কেউ বলছেন ইতোমধ্যেই দেশ ছেড়েছেন। কেউ বলছেনÑ দেশের ভেতরেই আত্মগোপন করে আছেন। দু’ধরনের গুঞ্জনের মধ্যে গত ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টে আগাম জামিন আবেদন করেন কলেজ ছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার মামলায় এজাহারভুক্ত একমাত্র আসামি বসুন্ধরা গ্রæপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর। কিন্তু করোনাকালে আগাম জামিনের শুনানি গ্রহণের এখতিয়ার না থাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার তার জামিন আবেদনের শুনানি হয়নি। এখন তাই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে-তাহলে আনভীর এখন কোথায়? নিজ বাসাতেই আছেন? নাকি কারো আশ্রয়-প্রশ্রয়ে নিরাপদেই রয়েছেন। তার অবস্থান এবং অবস্থা জানতে ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের কাছে আবেদন দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট বারের আইনজীবী এসএম জুলফিকার আলী জুনু।
গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি এ আবেদন দেন। আবেদনে তিনি বলেন, স¤প্রতি দেশের আলোচিত বিষয় হচ্ছে, গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে মুনিয়া নামের একটি মেয়ের আত্মহত্যার মামলা। যেই মামলায় আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী হিসেবে দেশের স্বনামধন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে আসামি করা হয়েছে। কিন্তু জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে, মামলা দায়েরের ৩ দিন অতিবাহিত হলেও কেন এই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি সায়েম সোবাহান আনভীরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না? নাকি সায়েম সোবহান আনভীর দেশত্যাগ করেছেন? দেশের অভ্যন্তরে থাকলে কেন পুলিশ কর্তৃক উন্নত তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামি গ্রেফতার করা হচ্ছে না? জনমনে এও প্রশ্ন রয়েছে যে, দেশের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালী বলে পুলিশ গ্রেফতারে অনিহা প্রকাশ করছে। যা দেশের সাধারণ মানুষের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও ন্যায় বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এক অশনি সংকেত।
আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশ একটি পেশাদার সুশৃঙ্খল বাহিনী। এই বাহিনীর প্রতি দেশের সাধারণ মানুষ ও আমাদের আস্থা রয়েছে। পুলিশ কমিশনার আপনার কাছে আকুল আবেদন, আত্মহত্যার প্ররোচনার আসামি বসুন্ধরা গ্রæপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীর দেশে আছে নাকি বিদেশে পালিয়ে গেছেন এর একটি সুস্পষ্ট বক্তব্য দেশ ও জাতির কাছে জানান। দেশে থাকলে তাকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না এবং উন্নত তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামি গ্রেফতার না করা কেন পুলিশের দায়িত্ব পালনে নিষ্ক্রিয়তা হিসেবে গণ্য হবে না? তা আপনাদের অবস্থান ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে জাতিকে মিডিয়ার মাধ্যমে জানানোর অনুরোধ জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রির সন্ধ্যায় গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কের ১৯ নম্বর বাসার একটি ফ্ল্যাট থেকে মোসাররাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়া বাদী হয়ে বসুন্ধরা গ্রæপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন।
এজাহারে বলা হয়, সায়েম সোবহান আনভীরের সঙ্গে প্রেম ছিল মুনিয়ার। প্রতি মাসে এক লাখ টাকা ভাড়ার বিনিময়ে সায়েম সোবহান মুনিয়াকে ওই ফ্ল্যাটে রেখেছিলেন। আনভীর নিয়মিত ওই বাসায় যাতায়াত করতেন। তারা স্বামী-স্ত্রীর মতো করে বসবাস করতেন। মুনিয়ার বোন অভিযোগ করেছেন, তার বোনকে বিয়ের কথা বলে ওই ফ্ল্যাটে রেখেছিল। একটি ছবি ফেসবুকে দেয়াকে কেন্দ্র করে সায়েম সোবহান তার বোনের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। তাদের মনে হচ্ছে, মুনিয়া আত্মহত্যা করেনি। তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন