কূটনৈতিক সংবাদদাতা : কাশ্মীর ও বেলুচিস্তান ইস্যুতে পাক-ভারত টানাপড়েনের ফলে ইসলামাবাদে আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সার্কে যাবার বিষয়ে এখনো নিশ্চিত করা হয়নি। অপরদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরুর পর গত পাঁচ বছর ধরে ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক শীতল পর্যায়ে রয়েছে। মন্ত্রী বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পর্যায়ে কোনো সফর বিনিময় হয়নি। ফলে আগামী ৮ থেকে ১১ নভেম্বর ইসলামাবাদে অনুষ্ঠেয় ১৯তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাচ্ছেন না বলেই বিভিন্ন সূত্রে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস আগেও প্রধানমন্ত্রীর সার্কে অংশগ্রহণের ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সবুজ সংকেত দেয়া হয়। এরপর থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব ধরনের প্রস্তুতিও শুরু করে। নিয়মানুযায়ী সার্কের সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মতির ভিত্তিতেই সার্ক শীর্ষ সম্মেলনের দিন তারিখ নির্ধারিত হয়ে থাকে। জানা গেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া ও কয়েকজন অপরাধীর ফাঁসির দ- কার্যকর হবার পর পাকিস্তানের অযাচিত প্রতিক্রিয়া আর হস্তক্ষেপের জন্যই প্রধানমন্ত্রী সার্ক সম্মেলনে যাবার সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
এ অবস্থায় পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সার্ক শীর্ষ সম্মেলন হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের কর্মকর্তারা। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে অব্যাহত অস্থিরতা এবং বেলুচিস্তান পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে ইসলামাবাদ-নয়াদিল্লির মধ্যকার তীব্র টানাপড়েনের পরিস্থিতিতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য ইসলামাবাদে যাবেন কিনা সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সার্কের নিয়ম অনুসারে, যেকোনো একটি সদস্য দেশ অংশ না নিলে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় না। তবে বাংলাদেশ এখনই কোনো ঘোষণা দিতে চায় না। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এর আগে দু’দেশের মধ্যে কার্গিল যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত সার্ক শীর্ষ বৈঠক স্থগিত রাখতে হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের নভেম্বরে নেপালে ১৮তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পাকিস্তানের পরে ২০তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন হবে শ্রীলঙ্কায়। দক্ষিণ এশিয়ার সাত দেশ বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতার ফোরাম সার্ক ১৯৮৫ সালে যাত্রা শুরু করে। পরে আফগানিস্তান এই সংস্থার সদস্যপদ পায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন