ইনকিলাব ডেস্ক : সিরিয়ায় দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধ অবসানে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান। অপরদিকে শিল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে মডেল অংশীদারিত্ব বজায় রাখতে উত্তর সিরিয়ার সন্ত্রাসী গ্রুপ পিকেকে’র বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেয়ার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এরদোগান। চীনের চেচিয়াং প্রদেশে হাংঝু শহরে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে অংশ নিয়ে ওবামার প্রতি এ আহ্বান জানান তিনি।
গত ১৫ জুলাই তুরস্কে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার পর প্রথমবারের মতো বারাক ওবামার সঙ্গে এরদোগানের সাক্ষাৎ হলো। আইএস নির্মূলে তুরস্কের অভিযান শুরুর দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে এ দুই নেতার মাঝে এ বৈঠক হলো। ইউফ্রেটিস শিল্ড নামক এ অভিযানের উদ্দেশ্য যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের বাহিনীকে সহায়তা করার পাশাপাশি সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোকে বিতাড়িত করার মাধ্যমে তুরস্কের সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা জোরদার এবং সিরিয়ার অখ-তা বজায় রাখা। বৈঠকে এরদোগান গুরুত্বারোপ করেন, জি-২০ দেশগুলোর মধ্যে একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে তবে, ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর মতো সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধেও সবাইকে একই মনোভাব পোষণ করা উচিত। তিনি বলেন, এখানে ভালো সন্ত্রাসী কিংবা খারাপ সন্ত্রাসী বলার কোনো অবকাশ নেই; সবধরনের সন্ত্রাসবাদই খারাপ। এরদোগান জোর দিয়ে বলেন, তুরস্কের যুদ্ধ আইএস নির্মূলের পাশাপাশি পিকেকে, ওয়াইপিজি, পিওয়াইডির মতো সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে। এসব সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপের বিরুদ্ধে তাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি দৃঢ়ভাবে ঘোষণা দেন। এরদোগান বলেন, আমরা আমাদের দক্ষিণ সীমান্তকে সন্ত্রাসীদের জন্য করিডোর হিসেবে ব্যবহার করতে দিতে পারি না। এই উদ্দেশ্যই তুরস্কের সামরিক বাহিনী মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর সঙ্গে যোগ দিয়েছে। এরদোগান জোর দিয়ে বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমরা এই সংগ্রামে সফল হবই। যুক্তরাষ্ট্র এর আগে সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ওয়াশিংটনের অংশীদার হতে তুরস্কের প্রতি বার বার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ওয়াইপিজি সিরিয়ান পিকেকে সন্ত্রাসী গ্রুপের একটি শাখা যেটিকে তুরস্ক তার দেশের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নও এটিকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় রেখেছে। তুরস্ক হচ্ছে ন্যাটোর একটি শক্তিশালী মিত্র এবং আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জোটের একটি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।
আলোচনায় ওবামা বলেন, আমাদের সামরিক বাহিনী, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও গোয়েন্দাদের সহযোগিতা এ অঞ্চল থেকে আইএসকে হটাতে সহায়তা করছে। বিশেষত সিরিয়া ও তুরস্কের সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের বিতাড়িত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ওবামা আরো বলেন, কিন্তু আমাদের প্রয়োজন আইএসকে পুরোপুরি নির্মূল করা এবং এব্যাপারে কীভাবে আমরা আরো সহযোগিতা করতে পারি সে বিষয়ে আলোচনা করেছি। এর আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে এরদোগানের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গত ৯ আগস্ট রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে পুতিন ও এরদোগানের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় যা আঙ্কারা এবং মস্কোর মধ্যে সম্পর্কের একটি নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করে। বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর নেতারা ৪-৫ সেপ্টেম্বর জি২০ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছে। এটি চীনের চেচিয়াং প্রদেশের উপকূলীয় শহর হংজৌতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আনাদুলো নিউজ, রয়টার্স, ওয়েবসাইট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন