বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

রামগড়ে স্কুল-মাদরাসার শিক্ষক-অভিভাবক আতঙ্কৃত

প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গণমনস্তাত্ত্বিক রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৪২
রামগড় থেকে রতন বৈষ্ণব ত্রিপুরা : গত মঙ্গলবার দুপুরে অজ্ঞাত রোগে অসুস্থ হয়ে রামগড় গণিয়াতুল উলুম আলিম মাদরাসার ৩০ জন ছাত্রী রামগড় হাসপাতালে ভর্তি হয়।
মঙ্গলবার ও বুধবার সকালে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও গত বৃহস্পতিবার ১৭ জন ছাত্রী পুনরায় অসুস্থ হয়ে ফের হাসপাতালে ভর্তি হয়ে শুক্রবার সকাল নাগাদ সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করে। কিন্তু আবার শনিবার ছাত্রীরা যথারীতি মাদরাসায় ক্লাস করতে এলে তৃতীয় বারের মতো ৭ ছাত্রী অসুস্থ হয়ে আবারো হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর মধ্যে মরিনয়ম, পলি, নুসরাত ও খাদিজা এই ৪ জন পুরাতন এবং তৃষা, হামিনা ও আছমা এই ৩ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়। অপর দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, ৪ সেপ্টেম্বর রামগড় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ ছাত্রী হঠাৎ অসুস্থ হওয়ার পর অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা হলেঅ ষষ্ঠ শ্রেণীর সাজেদা আক্তার, তানজিনা আক্তার, ৭ম শ্রেণীর সাজেদা আক্তার, ইয়াছমিন আক্তার, ফারজানা আক্তার, মনি জোভেদা আক্তার, দশম শ্রেনীর জান্নতুল ফেরদৌসের। এতে করে নিয়মিত রোগীর পাশাপাশি নতুন করে স্কুল-মাদরাসার ছাত্রীদের নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আর উদ্বেগে রয়েছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা। অভিভাবকদের কয়েকজন জানান, বাড়িতে নেয়ার পর ছাত্রীদের মাথাব্যথা, খিচুনিভাব, জ¦ালাপোড়া দেখা দিলে তারা পুনরায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তবে অভিবাবকদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, হাসপাতলে চিকিৎসারত সন্তানদের জন্য তারা অনেকেই বাইরে থেকে ওষুধ কিনে দিচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, রোগটি মূলত গণমনস্তাত্ত্বিক (গধংং ঢ়ংুপযড়মবহরপ রষষহবংং) রোগ। এটি অতিরিক্ত ভয়, আতঙ্ক ও দুশ্চিন্তা থেকে হয়ে থাকে। হাসপাতালে যথাযথ চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। অভিভাবক ও নিকটস্তদের সেবা, পর্যাপ্ত ঘুম, পর্যাপ্ত খাওয়া-দাওয়াসহ আতঙ্ক ও ভয়-দুশ্চিন্তা দূরীকরণের চেষ্টার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এগুলি যথাযথ পালন করলে রোগী দ্রুত সুস্থ হবে বলে তিনি জানান। এদিকে অভিভাবকদের অনেককেই বাইরে থেকে ওষুধ কেনার বিষয়ে তিনি বলেন, এ রোগের পর্যাপ্ত ওষুধ না থাকায় সমস্যা হচ্ছে।
মাদরাসা অধ্যক্ষ আবদুস সালাম নিজামী জানান, ঘটনার পরপর মাদরাসা ছুটি দিয়ে অসুস্থ ছাত্রীদের দেখাশোনা ও খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় বুধবার ও বৃহস্পতিবার মাদরাসা চালু থাকলেও পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। তিনি জানান, অভিভাবকদের পূর্বে অসুস্থ ছাত্রীদের মাদরাসায় না পাঠিয়ে বাড়িতে বিশ্রাম নিতে পরামর্শ দেয়ার পরও কয়েকজন অসুস্থ ছাত্রী মাদরাসায় এলে শনিবার পুনরায় তারা অসুস্থ হয়। তবে ছাত্রদের নিয়ে শিক্ষকরা শ্রেণী কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।
খবর পেয়ে দ্রুত স্কুল ও মাদরাসায় ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইকবাল হোসেন। পরবর্তীতে হাসপাতালে যান উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া, পৌর মেয়র কাজী শাহ জাহান রিপন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল কাদের, অফিসার ইনচার্জ মাইন উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক বিশ্ব ত্রিপুরাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইকবাল হোসেন জানান, ঘটনার তদন্তে উপজেলা আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রতন খীস কে প্রধান করে ৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৩ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। বর্তমানে খাগড়াছড়ি থেকে অতিরিক্ত মেডিকেল টিম আসছে বলে তিনি জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন