ধর্ষিত নারী ও শিশুদের সমাজে পুনর্বাসনের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- এই মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে ধর্ষণের ঘটনায় প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ প্রদানে কেন বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশ দেয়া হবে না- তাও জানতে চাওয়া হয়।
রিটের প্রাথমিক শুনানি গ্রহণ শেষে গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল ডিভিশন বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, সরকারের আইনগত সহায়তা সংস্থা (লিগ্যাল এইড)-এর চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), পুলিশের খুলনা, রংপুর মহানগরের কমিশনার, সকল জেলা পুলিশ সুপারসহ (এসপি) সরকার সংশ্লিষ্ট ১৫ জনকে এক সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম। সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। সরকারপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নওরোজ মো. রাসেল।
অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান জানান, বিভিন্ন সময় ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এসব প্রতিবেদনের মধ্য থেকে তিনটি প্রতিবেদন সংযুক্ত করে গত ২ জানুয়ারি রিট করে ‘চিলড্রেন চ্যারিটি ফাউন্ডেশন’ নামক সংগঠন। প্রকাশিত প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে রিটে বলা হয়, ধর্ষণ মামলায় ৯৭ শতাংশ আসামি খালাস পেয়ে যায়। তার মানে কি ৯৭ শতাংশ ধর্ষণ হয়নি? এই খালাসের কারণ হলো রাষ্ট্র যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করতে ব্যর্থ হয়। এর দায়ভার ভিকটিম কেন নেবে? কেননা তার আত্মমর্যাদা রয়েছে। শিশুটির ভবিষ্যৎ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে তার লেখাপড়া তথা গড়ে ওঠা। এসব শিশু স্কুলে পর্যন্ত যেতে পারছে না। তাহলে সে কোথায় যাবে? এটিই হচ্ছে রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্র। বিশ্বের প্রায় সব দেশে ধর্ষণের শিকার ভিকটিমদের পুনর্বাসনের বিধান রয়েছে।
ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম বলেন, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট একটি ধর্ষণের ঘটনায় ১০ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এটি আমরা উপ-মহাদেশের নজির হিসেবে সেটি আমরা রিটে যুক্ত করেছি। শিশু মাইশাকে যৌন নিপীড়নের চেষ্টার পর হত্যা করে ডোবায় ফেলে দিয়েছে প্রতিবেশী।’ ‘তিন বছরেও স্বাভাবিক হতে পারেনি সেই পূজা।’ এবং ‘স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ সদস্য গ্রেফতার’ শীর্ষক তিনটি প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়েছে রিটে। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত শিশু ধর্ষণের মামলা প্রমাণিত হোক বা না হোক ধর্ষণের শিকার শিশুকে পুনর্বাসন করতে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ দিতে একটি বিধিমালা প্রণয়ন করতে সরকারকে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে বলেও জানান এই আইনজীবী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন