মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশে লাক্ষা চাষ

সম্প্রসারিত হলে দেশীয় চাহিদা মিটিয়েও রফতানি

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০২১, ১২:০১ এএম

অতি ক্ষুদ্র পোকা লাক্ষা। দেখতে উকুনের মতো। রেশম ও মৌমাছির মতো লাক্ষাও বিশ্বে ইতোমধ্যে শিল্প পোকা হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এটির গুরুত্ব অনেক। এ পোকার নিঃসৃত রজন জাতীয় পদার্থ বহুমুখী কর্মশক্তি সম্পন্ন। লাক্ষার উপাদান পারফিউম, অস্ত্র, রেলওয়ে, জাহাজ, ওষুধ, চামড়া ও বৈদ্যুতিক শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্প কলকাখানা এবং জুয়েলারিতে চুরিবালা তৈরি, পিতল ও আসবাবপত্রের বার্ণিশে ব্যবহার হয়।
ইদানীং এর উপাদান চকলেট, চুইংগাম ও লেবু জাতীয় ফলের সংরক্ষণ গুণ বৃদ্ধির জন্য কোটিন হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। কীটতত্ত্ব বিদরা বলেছেন, ভারত, চীন, থাইল্যন্ডে বাণিজ্যিকভাবে লাক্ষা পোকার চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে আবার ভারত ৭০ ভাগ এবং চীন ও থাইল্যান্ড বাকি ৩০ ভাগ চাষ হয়। বাংলাদেশে খুবই সামান্য লাক্ষা চাষ হয়। এর বাইরে পৃথিবীর সব দেশেই রয়েছে এর বাজার।

সূত্রমতে, বাংলাদেশে অত্যন্ত সম্ভাবনা রয়েছে। এই পোকা চাষে কোন জমির প্রয়োজন হয় না। বরই, বাবলা, কড়ই গাছ লাক্ষা চাষের উপযোগী। কিন্তু নানা কারণে সম্ভাবনাময় লাক্ষা চাষ সম্প্রসারিত হচ্ছে না। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ড. নাজিরুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, লাক্ষা চাষ সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ইন্সটিটিউটের কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোখলেসুর রহমান জানান, অত্যন্ত সম্ভাবনাময় শিল্পজাত পণ্য লাক্ষা পোকার চাষ সম্প্রসারণের বিরাট সুযোগ রয়েছে। কিন্তু দেশের শুধুমাত্র রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জে সীমাবদ্ধ রয়েছে। বরই, বাবলা ও কড়ইসহ যেসব গাছে লাক্ষা চাষ হয় তা সারাদেশেই কমবেশি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের গ্রামে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বরই গাছ আছে। পরিকল্পিতভাবে বরই গাছগুলো লাক্ষা চাষের আওতায় আনা হলে বিরাট সুফল পাওয়া যাবে। দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে রফতানির বিরাট সুযোগ সৃষ্টি হবে।

কীটতত্ত¡বিদরা জানান, লাক্ষা পোকার ত্বকের নিচে সর্বত্র ছড়িয়ে থাকা একপ্রকার গ্রন্থি থেকে আঁঠালো রস নিঃসৃত হয়। যা ক্রমশ শক্ত ও পুরু হয়ে শোষক গাছের ডালকে আচ্ছাদিত করে ফেলে। পরবর্তীতে ডালের শক্ত আবরণ লাক্ষা বা লাহা হয়। বাংলাদেশের আবহাওয়া লাক্ষা চাষের উপযোগী। সূত্র জানায়, বাংলাদেশে লাক্ষার চাহিদা বছরে ১০ হাজার মেট্রিক টন। সেখানে উৎপাদন হয় মাত্র ২০০ মেট্রিক টন। চাহিদা পূরণ করতে হয় ভারত থেকে আমদানি করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাংলাদেশে লাক্ষা পোকা চাষের সুযোগ কাজে লাগালে এবং ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করা যাবে। কীটতত্ব¡বিদরা জানান, লাক্ষার স্ত্রী পোকার কোষের মধ্যে প্রায় ৪০০টি ডিম পাড়ে। ৭ খেকে ৮ দিনেই ডিম ফুটে ছোট টকটকে লাল রংএর শিশু লাক্ষার ঝাঁক বেধে বের হয়। ডালের রস চুষে অবশেষে একপ্রকার গ্রন্থি থেকে পাতলা উজ্জ্বল বর্ণের রস নিঃসরণ শুরু করে। পুরুষ পোকা সংগমের পর মারা যায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
বিপুলেন্দু বিশ্বাস ১৮ মার্চ, ২০২১, ১:২০ এএম says : 0
সরকারিভাবে সাহায্য সহযোগিতা করা দরকার চাষিদের।
Total Reply(0)
রমজান আলি ১৮ মার্চ, ২০২১, ১:২১ এএম says : 0
আমাদের জন্য অবশ্যই সুখবর।
Total Reply(0)
হোসাইন এনায়েত ১৮ মার্চ, ২০২১, ১:২১ এএম says : 0
লাক্ষা চাষ নিয়ে ভালো করে কাজ করা দরকার।
Total Reply(0)
রহস্য মানব ১৮ মার্চ, ২০২১, ১:২১ এএম says : 0
দেশীয় চাহিদা মিটিয়েও রফতানি করতে পারলে দেশীয় অর্থনীতির জন্য সুফল বয়ে আনবে।
Total Reply(0)
তানবীর ১৮ মার্চ, ২০২১, ১০:০২ এএম says : 0
অত্যন্ত সম্ভাবনাময় শিল্পজাত পণ্য লাক্ষা পোকার চাষ সম্প্রসারণের বিরাট সুযোগ রয়েছে।
Total Reply(0)
Polash Ali ৬ জুন, ২০২১, ১০:১০ পিএম says : 0
Here you can make your comment
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন