শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বন্দি নিখোঁজে তোলপাড়

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার-ডেপুটি জেলার প্রত্যাহার তদন্ত কমিটি

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে হত্যা মামলার এক আসামি উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় কারাপ্রশাসনের তোলপাড় চলছে। এই ঘটনায় গতকাল রোববার জেলার ও এক ডেপুটি জেলারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে দুই কারারক্ষীকে। একজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। ঘটনা তদন্তে কারা মহাপরিদর্শকের পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে তিন সদস্যের কমিটি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও পৃথক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রুবেলের কোনো সন্ধান মেলেনি। সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে তার খোঁজে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
শনিবার হঠাৎ করেই কারাগার থেকে নিখোঁজ হয় হত্যা মামলার আসামি ফরহাদ হোসেন রুবেল (২০)। এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষ প্রথমে জিডি এবং পরে নগরীর কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করে। দিনভর তার সন্ধানে কারাগারে চলে তল্লাশি অভিযান। কিন্তু কোথাও তার হদিস মেলেনি। কারাগারের নিñিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনী থেকে বন্দি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় কারা প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনায় কারা মহাপরিদর্শকের (আইজি প্রিজন) নির্দেশে জেলার ও ডেপুটি জেলারকে প্রত্যাহারসহ তাৎক্ষণিক বেশকিছু ব্যবস্থা নেয়া হয়।

চট্টগ্রাম বিভাগের উপ কারা মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন) এ কে এম ফজলুল হক জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় কারা মহাপরিদর্শক চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার রফিকুল ইসলাম এবং ডেপুটি জেলার আবু সাদাতকে প্রত্যাহারের আদেশ দিয়েছেন। জেলারকে কারা অধিদফতরে এবং ডেপুটি জেলারকে চট্টগ্রাম রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত করা হয়েছে সহকারী প্রধান কারারক্ষী মো. নাজিম উদ্দিন ও কারারক্ষী মো. ইউনুসকে। এছাড়া সহকারী প্রধান কারারক্ষী কামাল হায়দারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ডিআইজি-প্রিজন ফজলুল হক জানান, বন্দি নিখোঁজের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। এতে প্রধান করা হয়েছে খুলনা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক ছগির মিয়াকে। অন্য দুই সদস্য হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের সুপার ইকবাল হোসেন ও বান্দরবান জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার ফোরকান ওয়াহিদ। তাদের সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে হাজতি নিখোঁজের ঘটনায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুমনি আক্তারকে। কমিটির দুই সদস্য হলেন- নগর পুলিশের এডিসি (ট্রাফিক উত্তর) মো. রাশেদুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. মাজহারুল ইসলাম।

এর আগে কারাগার থেকে নিখোঁজ হাজতির সন্ধান না পেয়ে থানায় মামলা করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিন জানান, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলার তদন্ত চলছে। তবে ফরহাদ হোসেন রুবেল নামের ওই হাজতিকে এখনও পাওয়া যায়নি। রুবেল কারাগারের কর্ণফুলী ভবনের পঞ্চম তলায় ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ছিলেন। ভোর সোয়া ৫টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে তিনি ওয়ার্ড থেকে বের হয়ে যান।
কারাগার সূত্র জানায়, সকালে নিজ ওয়ার্ড থেকে তাকে হেঁটে বের হয়ে যেতে দেখা গেছে সিসি টিভি ফুটেছে। এরপর সে কোথায় গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তার সন্ধানে কারাগারে বার বার তল্লাশি চালিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। ফলে ধারণা করা হচ্ছে সে পালিয়ে গেছে। ওসি জানান, সে কারাগার থেকে পালিয়েছে। তাকে ধরতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চলছে।

সদরঘাট থানার একটি হত্যা মামলায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে ছিলেন রুবেল। গত ৬ ফেব্রুয়ারি এক ব্যক্তিকে বুকে ছুরি চালিয়ে হত্যার মামলায় ডবলমুরিং থানার মিস্ত্রি পাড়া থেকে রুবেলকে গ্রেফতার করে সদরঘাট থানা পুলিশ। রুবেলের বাড়ি নরসিংদীর মীরকাদিম গ্রামে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন