জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী তিন মাসের জন্য হাজারো পরীক্ষা স্থগিত করায় ব্যাপক ক্ষোভ, হতাশা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে পরীক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরীক্ষা স্থগিতের প্রতিবাদে ঝড় তুলেছেন ভুক্তভোগী এসব শিক্ষার্থী। ভয়াবহ সেশন জটের মুখে পড়ে অনেকেই ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে চরম হতাশা প্রকাশ করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
হল খোলার দাবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত সোমবার ঘোষণা দেয় সব ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে আগামী ২৪ মে থেকে। এই সময়ের মধ্যে অনলাইনে বা সরাসরি সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা বন্ধের ঘোষণাও দেন শিক্ষামন্ত্রী। এই ঘোষণার পর রাত থেকেই একে একে সব বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দিতে থাকে। এতে নতুন করে আরো ছয় মাসের সেশনজটে পড়তে হবে শিক্ষার্থীদের।
এদিকে, চলমান সব পরীক্ষা স্থগিতের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের। চলমান পরীক্ষার উপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে সড়ক অবরোধের পাশাপাশি ফেসবুকেও সরব দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের। ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন গ্রুপ থেকেও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
ফেসবুকে ক্ষোভ জানিয়ে মোঃ মাহবুবুর রহমান লিখেছেন, ‘‘মাননীয় মন্ত্রী গত দুইমাসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলমান ছিল। আমিও একজন পরীক্ষার্থী ছিলাম মাত্র সম্মান শেষ বর্ষের ভাইবা বাকি।আপনার কাছে ১ কোটি শিক্ষার্থী জানতে চায় গত দুই মাসে ৪ লক্ষেরও বেশি শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে তাদের মধ্যে কতজনের করোনা হয়েছে? কিসের উপর ভিত্তি করে এরকম সিদ্ধান্ত নিলেন। তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি শিক্ষিত বুদ্ধিপরিচয়হীন নীতিনির্ধারকদের প্রতি।’’
পরীক্ষা স্থগিত করায় চরম হতাশা প্রকাশ করে শাহিনুর রহমান লিখেছেন, ‘‘আমার জীবনের দায় কে নিবে? ২০১৭ সালে শেষ হবার কথা যে মাস্টার্স এর তা ২০২১ এ এসেও শেষ করতে পারছি না। তাহলে আমি চাকুরি কি ৪০ বছর এ ধরবো? আর তার সুযোগ কই? অবিলম্বে চাকুরির বয়ষ ৩৫ করা হোক।’’
পরীক্ষার্থী শাকিলা সুমি লিখেছেন, ‘‘সব কিছুর একটা লিমিটেশন আছে। কি হচ্চে এই পরীক্ষা টা নিয়ে। কিছু দিন করলে এইচএসসি নিয়ে এই বার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এই যে সেশন জট তৈরী করে শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি করছেন তার দায় কে নিবে।’’
অভিমানের সুরে মোঃ এইচএ শরিফ লিখেছেন, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি কেয়ামত পর্যন্ত বাড়ানো হোক পোলাপান একেবারে খাতা কলম নিয়ে হাশরের ময়দানে পরীক্ষা দিবে। ৪টা পরিক্ষার জন্য ৯মাস লস এখন ভাইভার জন্য মনে হচ্ছে আরো ৬মাস যাবে।হায়রে বাংলাদেশ হায়রে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যাবস্থা।’’
শাহারিয়া সৌরভ লিখেছেন, ‘‘এতোদিন করোনার দোহাই দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন, বলেছিলেন শীতে করোনার বাড়বে অথচ চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা শীতে নিয়েছে। এখন হঠাৎ লজিক ছাড়া সকল পরীক্ষা স্থগিত করেছেন।সবকিছুর একটা লিমিট থাকা উচিত।’’
সিজানুল ইসলাম মিজানের মন্তব্য, ‘‘নাহ, স্কুল কলেজ খুলে আমাদের সোনামণিদের স্বাস্থ্য নিয়ে ঝুঁকি নেওয়া উচিত হবে না! আর তারা যেন আনন্দে থাকে তার জন্য তো পিকনিক স্পট, পার্ক খোলাই আছে! শুধু শুধু তাদের শিক্ষানামক প্যারা দেওয়ার কোন মানে হয় না!!’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন