ভারতের কৃষক আন্দোলনের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে। আর এতে চরম ক্ষুব্ধ হয়েছে মোদি সরকার। প্রথমবারের মতো অন্য কোনো দেশের সরকার নিজেদের সংসদে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কৃষক আন্দোলন নিয়ে আলোচনা করেছে। জানা যায়, যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনারকে ডেকে চলমান কৃষক বিক্ষোভ এবং প্রচারমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্পর্কে ব্রিটিশ সংসদের আলোচনার সমালোচনা করে এটিকে ‘স্থূল হস্তক্ষেপ’ এবং ‘ভোটব্যাংক রাজনীতি’ বলে অভিহিত করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ১০৩ দিন ধরে চলছে কৃষক আন্দোলন। সোমবার যুক্তরাজ্যের সংসদে ৯০ মিনিটের এই বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। বিতর্কে লেবার পার্টি, লিবারেল ডেমোক্র্যাটস এবং স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির একাধিক সংসদ সদস্য ভারত সরকারের প্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিতর্ক চলার সময় যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ হলেই বিষয়টি উত্থাপন করা হবে এবং সাংসদদের উদ্বেগ ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হবে।’ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার বলেছে, যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন পররাষ্ট্রসচিব। এ সময় ‘যুক্তরাজ্যের সংসদে ভারতের কৃষি সংস্কার সম্পর্কিত অনিয়ন্ত্রিত ও প্রচ্ছন্ন আলোচনার তীব্র বিরোধিতা’ করা হয়। ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় বলেছে, এটি অন্য একটি গণতান্ত্রিক দেশের রাজনীতিতে চূড়ান্ত হস্তক্ষেপের উদাহরণ। যুক্তরাজ্যের সাংসদদের উচিত অন্য বন্ধু রাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে কোনো ঘটনা ভুলভাবে উপস্থাপন করে ভোটব্যাংকের রাজনীতি থেকে বিরত থাকা। লন্ডনে ভারতীয় হাইকমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যমসহ বিদেশি সংবাদমাধ্যম ভারতেই রয়েছে, তারা সবকিছু চোখের সামনেই দেখতে পেয়েছে। তাই তাদের স্বাধীনতা হরণ হয়েছে এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। সোমবার দুটি ইস্যু নিয়ে একযোগে প্রশ্ন তোলে লেবার পার্টি, লিবারেল পার্টি এবং স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির সাংসদরা। সংসদে এই বিতর্কের সূত্রপাত হয় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা গুর্চ সিংয়ের এক পিটিশনের ফলে। গুর্চ ভারতীয় বংশোদ্ভূত। এক লাখেরও বেশি যুক্তরাজ্যবাসীর স্বাক্ষর পেয়েছে সেই পিটিশন। স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির নেতা মার্টিন ডে বিতর্ক শুরু করতে বলেন, ‘কৃষি সংস্কার সম্পূর্ণভাবে ভারত সরকারের এখতিয়ার। সেটি নিয়ে আমরা কোনো বিতর্ক করব না। আমাদের বিতর্কের বিষয় কৃষকদের সুরক্ষা। পুলিশের সঙ্গে ঝামেলার সময় জলকামান এবং কাঁদানে গ্যাসের ব্যবহার হয়েছে। বহু কৃষক আত্মহত্যা করেছেন।’ গার্ডিয়ান, বিবিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন