আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দের অভিযোগ
ঘরে বসে স্লোগান দিলে হারানো অধিকার পাওয়া যাবে না
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে ১/১১-এর মতো সরকারের ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। গতকাল শনিবার বিকালে এক আলোচনা সভায় তিনি এই অভিযোগ করেন। হারানো অধিকার ফিরে পেতে রাজপথে নামতে হবে ঘরে বসে ম্লোগান দিলে লক্ষ অর্জিত হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে দলের সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৯ম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
ড. মোশাররফ বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার অংশ হিসেবেই ১/১১-এর সরকার পরিকল্পনা গ্রহণ করে ক্ষমতায় বসেছিল। তারই অংশ হিসেবে ওই সময়ে আমাদের দলের ভবিষ্যৎ কা-ারি তারেক রহমানকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে নানাভাবে মামলা-মোকদ্দমা দেয়া হয়, নির্যাতন করা হয়। তারেক রহমান ১/১১-এর সরকারের ষড়যন্ত্রের শিকার, সেই ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত আছে। এটা প্রমাণিত হয়েছে তাদের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার পরিচালিত হচ্ছে।
২০০৭ সালের ৭ মার্চ সেনা-সমর্থিত তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার তারেক রহমানকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির মামলা দেয়া হয়। ২০০৮ সালের ৩ মার্চ সুপ্রিমকোর্টের জামিনে মুক্তি পেয়ে কয়েকদিন পর উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান তারেক রহমান। বর্তমানে সেখানে তিনি আছেন স্বপরিবারে।
দেশের বর্তমান সরকারের দমন-পীড়নের কথা উল্লেখ করে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের প্রতি, স্বৈরাচারী সরকারের প্রতি জনগণ বিক্ষুব্ধ। দেশে কোনো গণতান্ত্রিক স্পেস নেই। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নেই। জঙ্গি ভয়ে আতঙ্ক জনপদ। দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত, ব্যাংক লুট হয়, রিজার্ভ লুট হয়। গুম-খুন-মামলা-হামলায় দেশের মানুষ জর্জরিত। বর্তমান সরকার সারা বাংলাদেশকে কারাগারে পরিণত করেছে। এ থেকে দেশের মানুষ আজ মুক্তি চায়। এই মুক্তি একমাত্র দিতে পারে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাকশালসৃষ্ট শূন্যতাকে পূরণ করার জন্য এই দলকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই দলেরই দায়িত্ব অলিখিত বাকশালের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করা।
তিনি বলেন, বিএনপিরই দায়িত্ব আমরা যে গণতন্ত্র হারিয়েছি, তাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। ব্যক্তি, বাক ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে হবে। সকলের সমান অধিকার সৃষ্টি করতে হবে। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ থেকে মুক্ত করতে হবে। এসব বাস্তবায়ন করতে হলে শুধু ঘরের ভেতওে স্লোগান দিয়ে হবে না।
লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান সম্পর্কে খন্দকার মোশাররফ বলেন, অচিরেই তারেক রহমান দেশে ফিরবে। আমরা বীরের বেশে তাকে দেশে আনতে চাই, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই, তাহলে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী দিনে আন্দোলন করতে হবে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই স্বৈরাচারের পতন ঘটাতে হবে। তাহলেই তারেক রহমানের কারামুক্ত দিবস করা সফল হবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, বিভিন্নভাবে একটা একটা ষড়যন্ত্র সৃষ্টি করে সরকার বিএনপিকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, বিএনপিকে সাময়িকভাবে দুর্বল করা যাবে কিন্তু একেবারে শেষ করা যাব না। এই বিএনপি আবার ঘুরে দাঁড়াবে, আবার ক্ষমতায় আসবে।
দলের সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম ও সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুর পরিচালনায় ভাইস চেয়ারম্যান হারুন আল রশীদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মোহাম্মদ শাহজাহান, ব্যারিস্টার আমীনুল হক, এজেডএম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, জয়নুল আবেদীন, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, মাহবুবউদ্দিন খোকন, খায়রুল কবীর খোকন বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন, ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী আবুল বাশার, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, যুব দলের সহ-সভাপতি আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি মুনির হোসেন, ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসানও বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সভায় কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, কায়সার কামাল, আসাদুল করীম শাহিন, মীর সরাফত আলী সপু, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, এবিএম মোশাররফ হোসেন, ড. মোরশেদ হাসান খান, মাহবুবুল হক নান্নু, মীর নেওয়াজ আলী, শরীফুল আলম, শহীদুল ইসলাম বাবুল, হেলেন জেরিন খান, রেহানা আখতার রানু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, হাফেজ আব্দুল মালেক, অনিন্দ ইসলাম অমিত, শাম্মী আখতার, খন্দকার মারুফ হোসেন, আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন