শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সিভিল এভিয়েশন ও রেলওয়ের বিরুদ্ধে ডিএনসিসির মামলা

মশক নিধনে অসহযোগিতা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

মশক নিধন কার্যক্রমে সহায়তা না করায় সিভিল এভিয়েশন ও রেলওয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। গতকাল ডিএনসিসির ৭ নম্বর অঞ্চলের ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে মশক নিধন কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে মামলা করার ঘোষণা দেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। পরে বিকালে ডিএনসিসির অঞ্চল-৭ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতাকাব্বীর আহমেদ জানান, বিমানবন্দর রেলস্টেশন, সিভিল এভিয়েশন এবং আশিয়ান সিটির বিরুদ্ধে আদালতে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম গতকাল সকাল সাড়ে আটটা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিমানবন্দর রেলস্টেশনের পিছনে, হাজী ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকা, আশিয়ান সিটি এলাকা এবং দক্ষিণখান বাজার এলাকায় চলমান সমন্বিত মশক নিধন অভিযান (ক্রাশ প্রোগ্রাম) পরিদর্শন করেন।

সকালে বিমানবন্দর রেলওয়ে ষ্টেশনের পিছনে রেলওয়ের একটি খালে ময়লা-আবর্জনা, নোংরা ও বদ্ধ পানি এবং সেখানে অসংখ্য মশার লার্ভা দেখতে পেয়ে মেয়র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পাশেই তিনি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিভিল এভিয়েশন) একটি জায়গায় বিপুল পরিমাণ কচুরিপানা, আবর্জনার স্তুপ, বদ্ধ পানি, মশার অসংখ্য লার্ভা দেখতে পান। তারপর তিনি হজ্ব ক্যাম্পের পাশে সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা একটি বিশাল জলাশয়েও একই দৃশ্য দেখতে পান। হাজী ক্যাম্পের বিপরীত দিকে সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘেরা একটি স্থানেও বিপুল পরিমান পলিথিন, আবর্জনা, জঙ্গল, জঞ্জাল। এগুলো দেখার পরে তিনি সিভিল এভিয়েশনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারপর আতিকুল ইসলাম হাজী ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকা থেকে হেঁটে আশিয়ান সিটি পরিদর্শন করেন। সেখানেও বিপুল পরিমান কচুরিপানা, বদ্ধ পানি, আবর্জনা ইত্যাদি দেখতে পান। এসব দেখার পরে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন।

বিমানবন্দর স্টেশনের পিছনে পরিদর্শনকালে আতিকুল ইসলাম বলেন, এটা হলো আমাদের বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের পূর্ব পাশ, এটি রেলওয়ের জায়গা। পাশে সিভিল এভিয়েশনের জায়গা, সেটার অবস্থা আরো খারাপ। আমরা চেষ্টা করছি যেগুলো আমাদের জায়গা, সেগুলো পরিষ্কার করতে। কিন্তু যেটা রেলের জায়গা, যেটা সিভিল এভিয়েশনের জায়গা, তাদের উচিত তাদের জায়গা পরিষ্কার করা। আমরা সিভিল এভিয়েশনকে ইতিপূর্বে এ বিষয়ে বলেছি। এখন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা ছাড়া আমাদের আর কিছু করার নেই। এটা রেলওয়ের জায়গা, রেলওয়ের উচিত এটা পরিষ্কার করা। সিভিল এভিয়েশনের জায়গা সিভিল এভিয়েশন দায়িত্ব নেবে। সিটি কর্পোরেশনের জায়গা সিটি কর্পোরেশন দায়িত্ব নেবে। কিন্তু যে যার যার মতো চলছে, আর গালি খাচ্ছি আমরা। এটি হতে পারে না। সিভিল এভিয়েশনের এরিয়া বাউন্ডারি দেওয়া, এর ভিতরে যাওয়া যাবে না। সিভিল এভিয়েশনকে বারবার বলা হচ্ছে, এগুলো পরিষ্কার করার জন্য। এখানে কোটি কোটি মশার লার্ভা। সিভিল এভিয়েশনকে কিছুদিন আগে আমরা একটি ভেহিকেল ফগার মেশিন দিয়েছি, যাতে তারা মশা নিধন করতে পারে। আমি সিভিল এভিয়েশনকে বলব, খুব দ্রæত এই জায়গাটা পরিষ্কার করতে। রেলওয়েকে তাদের এই জায়গাটা পরিষ্কার করতে।

মেয়র আরো বলেন, কারো বাসার ভিতরে আমাদের পরিষ্কার করার কথা না। সিভিল এভিয়েশনের ভেতরে আপনারা দেখলেন কোটি-কোটি মশার লার্ভা। এটার ভিতর আমাদের যাওয়ার কথা না। এটা উচিত উনাদেরকেই পরিষ্কার করা। রেলওয়ের পাশে দেখলেন অনেক ময়লা, অনেক লার্ভা। এটা আসলে রেলওয়ের পরিষ্কার করার কথা। আমরা এখন মামলায় যাচ্ছি, সোজা আঙ্গুলে আর হচ্ছে না।
আশিয়ান সিটি পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, এখানে এত বদ্ধ, নোংরা জলাশয় এবং কচুরিপানা আছে, এবং এখানে এত মশার উৎপাদন হচ্ছে এই এলাকার মানুষকে আতিষ্ট করে তোলার জন্য যথেষ্ট।

মেয়রের পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়েদুর রহমান, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বীর আহমেদ, ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আলী আকবর, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর জাকিয়া সুলতানা প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। আজ হরিরামপুর অঞ্চলে (অঞ্চল-৬) সমন্বিত মশক নিধন অভিযান পরিচালিত হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন