শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

কার ভাগ্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদ

প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩৭ পিএম, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬

আফজাল বারী : রাজনীতির ভাগ্যের চাকা ঘুরানো পদের নাম ‘সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব’। বিএনপিতে এই পদটি গুরুত্বপূর্ণ। দলের ভবিষ্যৎ কান্ডারি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের উত্তরাধিকারী তারেক রহমানের জন্যই সৃষ্টি করা হয় পদটি। এই দায়িত্ব নিয়েই তিনি সারা দেশের তৃণমূলে জাগরণ সৃষ্টি করেছিলেন। তার সাংগঠনিক দক্ষতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। যার বদৌলতে তিনি এখন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান। তারেক রহমানের পর ওই পদে যিনি দায়িত্ব পালন করছেন মিরাকেল কিছু না ঘটলে তিনিই হচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব।
তবে এমনটিও আলোচনা রয়েছে- আসন্ন কাউন্সিলের গঠনতন্ত্র সংশোধনী কমিটিতে এই পদের বিলুপ্তি প্রস্তাব আনবেন অনেকে। আকর্ষণীয় এই পদটি থাকা না থাকা কাউন্সিলরদের উপর নির্ভর করছে।
দলীয় সূত্রের খবর, কাউন্সিল ঘিরে এই পদটি পাবার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছেন একাধিক নেতা। সার্বিক বিবেচনায় প্রত্যাশীরা কেউ কারো চেয়ে কম নন। শিক্ষা, দলীয় আদর্শ, সাংগঠনিক দক্ষতা, ত্যাগ, সততা, স্বচ্ছতা, শীর্ষ নেতার আস্থা ও কর্মীদের অগাধ সমর্থনÑ সবই আছে তাদের মধ্যে। তারপরও একজনই হবেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। দলটির কার্য নির্বাহী কমিটির অন্য পদের বেলায় সিদ্ধান্ত নিতে অনেকটা সহজ হলেও এই পদের হিসেব কষতে বেশ বেগ পেতে হবে নীতি নির্ধারণী ফোরামের।
দলের পলিসি মেকারদের সাথে আলোচনাকালে জানা গেছে, এই মুহূর্তে পদটির জন্য ব্যাপক লবিং-তদ্বির করছেন এবং আলোচনায় রয়েছে বিএনপির তিন যুগ্ম মহাসচিব। সালাহ উদ্দিন আহম্মেদ, মোহাম্মদ শাহজাহান ও রুহুল কবির রিজভী। তারা জানান, এই পদ প্রত্যাশীদের ত্যাগের মূল্যায়ন করা হবে। তিনজনই পদটির জন্য উপযুক্ত। শীর্ষ নেতা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিশ্বস্ত। তাদের ইচ্ছাতেই পদটির মনোনয়ন পাবেন তিনজনের যে কেউ।
বাংলাদেশের সমসাময়িক রাজনীতিতে আলোচিত নাম সালাহ উদ্দিন আহম্মেদ। অপহরণ, গুম অতঃপর তার খোঁজ মিলেছে বিদেশে (ভারত)। মামলায় লড়ছেন সেখানেই। সালাহ উদ্দিন আপাদমস্তক ছাত্রদলের প্রডাক্ট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবনের ইতি টেনে রাজনীতি ছেড়ে সরকারি চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। অতঃপর চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে আসেন। কয়েকবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। ’৯১-এ চারদলীয় জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সনের এপিএসের দায়িত্ব পালন করেছেন। সড়ক ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। গত ২০১৫ সালের আন্দোলন সংগ্রামে রিজভী আহমেদ গ্রেফতারের পর তিনি দলীয় মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেছেন। গোপন ভিডিও পাঠিয়ে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন। এ কারণেই গুম-অপহরণের শিকার হন বলে বিএনপির দাবি। বিদেশে থাকলেও তার সপক্ষে অনেকেই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের পদটির জন্য লবিং করছেন।
নোয়াখালী থেকে কয়েকবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ শাহজাহান। মতাদর্শে ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নে। এরপর বিএনপির। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই রয়েছেন সাথে-পাশে। বর্তমান নির্বাহী কমিটির সাত যুগ্ম মহাসচিবের মধ্যে চার নম্বরে শাহজাহানের নাম। রাজনীতিই তাকে শিক্ষায় স্নাতক পাসের পর এগোতে দেয়নি। তবে নির্দেশনা পালনে আস্থা-বিশ্বাসের দিক থেকে তিনিও শীর্ষ নেতার কাছের মানুষ। দলের বিপর্যয়ের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন তাকেই বিএনপি জেলা পুনর্গঠনের দায়িত্ব দিয়েছেন। পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ খালেদা জিয়ার নির্বাচনী আসনের প্রতিবেশী শাহজাহান। সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদটি অনুকূলে নিতে লবিং করছেন তিনি।
যুগ্ম মহাসচিবের পাশাপাশি দলীয় দফতর সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকারী রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। বামপন্থী মতাদর্শ থেকে তার ছাত্রদলে আসা এই নেতা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বিপুল ভোটে ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হন তুখোড় ছাত্রনেতা রিজভী আহমেদ। একমাত্র তিনিই ব্যালটে নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন পুলিশের গুলিতে। ১/১১-এ গা-বাঁচাতে অনেকেই যখন সংস্কারাবরণে তখন বিএনপি ও জিয়া পরিবারের পক্ষে রিজভী আহমেদের ভূমিকা শুধু বিএনপিতেই নয়Ñ প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলেও অবলীলায় বাহবা দিয়েছেন। বারবার হোঁচট আসা বিএনপির কার্যালয়ে দায়িত্ব পালনে নেতার শূন্যতা পূরণ করেছেন তিনি। অবরুদ্ধদশায় পার করেছেন দিনের পর দিন। আওয়ামী লীগের দুই আমলে মামলার সংখ্যাও শতেকের উপরে। তিনিই ৪৮ দিন রিমান্ডের মুখোমুখি হয়েছেন। রাজনীতির মাঠে দীর্ঘ পরীক্ষায় রিজভী আহমেদ বিএনপি চেয়ারপার্সন ও তারেক রহমানের বিশ্বস্ত। রিজভীর উপর মামলা-হামলা, নির্যাতনের খড়গের মাত্রা নিয়ে একাধিকবার কথা বলেছেন দুই নেতাই। ফলে যুগ্ম মহাসচিবদের মধ্যে সিনিয়র হবেন এমন প্রত্যাশা রিজভীর।
কাক্সিক্ষত পদটি থাকা না থাকা নির্ভর করছে জাতীয় কাউন্সিলের উপর। আর যদি বহাল থাকে ওই পদে আসীন হবেন তিনি-ই, যে জিয়া পরিবারের কাছে বিশ্বাসের পারদে শতভাগ সাচ্চা ব্যক্তি। সেজন্য অপেক্ষা করতে হবে আগামী ১৯ মার্চ পর্যন্ত।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Ahsanullah khan sabuj ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ৮:৫৬ এএম says : 0
Ruhul kabir Risvi.
Total Reply(0)
Md Rashedul Islam ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১০:৫০ এএম says : 0
সালাহ উদ্দীন আহমেদ কে চাই
Total Reply(0)
Hadiul Islam Masum ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১০:৫১ এএম says : 0
২ কোটি বার রিজবী কারন বিএনপি এর দুর্দিনের কানডারি সেই ১/১১ তারপর গত ৭বছরব্যাপী তিনি দলের জন্য নিঃসর্ত ভাবে কাজ করেছন
Total Reply(0)
Ahmed Zunayed ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১০:৫৫ এএম says : 0
may be রিজভী।কারন করুণ সময়ে দলের হাল তার হাতেআ শোভা পায়
Total Reply(0)
md babul ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:১৪ পিএম says : 0
Rejbi
Total Reply(0)
Angel Ivan ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ২:৩৪ পিএম says : 1
Salah uddin or Rizvi both are eligible. But Rizbi is the best.
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন