কর্পোরেট ডেস্ক : থাইল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি বিপুল। এর পরিমাণ প্রায় ৭০ কোটি ২০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরে থাইল্যান্ড থেকে আমদানি করে ৭৪ কোটি ১০ লাখ ডলার। বিপরীতে বাংলাদেশি পণ্য থাইল্যান্ডে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৩ কোটি ৯০ লাখ ডলার। চট্টগ্রাম নগরীর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত বাংলাদেশে থাইল্যান্ড বিনিয়োগের জন্য বাজার পর্যবেক্ষণ শীর্ষক দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সভায় এ চিত্র তুলে ধরেন চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম। এ সভায় দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় থাইল্যান্ডের ১৮ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দেশটির বিনিয়োগ বোর্ডের উপমহাসচিব চোকেডি কায়োসাং। থাইল্যান্ডের বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় চেম্বার পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলম, ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট গোলাম মোস্তফা, ইস্পাহানি গ্রæপের জিএম মিনহাজ উদ্দিন আহমেদ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে সাবেক চেম্বার সভাপতি ও থাইল্যান্ডের সম্মানিত কনস্যুল আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী, তুরস্কের কনস্যুল জেনারেল সালাহউদ্দিন কাসেম খান, চট্টগ্রাম চেম্বারের সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ, চেম্বার পরিচালক কামাল মোস্তফা চৌধুরী, মাহফুজুল হক শাহসহ উভয় দেশের প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী নেতা উপস্থিত ছিলেন। মাহবুবুল আলম বলেন, চট্টগ্রামে তিনটি নতুন নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ে আট হাজার একর জমি ও আনোয়ারায় কর্ণফুলী নদীর পাড়ে এক হাজার একর জায়গায় ইকোনমিক জোন হচ্ছে। বন্দরসহ ভৌগোলিক সুবিধা এবং বিদেশি বিনিয়োগের জন্য সরকার প্রদত্ত সুযোগ কাজে লাগাতে চট্টগ্রামে নির্মাণাধীন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প স্থাপন ও বিনিয়োগে থাইল্যান্ডকে আহŸান জানান তিনি। এ ছাড়া দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে চট্টগ্রাম ও বন্দরের মধ্যে সরাসরি শিপিং লাইন স্থাপন করলে উভয়পক্ষ উপকৃত হবে বলে মন্তব্য করেন মাহবুবুল আলম। তিনি আরো জানান, চলতি বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশের জিডিপি প্রায় ৭ শতাংশ এবং মাথাপিছু আয় এক হাজার ৪৬৬ ডলার অতিক্রম করেছে। চোকেডি কায়োসাং বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার বিনিয়োগের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ। এ দেশের সাম্প্রতিক উন্নয়ন সূচকের অগ্রগতি দেখে মনে হয়েছে, বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত দেশ এটি। তবে দুই দেশের বাণিজ্যিক ঘাটতি শিগগির দূর করা সম্ভব নয়। কিন্তু ধীরে ধীরে সেটা কমিয়ে আনতে ভূমিকা রাখতে পারেন ব্যবসায়ীরা। তিনি জানান, বাংলাদেশে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স, অটোমোবাইল পার্টস, পাওয়ার প্ল্যান্টসহ বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী থাইল্যান্ড। থাই-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সভাপতি মিনপান্ট চায়া বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে থাইল্যান্ডের ব্যাপক বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। সেটা দুই বছরের মধ্যে কমিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। এর জন্য থাইল্যান্ডের বাজার পর্যবেক্ষণ করে নতুন পণ্য নিয়ে হাজির হতে হবে বাংলাদেশকে। সভায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের থাইল্যান্ড সফরের আমন্ত্রণ জানান তিনি। বাংলাদেশ থেকে ওষুধ, পাট, চামড়াজাত পণ্য, হিমায়িত মাছ ও সিরামিক রপ্তানি বাড়ানোর পাশাপাশি প্লাস্টিক ও রাবার শিল্প খাতে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের এ দেশে বিনিয়োগের আহŸান জানান বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাইল্যান্ডের জন্য পৃথক জোন স্থাপনের ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন