যশোর থেকে রেবা রহমান : পানিবদ্ধ যশোরের ভবদহ এলাকার দেড় শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদানসহ সব কার্যক্রম অঘোষিতভাবে বন্ধ রয়েছে মাসাধিককাল। ভবদহের শ্রীনদী ও হরিহর নদীর উপচেপড়া পানিতে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো তলিয়ে গেছে। শিক্ষা অফিস এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, যশোরের মণিরামপুর, কেশবপুর ও অভয়নগর উপজেলার ১৬১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ঈদের ছুটির পরও পরিস্থিতির উন্নতির কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। যশোরের জেলা শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম টুকু বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি। তবে অঘোষিত ছুটি চলছে পানিবদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
সূত্র জানায়, পানিবদ্ধতায় বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে মণিরামপুরে ২৯টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ৩৭টি স্কুল ও মাদরাসা, কেশবপুর উপজেলার ৫৭টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ১৬টি স্কুল এবং অভয়নগর উপজেলার ১৪টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঠ, শ্রেণিকক্ষ সব তলিয়ে গেছে। পানিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা জেলা শিক্ষা অফিস থেকে জেলা প্রশাসক, শিক্ষা অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তারা ভবদহ এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সকল ধরণের পরীক্ষা বন্ধ রাখার অনুরোধ করেছেন।
অভয়নগর উপজেলার সিংগাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এসএম ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জানান, তাঁর গ্রামে বুইকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তলিয়ে যাবার কারণে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কেশবপুরের মূলগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাপস রায় বলেন, স্কুল মাঠ ও শ্রেণিকক্ষ পানি থৈ থৈ করছে। এমনিতেই গোটা এলাকার পানিবন্দী লোকজনের ছেলেমেয়েদের স্কুলে আসার মতো পরিস্থিতি নেই। কেশবপুর উপজেলার হাবাসপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কার্তিক চন্দ্র সাহা বলেন, স্কুল মাঠে হাঁটুজল। এর মধ্যেও কোনরকমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা করা হচ্ছে জোড়াতালি দিয়ে। মণিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আকরাম হোসেন খান বলেন, যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কক্ষে পানি উঠেছে সেখানে ক্লাস হচ্ছে না। ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তারা সাময়িক ক্লাস বন্ধ করে দিয়েছে। পানি নেমে গেলেই সেখানে ক্লাস শুরু হবে। যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তাপস কুমার অধিকারী বলেন, পানিবদ্ধ এলাকায় পাঠাদানের উপযোগী পরিবেশ নেই। তবে পানিবদ্ধতার কারণে অফিসিয়ালি এখনও কোন প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি। তিনি আরও বলেন, পানিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করে অধিদফতরে তালিকা পাঠিয়েছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন