শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দীপন হত্যায় ‘মাস্টারমাইন্ড’ সবুর এবিটির শীর্ষস্থানীয় -মনিরুল ইসলাম

প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যার মাস্টারমাইন্ট এবং আনসার আল ইসলামের সামরিক কমান্ডার সবুরকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। টঙ্গী রেলস্টশন থেকে সবুরকে গ্রেফতার করা হয় শনিবার দিবাগত রাত। সে এটিবির শীর্ষস্থানীয় সামরিক নেতা।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটি) ইউনিটের প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম বলেছেন, জাগৃতি প্রকাশনী সংস্থার কর্ণধার ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা ও শুদ্ধস্বরের আহমেদ রশিদ টুটুল হত্যাচেষ্টা মামলার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড (হোতা) আব্দুস সবুর ওরফে রাজু ওরফে সাদ ওরফে সামাদ ওরফে সুজন (২৩) আনসার আল ইসলামের (এবিটি) সামরিক শাখার শীর্ষ ৪ জন দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের একজন।
গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, শুদ্ধস্বর প্রকাশক আহমেদ রশিদ টুটুলকে হত্যাচেষ্টায় জড়িত এবিটি সদস্যদের অস্ত্র ও সামরিক প্রশিক্ষণ প্রদান, ঘটনাস্থল রেকি এবং অপারেশন প্ল্যান তৈরি করা ছাড়াও ঘটনার সার্বিক দায়িত্বশীল ব্যক্তি ছিল সবুর।
মনিরুল ইসলাম বলেন, শনিবার সকালে ডিএমপির গোয়েন্দা দক্ষিণ বিভাগের একটি দল টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন থেকে শুদ্ধস্বর প্রকাশক টুটুল হত্যা চেষ্টায় জড়িত এবং দীপন হত্যা মামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ সবুর ওরফে সামাদকে গ্রেফতার করে। সে মোহাম্মদপুরে নবোদয় হাউজিংয়ে এবিটির বোমা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এবং বাড্ডার সাতারকুলে এবিটির নতুন আস্তানার প্রশিক্ষক ছিল।
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ জুন বিমানবন্দর এলাকা থেকে প্রকাশক টুটুল হত্যা চেষ্টায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী আসামি মো. সুমন হোসেন ওরফে শাকিব ওরফে শিহাব ওরফে সাইফুলকে গ্রেফতার করা হয়। গত ২৩ আগস্ট টঙ্গীর চেরাগ আলী থেকে জাগৃতি প্রকাশক দীপন হত্যায় জড়িত আসামি মইনুল হাসান শামীমকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন থেকে সবুরকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে গ্রেফতারের ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে দুই লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল।
২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর আজিজ সুপার মার্কেটে ও লালমাটিয়ায় যথাক্রমে জাগৃতি প্রকাশনীর মালিক প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর মালিক ও প্রকাশক আহমেদ রশিদ টুটুলের ওপর নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসার আল ইসলামের (এবিটি) সদস্যরা হামলা চালায়। আজিজ সুপার মার্কেটে প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপনের জাগৃতি প্রকাশনা অফিসে ওই হামলায় দীপন নিহত হন এবং একই সময়ে লালমাটিয়ায় প্রকাশক টুটুলের শুদ্ধস্বর প্রকাশনা অফিসে হামলায় টুটুলসহ তিনজন গুরুতর আহত হন। ওই ঘটনায় শাহবাগ ও মোহাম্মদপুর থানায় পৃথক দুটি মামলা রুজু হয়।
জঙ্গি আব্দুস সবুরের ৬ দিনের রিমান্ড
প্রকাশক আহমেদ রশিদ টুটুল হত্যা চেষ্টার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মোহাম্মদ আব্দুস সবুর ওরফে আবদুল সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু ওরফে শাদের (২৩) ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল রোববার ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম মো. কায়সারুল ইসলাম এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই হত্যাচেষ্টায় যে অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল তা উদ্ধার এবং অন্য আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে তাকে রিমান্ডে নেওয়া দরকার। আরও বলা হয়েছে, তিনি আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও সরাসরি গুপ্তহত্যার সঙ্গে জড়িত।
শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে আব্দুস সবুরকে গ্রেফতার করে ডিবি দক্ষিণ। আব্দুস সবুরের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার লাঙলকোট উপজেলার ধালুয়া ইউনিয়নের জাপানন্দ গ্রামে।
ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক মো. নিজাম উদ্দিন জানান, এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. বাহাউদ্দিন ফারুকি এই আসামিকে আদালতে উপস্থিত করে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
তিনি আরও জানান, গত ১৬ জুন মোহাম্মদ সুমন হোসেন পাটোয়ারি ওরফে সাবিক ওরফে শিহাব ওরফে সাইফুলকে পুলিশ এই মামলায় গ্রেফতার করে। পরবর্তিতে এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ২১ জুন সুমন হোসেন পাটোয়ারি আদালতে টুটুল হত্যা চেষ্টার মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি ওই জবানবন্দিতে আব্দুস সবুরের নাম উল্লেখ করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন