অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ব্যবসায়ীরা গত বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ দাম কম নির্ধারণ করে চলতি বছর ও কুরবানির চামড়া কেনার যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা অগ্রহণযোগ্য। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চামড়ার যৌক্তিক দাম নির্ধারণ করে বাণিজ্য সচিবের অনুমোদন নিয়ে তা প্রচার জন্য কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।
গতকাল সোমবার চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ব্যবসায়ীদের এই প্রস্তাব কোনোভাবেই মানা যাবে না। যদি অযৌক্তিক দাম নির্ধারণ করা হয়, তবে পাশের দেশে চামড়া পাচার হয়ে যাবে। তা কোনোভাবে ঠেকানো যাবে না। তাই চামড়া নিয়ে কোনও ধরনের সিন্ডিকেট হবে না, সিন্ডিকেট করতে দেওয়া হবে না।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, পশু রফতানি না করার ভারতের যে সিদ্ধান্ত, তা বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক হয়েছে। কারণ দেশের আনাচে কানাচে এখন পশু পালন হচ্ছে। বাংলাদেশে এ মুহূর্তে ৩৩ লাখ পশু কোরবানির জন্য স্বাস্থ্যসম্মতভাবে মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। এ বছর কোরবানির জন্য সব মিলিয়ে এক কোটি চার লাখ পশু তৈরি আছে। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৯৬ লাখ ৩৫ হাজার।
তিনি আরও বলেন, গত জুলাই এবং আগস্ট মাসে দেশে রফতানি হয়েছে ৫ হাজার ৮৩৭ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। এ প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৪২ শতাংশ। আগস্ট মাসে বাংলাদেশ থেকে রফতানি হয়েছে ৩ হাজার ৩০৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। এ মাসে রফতানি প্রবৃদ্ধি ১৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। জঙ্গি হামলা রফতানির জন্য বাধা হয়নি। আমরা লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, কোরবানির ঈদে যাতে লবণের সংকট তৈরি না হয়, সে জন্য দেড় লাখ টন লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামীকালের মধ্যেই এ লবণ আমদানির জন্য এলসি খোলা শুরু হবে। আগামী পরশুদিন লবণ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক আছে। এর মধ্যে ৭৫ হাজার টন শিল্প মালিকদের জন্য আর বাকি ৭৫ হাজার টন ভোক্তাদের জন্য।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত সচিব সালাহউদ্দিন আকবর, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মাফরুহা সুলতানা, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহিন আহমেদ, চামড়া ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন প্রমুখ।
চামড়ার দর ৪০ শতাংশ কমানোর পাঁয়তারা
উল্লেখ্য, গত বছর কোরবানির মৌসুমে ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ৫০-৫৫ টাকা। ঢাকার বাইরে বিক্রি হয় ৪০-৪৫ টাকা। এছাড়া সারা দেশে প্রতি বর্গফুট মহিষের চামড়া ৩৫-৪০ টাকা, খাসি ২০-২২ টাকা ও ভেড়ার চামড়া ১৫-১৭ টাকা দর নির্ধারণ করা হয়। দর কমানোর চক্রান্ত সফল হলে চলতি কোরবানির মৌসুমে সংগৃহীত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দর নির্ধারিত হতে পারে ঢাকায় ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এ হিসাবে ঢাকার বাইরের দর হতে পারে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও খাসির চামড়ার দরও অনুরূপ হারে কমতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন