রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতেই সরকার লকডাউন দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আজকে পরিবহন শ্রমিকদের জন্য কোন ব্যবস্থা করা হয়নি, তারা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হচ্ছে। এই সরকার খেটে খাওয়া মানুষ, দিন আনে দিন খায় যারা কিংবা শ্রমিকদের জন্য কোন ব্যবস্থা না করেই লকডাউন দিয়েছে। লকডাউনের নামে ক্র্যাকডাউন করে তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করছে। তারা (সরকার) বিভিন্ন সংগঠন, ইসলামিক সংগঠন, ছাত্র সংগঠনের ওপর আক্রমণ করে তাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে, যারা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদেরকে গ্রেপ্তার করছে। আজকে সমস্ত জাতি জিম্মি হয়ে গেছে। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে শ্রমিক ও তরুন সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সরকার লকডাউন দিয়েছে, অথচ কোথাও কোনো লকডাউন নেই। গণপরিবহন চালু করলো আবার বলা হলো আন্তঃজেলা পরিবহন হবে না, শুধুমাত্র জেলার মধ্যে থাকতে হবে। এগুলো থেকে বুঝা যায় রাষ্ট্র পরিচালনায় তারা কতটা দায়িত্বহীন, কতটা অযোগ্য। শুধুমাত্র নিজেদের দুর্নীতির জন্য আজকে পাহাড় গড়ে তুলেছে আওয়ামী লীগের লোকেরা, আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ঠ আমলারা।
খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তার শ্বাস কষ্ট হওয়ায় সিসিইউতে নেওয়া হয়েছিলো এবং তিনি এখনো সিসিইউতে আছেন, অক্সিজেন তাকে দেয়া হচ্ছে। এখন উনি স্থিতিশীল আছেন। তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডাক্তাররা অত্যন্ত আশাবাদী তিনি দ্রæত সুস্থ হয়ে উঠবেন। আমরা দোয়া চাইছি মহান করুনাময় আল্লাহতালার কাছে, সমগ্র জাতি আজকে প্রার্থনা করছেন- যে এদেশের স্বাধীনতার শেষ আশ্রয়স্থল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যেন অতিদ্রæত সুস্থ হয়ে উঠেন।
করোনার মধ্যে শ্রমিকরা সবচেয়ে কষ্টে আছে মন্তব্য করে বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, করোনার মধ্যে আজকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন আমাদের শ্রমিক ভাই-বোনেরা। করোনার যে প্রণোদনা সরকার ঘোষণা করেছে সেই প্রণোদনার মধ্যে কিন্তু শ্রমিকদের জন্য কোনো বরাদ্ধ সেই ভাবে রাখা হয়নি, সুনির্দিষ্টভাবে কোনো বরাদ্ধ রাখা হয়নি। যা কিছু প্রণোদনা দেয়া হয়েছে মালিকশ্রেনীকে দেয়া হয়েছে এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিা এবং আওয়ামী লীগের যারা দোসর তারা নিজেরা নিয়ে চলে যাচ্ছে। আমরা বার বার বলেছি, তুলে ধরেছি যে, করোনাকালে যাদের বেশি প্রয়োজন যারা দিন আনে দিন খায়, যারা অপ্রাতিষ্ঠানিক সেক্টারে কাজ করে, যারা ছোট-ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ করে তাদেরকে সবেচেয়ে আগে সহযোগিতা করতে হবে। আমরা বলেছিলাম কমপক্ষে তিন মাসের এককালীন ১৫ হাজার টাকা অনুদান দিতে হবে। কিন্তু সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি।
শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ শ্রম সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, ফিরোজ উজ জামান, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম, কেন্দ্রীয় নেতা সালাহউদ্দিন সরকার, জাহাঙ্গীর আলম, কোহিনুর মাহমুদ, কাজী আমীর খসরু, খন্দকার জুলফিকার মতিন, সুমন ভুঁইয়া, মাহবুবুল আলম বাদল প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন