স্টাফ রিপোর্টার, নরসিংদী থেকে : আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী এড. আনিসুল হক বলেছেন, কোনো অপশক্তিই শেখ হাসিনা সরকারের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। জঙ্গিবাদের মতো এক মারাত্মক অপশক্তিকে মোকাবেলা করেই সরকার সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সম্মুখের যে অপশক্তি বাধা হয়ে দাঁড়াবে তাকেও সর্বশক্তি দিয়ে মোকাবেলা করা হবে। তিনি বলেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রশ্নে কোনো আপোষ করা হবে না। সংবিধান অনুযায়ী বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। বিচার বিভাগের এই স্বাধীন সত্তার মর্যাদা রক্ষায় শেখ হাসিনা সরকার বদ্ধপরিকর। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। তিনি গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নরসিংদী জেলা জজ আদালতের বর্ধিত ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ বেগম ফাতেমা নজিব। বক্তৃতা করেন আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু সালেহ শেখ মো: জহিরুল হক।
আইনমন্ত্রী বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে আইনজীবী ও বিচার প্রার্থীরা যেসকল অসুবিধার সম্মুখীন হন তার মধ্যে আদালতের কাঠামোগত দিক একটি প্রধান সমস্যা। এসব সমস্যা দূরীকরণে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে তা আস্তে আস্তে সমাধান করা হবে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান হবার পর বিচার বিভাগ ছিল নির্বাহী বিভাগের অধীনে। সে সময় থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগের অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছিল। এসময় বিচার বিভাগ স্বাধীন বিচার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বহুবিধ বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমরাও বিচার নিয়ে বহুবিধ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। ১৯৭২ সালের সংবিধান অনুযায়ী ২০০৭ সালে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করা হয়। এরপর থেকে বিচার বিভাগের স্বাধীন সত্তা নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে। আরো যেসব সমস্যাবলি সৃষ্টি হয়েছে সেগুলোকে দূরীভূত করেই আমরা আমাদের বিচার বিভাগ নিয়ে অভীষ্ঠলক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হব। মন্ত্রী বলেন, আমার জন্ম আদালত প্রাঙ্গণে। উচ্চ আদালত সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে হলে আমি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে কথা বলি। আইন মন্ত্রণালয় কোনো প্রকার সেক্রেটারিয়েট করার ক্ষমতা রাখে না। এ দায়িত্ব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের। বিষয়টি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নিজেরাই করতে পারে অথবা পার্লামেন্ট থেকে আইন পাস করিয়েও করতে পারে।
সভাপতির ভাষণে জেলা ও দায়রা জজ ফাতেমা নজিব নরসিংদী জেলা জাজশীপের বিভিন্ন সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, এই জাজশীপে মোট ১৮ জন বিচারক রয়েছেন। কিন্তু বিচার কক্ষের জন্য খুবই কম। ১৪ জন বিচারককে এজাহার ভাগাভাগি করে তাদের বিচারকার্য চালাতে হয়। নরসিংদী জাজশিপের জন্য আরো ২ জন যুগ্ম-জেলা জজের প্রয়োজন বলে মন্ত্রীকে অবহিত করেন। তাছাড়া বিভিন্ন পর্যায়ে লোকবলও কম। তিনি বলেন, ৬ শতাধিক খুনের মামলা বিচারাধীন রয়েছে। আর এই মামলাগুলো একজন বিচারককে দেখতে হচ্ছে।
এর আগে মন্ত্রী নরসিংদী জেলা জাজশিপের জেলা ও দায়রা জজসহ বিভিন্ন বিচারকদেরকে সাথে নিয়ে জেলা আদালতের বর্ধিত ভবন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কোরআন পাঠ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তিনি জেলা জাজশিপের বিচারক ও আইনজীবীদের সাথে মতবিনিময় করেন। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. বশিরুল কাদের ও সাধারণ সম্পাদক এড. খোরশেদ আলমসহ সিনিয়র ও নবীন-প্রবীণ আইনজীবীগণ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন