সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিরোধী দল কিছু কিছু ব্যাপারে অন্ধ সমালোচনা করছে। এর জবাব আমাদের দিতে হয়। এসব অপপ্রচার ও গুজবের ব্যাপারে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দিবে হবে। সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিরোধী দল যা খুশি তা বলছেন। অথচ যারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বিরোধী দল তাদের ব্যাপারে কিছু বলছে না। লন্ডনে বসেও দেশে বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।
গতকাল সড়ক অধিদফতর ও বরিশাল সড়ক জোনের প্রকৌশলীদের সাথে এক ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য প্রদানকালে মন্ত্রী বর্ষার আগে দক্ষিণাঞ্চলের সব সড়ক ও মহাসড়কে যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। আসন্ন ঈদের সময়ও সড়ক পরিবহনে যাতে কোন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি না হয় তা নিশ্চিতের নির্দেশ দেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বর্ষার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। সারা বছর হাত পা গুটিয়ে বসে থেকে বর্ষার সময় তড়িঘড়ি করে মেরামত কাজ করলে তা টেকসই হয় না। তিনি যখন যেটা প্রয়োজন সেটা করার ওপরও গুরুত্বারোপ করে রাস্তার গুনগত মান বজায় রাখারও নির্দেশ দেন। অনেক কনট্রাক্টর মাসের পর মাস কাজ করে না। তাদের ওয়ার্ক অর্ডার বাতিলসহ প্রয়োজনে কালো তালিকাভুক্ত করার কথাও বলেন মন্ত্রী। তিনি ফরিদপুর-কুয়াকাটা মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন বিলম্বে হতাশা ব্যক্ত করে দ্রæত পদক্ষপ গ্রহণেরও নির্দেশনা দেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেক বিলম্বে হলেও পায়রা সেতুর কাজ জুনে শেষ হচ্ছে। জুলাই মাসে তা যানবাহন চলাচলের জন্য উদ্বোধন করা হবে। বেকুঠিয়া সেতুর কাজ ৭২% শেষ হয়েছে। আগামী বছর তা সম্পন্ন হবে। এসব সেতু দক্ষিণাঞ্চলের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার উন্নয়ন ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে মাইলফলক বলে উল্লেখ করেন সড়ক পরিবহন মন্ত্রী। বরিশাল-ভোলা-ল²ীপুর, বরিশাল-ঝালাকাঠি-খুলনা, বরিশাল-কুয়াকাটা, বরিশাল-পয়সারহাট-কোটালীাড়া-গোপালগঞ্জ-খুলনা মহাসড়ক উন্নয়নের ব্যাপারে প্রকৌশলীদের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষন করেন।

মন্ত্রী বিআরটিসি’র সব বাসসহ মূল্যবান যানবাহন যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে যথাযথ দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন। তিনি বিআরটিএ’র কর্মকর্তাদের সঠিক কাজ করারও নির্দেশ প্রদান করে দলাল চক্র থেকে মুক্ত করারও নির্দেশ দেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা কবে শেষ হবে জানি না। আমাদের হয়ত করোনার সাথেই বসবাস করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে উল্লেখ করে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের তাগিদ দেন মন্ত্রী। তিনি লকডাউন শিথিল হলে গণপরিবহনে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহনের মানুসিক প্রস্তুতি গ্রহনেরও তাগিদ দেন। অর্ধেক যাত্রী বহন করলে যে ভাড়া তার অতিরিক্ত যাত্রী বহনে বাড়তি ভাড়া নিলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
বরিশাল সড়ক ভবন থেকে এ ভিডিও কনফারেন্সে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু হেনা তারিক ইকবাল বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের ৩টি জাতীয় মহাসড়ক, ৫টি আঞ্চলিক মহাসড়ক ও ৬৪টি জেলা মহাসড়কের অবস্থা এখন অনেক ভালো। ১ হাজার ৬২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এসব মহাসড়কের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাযথ বাস্তবায়ন চলছে। এসব মহাসড়কে যে ২০টি ফেরি পয়েন্ট রয়েছে সেখানের ফেরি ঘাটের পন্টুন, গ্যাংওয়ে ও ফেরিগুলো যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে যানবাহন পারাপার নির্বিঘœ রাখার ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও জনান তিনি।

অনুষ্ঠানে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মিন্টু রঞ্জন দেবনাথ ও বরিশাল সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমনও অংশ নেন। এছাড়া ঢাকা থেকে এ কনফারেন্সে সড়ক ও সেতু পরিবহন সচিব এবং সড়ক অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীও বক্তব্য রাখেন।