংলাদেশের প্রশাসন গড়ে তুলেছিলেন। সেই জিয়াউর রহমানকে অসম্মান করার অপচেষ্টা চলছে। এই অপচেষ্টা শুধু জিয়ার বিরুদ্ধে নয়, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে। জামুকা কাউকে খেতাব দেয়া বা নেয়ার ক্ষমতা রাখে না। আর যে এ প্রস্তাবটি তুলেছেন তিনিই বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খুনি মুজিবের বিচার হয়েছে বলে উল্লাস করেছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিএনপিরও অনেক বড় নেতা থাকলেও তারা বধির ও অন্ধ হয়ে গেছেন। সরকার একের পর এক ভুল করে গেলেও তারা শুধু দেখেই যাচ্ছেন, কিছুই করতে পারছেন না। বর্তমানে অফিস-আদালত মাদরাসা-মক্তব সব খোলা থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো বন্ধ। কারণ সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে রিপোর্ট রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলো খুলে দিলে সরকার পতনের আন্দোলন হতে পারে। তিনি ২০ দলীয় জোটের নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা কী করছেন, আপনারা ছাত্রদের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন না কেন? আপনাদের ঘুম কি ভাঙে না, আপনারা কেন তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন না? ছাত্রদের আন্দোলন চাঙ্গা হলেই জনগণের অধিকার ফিরে আসবে, মুক্তি পাবে খালেদা জিয়া।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের ইস্যু একটাই বেগম জিয়ার মুক্তি। তাও মেরুদন্ড সোজা হয়ে মুক্তি চাইতে সাহস পান না। খালেদা জিয়া অসুস্থ, তার চিকিৎসার জন্য তাকে বাইরে যেতে দেয়া হচ্ছে না। অধিকার আদায় করে নিতে হয়। যেমন আজিজ সাহেব তার ভাইয়ের অধিকার আদায় করে নিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে জাতির মেরুদন্ড ভেঙে দেয়া হচ্ছে। অলস শিশুরা হিন্দি ফিল্ম দেখে কিশোর গ্যাং তৈরি করছে। আপনারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য ছাত্রদের পক্ষে অবস্থান নিন। গণতন্ত্র, গণতন্ত্র বলে কোনো লাভ নেই, একটা প্রতিষ্ঠান ঠিকমতো চলছে না। হঠাৎ জিয়াউর রহমানের খেতাব কেড়ে নিতে চাচ্ছে সরকার। এর কারণ হলো গতি ঘুরানো। যারা এই হীন কাজে সম্পৃক্ত তারা শুধু জিয়াউর রহমানকেই নয় বঙ্গবন্ধুকে ছোট করছে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এ এস এম শামীমের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংক, নবাব আলী আব্বাস, মুজিবর রহমান, মহসিন সরকার প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন