শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের নৌসীমায় ভারতীয় জেলেদের অবাধ অনুপ্রবেশ

প্রকাশের সময় : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

খুলনার আড়তগুলোতে প্রচুর ইলিশ : ডাকাতদের অব্যাহত অপহরণ বাণিজ্য
আবু হেনা মুক্তি : ভাদ্রের শেষ দিকে সাগরে ও নদীতে আশানুরূপ ইলিশ ধরা পড়ায় দামও এখন কিছুটা নাগালের মধ্যে। সাগর ও নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় খুলনার ৫নং ঘাট ও রূপসা পাইকারী মাছের আড়ৎ এবং বাগেরহাট প্রধান মৎস্য আড়ত কেবি বাজার চত্বরে দেখা যায় ক্রেতা ও বিক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। প্রতিদিন এসব মোকামগুলোতে শত শত মাছের ট্রলার এসে ভিড় জমাচ্ছে। এভাবে মাছ পেলে মাছের দাম আরও একটু কমতে পারে। সাময়িকভাবে জেলেরা খুশি হলেও বাংলাদেশের নৌসীমার গভীর বঙ্গোপসাগরে ভারতীয় জেলেদের অবাধ অনুপ্রবেশ ঘটছে। এদেশের নৌসীমায় তাদের অবাধ অনুপ্রবেশের কারণে বাংলাদেশী জেলেরা তাদের চাহিদামত পর্যাপ্ত শিকার করতে পারছে না।
সূত্রমতে, ভরা ইলিশ মৌসুমে বিদেশী চোরা জেলেদের কারণে আমাদের দেশে ইলিশের দাম যা হওয়ার কথা তার চেয়ে বেশি। ভারতীয় জেলেদের অব্যাহত মাছ লুটপাটের কারণে বঙ্গোপসাগরে এলাকায় মাছের রক্ষিত বিশাল মৎস্য ভা-ারে ইতোমধ্যে মাছের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সাগরের সুন্দরবন এলাকায় মাছ শিকাররত জেলের তাদের মহাজনদের কাছ থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তবে ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছরের তুলনায় এবছর সাগরে মাছধরা পড়ছে বেশি। এবছর মাছের সাইজ খুব বড় না হলেও মাঝারি ও ছোট সাইজের মাছের বেচাকেনা বেশ ভালই। বাজারে ছোট সাইজের এক পোন (৮০ পিস ইলিশ ) ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর মাঝারি সাইজের এক পোন ইলিশ ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকার বেচা কেনা হয়েছে। তিনি জানান, বড় সাইজের ইলিশ তেমন না আসায় দামও তেমন উঠছে না। তারপরও সাগরে এভাবে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়লে তাদের বিগত বছরের লোকসান পুষিয়ে উঠতে পারবে বলে অনেক মৎস্যজীবীরা আশা করেন।
বঙ্গোপসাগরের সুন্দরবন উপকূলীয় কয়েকটি জেলে পল্লীতে জানা গেছে, সাধারণত প্রতি ইংরেজী বছরের জুন-জুলাই মাস থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত বাংলাদেশী জেলেরা বঙ্গোপসাগরে গভীরে ফেয়ারওয়ে বয়া, ট্রলার ও নৌকায় করে বিপুল পরিমাণ সামুদ্রিক মাছ ধরে থাকে। এ সময় সাগরের পানি শান্ত থাকায় এটা জেলেদের কাছে মাছ ধরার উপযুক্ত মৌসুম হিসেবে চিহ্নিত। তবে ইলিশ মৌসুম থাকায় জুনের মাঝামাঝি থেকে জুলাই আগষ্ট ও সেপ্টম্বরে জেলেরা ঝুঁকি নিয়েও মাছ ধরে থাকে। এই মাছ ধরার মৌসুমে বিদেশী বিভিন্ন ট্রলার বিশেষ করে ভারতীয় ট্রলার বাংলাদেশের নৌসীমায় অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকার করতে আসে। ভারতীয় ছাড়াও পার্শ্ববর্তী থাইল্যান্ড, মিয়ানমারের বিদেশী জেলেরা অবৈধভাবে বঙ্গোপসাগরে অনুপ্রবেশ করছে, এদেশের নৌসীমায় সাগরে রক্ষিত বিশাল মৎস্য সম্পদের লোভে। মাছধরার আধুনিক সরঞ্জামও বিশাল ট্রলারে করে বিদেশী জেলেরা মাছ ধরার কারণে এদেশীয় জেলেরা তাদের তুলনায় মাছ পাচ্ছে অনেক কম। অধিকাংশ সময় এসব বিদেশী বিশেষ করে ভারতীয় জেলেরা প্রকাশ্যে সাগর এলাকায় অনুপ্রবেশ করে এদেশের মাছ ও মাছ ধরার সরঞ্জাম লুটপাট করছে। বাংলাদেশী জেলেরা বিদেশী জেলেদের মাছ শিকারের প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। কোন কোন ক্ষেত্রে ভারতীয় জেলেরা এদেশের জেলেদের মাছ মারার ট্রলার ও চাল ডাল লুটপাট করতে পর্যন্ত দ্বিধা বোধ করে না। বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর হাতে মাঝে মধ্যে কিছু বিদেশী ট্রলার ধরা পড়লেও তার সংখ্যা কম। বিদেশী জেলেরা তাদের ট্রলারে বসে অত্যাধুনিক দুরবীণের মাধ্যমে দূর থেকে বাংলাদেশের নৌবাহিনীকে আসতে দেখলেই দ্রুত ইঞ্জিন চালিয়ে পালিয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, ভারতীয় জেলেদের এদেশের নৌসীমায় অনুপ্রবেশ করতে সেদেশের নৌ বাহিনীর সহযোগিতা করে থাকে। অনেক সময় ভারতীয় নৌবাহিনী বাংলাদেশের নৌসীমায় প্রবেশ করে এদেশের জেলেদের ধরে নিয়ে যায় বলেও জেলেরা অভিযোগ করেছেন। বাংলাদেশের বঙ্গোপসাগর এলাকায় মৎস্য সম্পদের রয়েছে বিশাল ভা-ার। বিদেশী বিশেষ করে ভারতীয় জেলেরা এ মৎস্য ভা-ারের লোভে এলাকায় অনুপ্রবেশ করে সহজেই বিপুল পরিমাণ মাছ শিকার করতে পারে। আর এ কারণে শীত মৌসুমে ভারতীয় জেলেরা অবাধে সাগরের এদেশের নৌসীমায় অনুপ্রবেশ করে শিকারের নামে মাছ লুটপাট করে নিয়ে যায়। বিদেশে মাছ লুটপাটের কারণে বাংলাদেশের মৎস্য ভা-ারে ঘাটতি দেখা দেয়ার আশংকা রয়েছে। সাগরে সুন্দরবন উপকূলীয় জেলেপল্লী দুবলারচরে মেহের আলীয় টেকের দুবলা ফিশারম্যান গ্রুপের চেয়ারম্যান মেজর (অব:) জিয়াউদ্দিন আহম্মেদ জেলেদের মহাজন সাবের আহম্মদ সুনীল বহদারসহ কয়েকজন ট্রলার মালিকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, বিদেশী জেলেরা বাংলাদেশী জেলেদের আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে এদেশের জেলেদের মাছ ধরতে বাধার সৃষ্টি করে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Shah Faroque ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ৯:৪৬ এএম says : 0
Not only see check you will found Indian in ..................
Total Reply(0)
Nannu chowhan ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১:০৪ পিএম says : 0
What is doing our navy?
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন