বাংলাদেশের রাজনীতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। দেশের রাজনীতিতে হাতেগোনা যে ক’জন ব্যক্তিত্ব সুদীর্ঘ প্রভাব বিস্তার করেন তাদের অন্যতম ছিলেন দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি রাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়াও তিনি একাধারে ছিলেন মেধাবী ছাত্র, সংগঠক, চৌকস রাজনীতিবিদ, সফল আইনজীবী, দক্ষ প্রশাসক। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় তিনি বঙ্গবন্ধুর আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূচনা থেকে পরবর্তী সময়ের রাজনীতির প্রতিটি বাঁকে বাঁকেই সংঘটিত নানা ঘটনাবলীর সাক্ষী ছিলেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ। বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আব্দুস সাত্তার, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, বেগম খালেদা জিয়া সরকারের সাথে তিনি কাজ করেছেন ঘনিষ্ঠভাবে। তার রাজনৈতিক দুরদর্শিতার কারণে প্রতিটি সরকারের কাছেই ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ছিলেন সমান গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। যিনি তার মেধা, দক্ষতা ও যোগ্যতার মাধ্যমে রেখেছেন তার স্বাক্ষর। একারণে সরকার ব্যবস্থার প্রায় বেশিরভাগ পদেই দায়িত্ব পালন করার সুযোগ হয়েছে এই পার্লামেন্টারিয়ানের। সংসদে সাংবিধানিক কোনো ইস্যুতে আলোচনায় বিএনপি ব্যারিস্টার আহমদের ওপর বেশি নির্ভর করত বলে দলটির নেতারা বলেছেন।
দেশ ও রাজনীতির যে কোনো ক্রান্তিকালে, সঙ্কটে রাজনীতিবিদরা ছুটে যেতেন বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের কাছে। নিতেন প্রয়োজনীয় পরামর্শ, দিকনির্দেশনা। আইন এবং রাজনীতি দুটি বিষয়েই তিনি ছিলেন সমান পারদর্শী।
মুজিবনগর সরকারের পোস্টমাস্টার জেনারেলের মাধ্যমে শুরু ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের। এরপর একে একে কাজ করেছেন শিল্প, পরিকল্পনা, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, পানিসম্পদ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, যোগাযোগ ও রেল যোগাযোগ, সড়ক যোগাযোগ, টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন, তথ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও উপ-প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, ভাইস-প্রেসিডেন্টের মতো সর্বোচ্চ পদেও দায়িত্ব পালন করেন ব্যারিস্টার মওদুদ। সর্বশেষ অষ্টম জাতীয় সংসদে মওদুদ আহমদ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ছিলেন মওদুদ আহমদ। পরে তিনি জিয়াউর রহমান, জেনারেল এরশাদ এবং খালেদা জিয়ার সরকারেও ক্ষমতার কেন্দ্রে ছিলেন।
তবে শুরুটা ছিল ছাত্রজীবন থেকে। তার সহকর্মীরা উল্লেখ করেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ একজন দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান যেমন ছিলেন, তেমনি তিনি আইন পেশাতেও সফল ছিলেন।
স্কুলে ছাত্র থাকার সময় বাংলা ভাষা আন্দোলনের মিছিলে যোগ দিয়ে তিনি জেল খেটেছিলেন। মওদুদ আহমদ ঢাকা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার সময় ওই কলেজের ছাত্র সংসদের আপ্যায়ন সম্পাদক ছিলেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ফরমান উল্লাহ খানের প্রতিষ্ঠিত খেলাফত রব্বানীর ছাত্র সংগঠন ছাত্রশক্তির সাথে জড়িত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করার পর তিনি লন্ডনে বার-অ্যাট-ল’ পড়তে যান। সেখানে তার পরিচয় হয়েছিল একই বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষার্থী আমীর উল ইসলামের সাথে। এখন সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলাম বলেছেন, তিনি এবং মওদুদ আহমদ বার-অ্যাট-ল’ শেষ করে ৬০ এর দশকের মাঝামাঝি দেশে ফেরেন। তিনি দেশে ফেরার পরই হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। তখন মওদুদ আহমদ তার জুনিয়র হিসাবে কাজ শুরু করেন। তখন ১৯৬৬ সালে শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা ঘোষণা করলে তারা তার সমর্থনে সক্রিয়ভাবে মাঠে নামেন। শেখ মুজিবুর রহমানকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানি শাসকদের করা যে মামলা ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’ হিসাবে পরিচিতি পেয়েছিল এবং যে মামলা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল- সেই মামলায় তিনি এবং মওদুদ আহমদ আইনজীবী হিসাবে কাজ করেছেন। মুজিবনগর সরকার মুক্তিযুদ্ধের সময় মওদুদ আহমদকে পোস্টমাস্টার জেনারেল নিয়োগ করেছিল। যুদ্ধ শুরুর আগে ১৯৭১ সালে তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খানের ডাকা গোলটেবিল বৈঠকে শেখ মুজিবের সাথে ছিলেন মওদুদ আহমদ। মুক্তিযুদ্ধে সংগঠকদেরও অন্যতম একজন ছিলেন তিনি।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর শেখ মুজিবের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে মওদুদ আহমদের সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। সে সময় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে আটক রাজনীতিকদের জন্য আইনী লড়াই চালানোসহ মানবাধিকার নিয়ে কাজ করেছেন। ১৯৭৫ সালে পট-পরিবর্তনের পর তৎকালীন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসেন। তিনি মওদুদ আহমদকে উপদেষ্টা নিয়োগ করেন ১৯৭৭ সালে। বিএনপি প্রতিষ্ঠার আগে জিয়াউর রহমান জাগদল গঠন করেন। সেই জাগদলের ১৯ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন মওদুদ আহমদ। পরে তিনি বিএনপি প্রতিষ্ঠার সাথেও সম্পৃক্ত ছিলেন। জিয়াউর রহমানের সরকারে ১৯৭৯ সালে উপ-প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন মওদুদ আহমদ।
১৯৮১ সালের মে মাসে জিয়াউর রহমানকে হত্যা করা হয়, এরপর ক্ষমতায় আসেন বিচারপতি আব্দুস সাত্তার। এক বছরের ভেতর হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করেন। এরশাদ সরকারে ব্যারিস্টার মওদুদ প্রথমে মন্ত্রী, তারপর উপ-প্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী এবং ভাইস-প্রেসিডেন্ট পর্যন্ত হয়েছিলেন। এর মধ্যে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে মওদুদ আহমেদ এমপি নির্বাচিত হন এবং সরকারের তথ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এক বছর পর ১৯৮৬ সালে তাকে উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৮৯ সালে তাকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় এবং এরশাদ তাকে ভাইস-প্রেসিডেন্ট করেন। ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকার জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার আগ পর্যন্ত তিনি সে পদেই ছিলেন। তিনিই মূলত সাংবিধানিকভাবে এরশাদের কাছ থেকে ক্ষমতা গ্রহণ করে বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদের কাছে অর্পণ করেন।
রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে মওদুদ আহমেদ আবারও এমপি নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের নেতা হিসেবে সংসদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে জাতীয় পার্টিতে রাজনৈতিক মতবিরোধের কারণে তিনি বিএনপি ফিরে আসেন। ২০০১ সালেও তিনি বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন ৪ দলীয় জোট সরকারে তিনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দলের সাথে ছিলেন। তবে মাঝপথে তিনি যে এরশাদ সরকারে যোগ দিয়েছিলেন, সে ব্যাপারে তার যুক্তি ছিল যে, তিনি গণতন্ত্রের জন্য সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু পরে তিনি বিএনপিতে ফিরে এসে গণতান্ত্রিক আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। তিনি বলেন, রাজনীতিতে ব্যর্থতা-সফলতা থাকতে পারে। সেখানে মওদুদ আহমদ রাজনীতিতে সফল ছিলেন। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ গণতন্ত্রের জন্যই কাজ করেছেন তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে। সেখান থেকে তিনি বিচ্যুত হননি। সেজন্য তাকে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে জেলখাটতে হয়েছে এবং নির্যাতিত হয়েছেন। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ও তিনি নিগৃহীত হয়েছেন।
মওদুদ আহমদের সহকর্মী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এক সময় সরকারে একসাথে কাজ করার ক্ষেত্রে অনেক সময় আমরা ভিন্ন ভিন্ন মত পোষণ করেছি। কিন্তু রাজনীতিবিদ হিসাবে সম্পর্কটা ঠিক ছিল।
রাজনীতি, আইন পেশা, লেখালেখি এবং বিদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো- এই ক্ষেত্রগুলোতে অবাধ বিচরণ ছিল ব্যারিস্টার মওদুদের। তবে রাজনীতিবিদের পরিচয়কেই তিনি বেশি উপভোগ করতেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স এর ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স এবং বিদেশি আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো ছিলেন তিনি।
বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ ১৯৪০ সালের ২৪ মে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম মাওলানা মমতাজ উদ্দিন আহমদ ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক এবং মাতা বেগম আম্বিয়া খাতুন গৃহিণী ছিলেন। ছয় ভাই বোনের মধ্যে ব্যারিস্টার আহমদ ছিলেন চতুর্থ। তার স্ত্রী হাসনা জসীম উদদীন মওদুদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রফেসর এবং তিনিও এরশাদ সরকারের সময়ে সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হয়েছিলেন। তার দুই ছেলে এবং এক মেয়ে। বড় ছেলে আসিফ মওদুদ অল্প বয়সেই মারা যান অনেক আগে। আর দ্বিতীয় সন্তান আমান মওদুদ প্রতিবন্ধী ছিলেন এবং তিনিও মারা যান ২০১৫ সালে। তার মেয়ে আনা আসপিয়া মওদুদ স্বামীসহ থাকেন নরওয়েতে। ব্যারিস্টার আহমদের শ্বশুর পল্লী কবি জসীম উদদীন।
ব্যারিস্টার মওদুদের লাশ আসছে আজ : দাফন কাল
সাবেক প্রধানমন্ত্রী, ভাইস-প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের লাশ দেশে আসছে আজ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে দেশে এসে পৌঁছাবে তার লাশ বহনকারী বিমান। তার একান্ত সহকারী মোমিনুর রহমান সুজন বলেন, স্যারের লাশ সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় আনার সব আনুষ্ঠিকতা শেষ হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকেটও হয়ে গেছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুর সময় বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে বিমানে কফিন রওনা হবে। ঢাকায় পৌঁছাবে সন্ধ্যা পৌনে ৬টায়। বিমানবন্দর থেকে লাশ নিয়ে যাওয়া হবে গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালের হিমঘরে। শুক্রবার সকাল ৯টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় প্রথম জানাজার নামাজ (অনুমতি সাপেক্ষে), ১০টায় ঢাকায় হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে এবং বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জানাজা হবে।
সুজন জানান, স্পিকারের অনুমতি সাপেক্ষে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আরেক দফা জানাজা হতে পারে। তবে বুধবার পর্যন্ত তারা অনুমতি পাননি। নয়াপল্টনের জানাজা শেষে অ্যাম্বুলেন্সে করে মওদুদ আহমদের কফিন নিয়ে যাওয়া হবে নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জে, তার গ্রামের বাড়িতে। সেখানে বাদ আসর কোম্পানিগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে জানাজার পর নিজের বাড়ির আঙিনায় আরেক দফা জানাজা শেষে পারিবারিক কবর স্থানে বাবা-মায়ের পাশে মওদুদ আহমদকে দাফন করা হবে।
সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হয়। তার ৮১ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ কিডনি ও ফুসফুসের জটিলতাসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন। ১৯৪০ সালে নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের জন্ম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন