শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

স্থানীয় অটোমোবাইল শিল্প সঠিক নীতি সহায়তায় উন্নয়ন সম্ভব

ওয়েবিনারে বক্তারা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০১ এএম

সঠিক নীতি সহায়তা, প্রণোদনা ও কর সুবিধার মাধ্যমে স্থানীয় অটোমোবাইল শিল্পের উন্নয়নকে তরান্বিত করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গতকাল ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘অটোমোবাইল শিল্পের উন্নয়ন: বর্তমান বাস্তবতা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে তারা এই অভিমত তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নায়োকি। ওয়েবিনার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইফাদ গ্রুপ অব বাংলাদেশ’র উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিন।

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেন, বর্তমান সরকারের সুদক্ষ নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ আগামী ২০২৬ সাল স্বল্পন্নোত দেশ হতে উন্নত দেশে পরিণত হবে। তিনি জানানন, বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু গড় আয় প্রায় ২ হাজার ৬৪ মার্কিন ডলার এবং আশা প্রকাশ করেন, সামনের দিনগুলোতে তা আরো বৃদ্ধি পাবে, যার ফলে দেশের মানুষের মাঝে নিরাপদ যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ব্যক্তিগত গাড়ীর পাশাপাশি আধুনিক সুবিধা সম্বলিত যানবাহন ব্যবহারের প্রবণতা বাড়বে, যেটি অটোমোবাইল খাতের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। তিনি জানান, এখাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য একটি সহায়ক নীতিমালার খসড়া প্রস্তুুতের কাজ করছে শিল্প মন্ত্রণালয়, যেটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে চুড়ান্ত করা হবে। পাশাপাশি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল সমূহে এখাতের যন্ত্রাংশ উৎপাদনে শিল্প-কারখানা স্থাপনে এগিয়ে আসার জন্য দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তাদের প্রতি আহবান জানান শিল্পমন্ত্রী। অটোমোবাইল খাতের সার্বিক উন্নয়নে গবেষণা কার্যক্রম একান্ত অপরিহার্য উল্লেখ করে বলেন, এ লক্ষ্যে শিল্প ও শিক্ষা খাতের সমন্বয় খুবই জরুরী।

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নায়োকি বলেন, অনেক দেশের শিল্পায়নে অটোমোবাইল খাত গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রেখেছে, বিশেষ করে জাপানে এখাত দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে অটোমোবাইল শিল্প উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা পালন করছে এবং বাংলাদেশের সেই উদাহরণ অনুসরণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এলক্ষ্যে একটি সমন্বিত নীতিমালা অপরিহার্য বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে সরকারী ও বেসরকারীখাত একযোগে কাজ করার আহবান জানান। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের অটোমোবইল খাতের বিকাশকে ত্বরান্তিত করতে হালকা প্রকৌশল শিল্পকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি উল্লেখ করেন, জাপানের গাড়ী নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মিতসুবিশি বাংলাদেশে ‘সিকেডি প্ল্যান্ট’ স্থাপনের আগ্রহ দেখিয়েছে এবং এ বিষয়ক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রক্রিয়া চলমান আছে। তিনি অটোমোবাইল খাতের উন্নয়নে স্থানীয় হালকা প্রকৌশল শিল্পের বিকাশ একান্ত অপরিহার্য বলে মত প্রকাশ করেন।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, আমাদের অটোমোবাইল শিল্পে মূলত আমদানি নির্ভর রিকন্ডিশন গাড়ীর প্রধানই বেশি, তবে জাপান, চীন ও ভারত থেকে কিছু নতুন গাড়ীও আমদানি করা হয়, যার সংখ্যা তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। ডিসিসিআই সভাপতি জানান, কোভিড পূর্ববর্তী সময়ে দেশের এ শিল্পখাত প্রতিবছর গড়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেলেও, বিআরটিএ তথ্য মতে ২০২০ সালে বাংলাদেশে মটর ভিহাইক্যালের নিবন্ধন কমেছে প্রায় ২৪ শতাংশ। তিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদী নীতিমালায় অভাব, সহায়ক শুল্ক কাঠামো না থাকা, স্থানীয়ভাবে পর্যাপ্ত কাঁচামালের যোগান না থাকা, দক্ষ মানবসম্পদ ও বেকওয়ার্ড লিংকেজ খাতের অনুপস্থিতির কারণে আমাদের অটোমোবাইল শিল্পে কাঙ্খিত প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হচ্ছে না। তিনি উল্লেখ করেন, এখাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য শিল্পমন্ত্রণালয় ১০ বছর মেয়াদী ‘বাংলাদেশ অটোমোবাইল সেক্টর রোডম্যাপ ২০২১-২২’ এবং ‘অটোমোবাইল-ম্যানুফেকচারিং ডেভেলপমেন্ট পলিসি’-এর খসড়া প্রস্তুুত করেছে, যা দ্রুততম সময়ের মধ্যে চড়ান্তকরণ করা একান্ত অপরিহার্য। পাশাপাশি গাড়ী নির্মাণের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ তৈরিতে স্থানীয় শিল্পের বিকাশের জন্য যৌথ বিনিয়োগ উৎসাহিতকরণ, কমপক্ষে ৫-১০ বছর মেয়াদী সহায়ক শুল্ক নীতিমালা প্রদান, প্রবাসী বাংলাদেশীদের এখাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য ৫ বছরের কর অব্যাহতি প্রদান এবং এখাতের গবেষণা কার্যক্রমকে উৎসাহিত ও প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিতকল্পে ‘জাতীয় অটোমোবাইল কাউন্সিল’ এবং দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে ‘জাতীয় অটোমোবাইল স্কিলস ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল’ স্থাপনের প্রস্তাব করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন