স্টাফ রিপোর্টার : বেসরকারি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আয়কর নেয়া অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬টি রিট আবেদনের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল সোমবার এই রায় দেন।
যে দুই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সরকার ১৫ শতাংশ হারে আয়কর আদায় করে আসছিল, সেগুলো অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন আদালত। পাশাপাশি ওই দুই প্রজ্ঞাপনের আওতায় যে অর্থ আদায় করা হয়েছে, তা ফেরত দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এনবিআরকে।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস, এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলোজি, আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, চিটাগাংয়ের ২৫টি প্রতিষ্ঠান রিট আবেদন করে। এছাড়া ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি, ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইন্ডিপেডেন্ট ইউনিভার্সিটি ও সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির পক্ষে বাকি রিট আবেদনগুলো করা হয়।
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন, শাহ মোহাম্মদ আশিকুল মোরশেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীর।
২০০৭ সালের ২৮ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বল হয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনুমোদিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়, যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নয়, তাদের আয়ের উপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর পুনঃনির্ধারণ করা হল। “মেডিকেল, ডেন্টাল, ইঞ্জিনিয়ারিং ও তথ্য শিক্ষাদানে নিয়োজিত প্রাইভেট কলেজসমূহের আয় করমুক্ত হইবে। কিন্তু ওই সকল প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রতিবছর যথারীতি নিরীক্ষিত হিসাব বিবরণীসহ আয়কর বিবরণী দাখিল করতে হবে। ১ জুলাই থেকে এটা কার্যকর হবে।”
২০১০ সালের ১ জুলাই এনবিআরের আরেক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ, বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং কেবলমাত্র তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষাদানে নিয়োজিত বেসরকারি কলেজের আয়ের ওপর প্রদেয় আয়করের পরিমাণ হ্রাস করে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হল।
আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপনে কর কমানোর কথা বললেও মূলত এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমেই বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ, বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এবং তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক কলেজের ওপর কর আরোপ করা হয়েছে। “আদালত এই দুটি প্রজ্ঞাপনকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি এই দুই প্রজ্ঞাপনে দেয়া ক্ষমতায় যে অর্থ আদায় করা হয়েছে, তা ফেরত দিতে বলেছে।”
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীর বলেন, “দুটি প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ হয়েছিল। প্রথম আদালত ওই দুই প্রজ্ঞাপনের বৈধতা নিয়ে রুল দেয়। সেই রুল এবসোলিউট করে দিয়েছে।” রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পেলে আদালতের নির্দেশনার বিষয়ে বিস্তারিত বোঝা যাবে বলে জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন