বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সীমিত হচ্ছে বাংলালায়ন ও কিউবির কার্যক্রম

প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩২ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

ফারুক হোসাইন : বকেয়া পরিশোধ না করা পর্যন্ত প্রতি ১৫ দিনে সীমিত হতে থাকবে কিউবি ও বাংলালায়নের অপারেশনাল কার্যক্রম। ব্রডব্যান্ড ওয়ারলেস অ্যাক্সেস (বিডব্লিউএ) অপারেটর ও ওয়াইম্যাক্স লাইসেন্সধারী এই দুই প্রতিষ্ঠানকে বকেয়া পরিশোধে দুই সপ্তাহের সময় বেঁধে দিয়েছে সরকার। এই সময়ে বকেয়া পরিশোধে ব্যর্থতার জন্য ব্যান্ডউইথ ব্যবহার সীমিত করতে গিয়ে অপারেশনাল কার্যক্রম শূন্যে নেমে গেলে প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল ও মামলা করা হবে বলে জানিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। কমিশনের সর্বশেষ সভায় (১৯৯তম) দীর্ঘদিন ধরে বাংলালায়নের রাজস্ব বকেয়া এবং আদায়ের বিষয়ে আলোচনা শেষে এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারের রেভিনিউ শেয়ারিং ও স্পেকট্রাম চার্জ বাবদ বাংলালায়নের ৬২ কোটি ৬২ লাখ এবং কিউবির ১৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বকেয়া পরিশোধে দুই সপ্তাহের সময় দেয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে বকেয়া পরিশোধ না করলে নির্ধারিত দুই সপ্তাহ শেষ হওয়ার পরের দিনই প্রতিষ্ঠান দুটির (কিউবি ও বাংলালায়ন) ১০ শতাংশ অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ (সীমিত) করে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বিটিআরসি। বকেয়া পরিশোধ না করা পর্যন্ত প্রতি ১৫ দিন অন্তর অন্তর এই দুই প্রতিষ্ঠানের ১০ শতাংশ হারে অপারেশনাল কার্যক্রম সীমিত করা এবং তা শূন্যের কোঠায় নেমে এলে তাদের লাইসেন্স বাতিল ও মামলা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কমিশন।বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, ব্রডব্যান্ড ওয়ারলেস অ্যাক্সেস (বিডব্লিউএ) অপারেটর বাংলালায়ন কমিউনিকেশন্সের কাছে গত জুন পর্যন্ত সরকারের রেভিনিউ শেয়ারিং (রাজস্ব ভাগাভাগি) ও স্পেকট্রাম চার্জ (তরঙ্গ ফি) বাবদ ৬২ কোটি ৬২ লাখ টাকা বকেয়া পাওনা রয়েছে। এই বকেয়া পরিশোধের জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে একাধিকবার তাগাদাপত্র প্রদান করার পরও প্রতিষ্ঠানটি বকেয়া পরিশোধ করছে না। একইভাবে ওয়াইম্যাক্স সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কিউবির (অগার ওয়ারলেস ব্রডব্যান্ড বাংলাদেশ) কাছে গত জুন পর্যন্ত সরকারের রাজস্ব ভাগাভাগি ও তরঙ্গ ফি বাবদ ১৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বকেয়া পাওনা রয়েছে। কমিশন এই বকেয়া পরিশোধের জন্য কিউবিকে একাধিকবার তাগাদাপত্র ও চিঠি দিয়েছে। কিন্তু কোনো চিঠির প্রেক্ষিতেই প্রতিষ্ঠানটি তাদের বকেয়া পরিশোধ করেনি। বরং দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া পরিশোধ না করায় বকেয়ার পরিমাণ বাংলালায়নের মতো কিউবিরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এর প্রেক্ষিতে কমিশনের ১৯৬তম সভায় কিউবি ও বাংলালায়নকে বকেয়া পরিশোধের জন্য সাত দিনের সময় দিয়ে চিঠি প্রদান করে। অন্যথায় বিটিআরসিতে জমা করা পারফরমেন্স ব্যাংক গ্যারান্টি (পিবিজি) থেকে বকেয়া রাজস্ব সমন্বয় করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। একইসাথে প্রতিষ্ঠান দুটির লাইসেন্স ও তরঙ্গ বরাদ্দ বাতিল এবং গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পূর্বেই তা গ্রাহককে অবহিত করার ব্যাপারে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
এর আগে বাংলালায়ন ও কিউবি লাইসেন্সে উল্লেখিত নির্ধারিত সময় সীমার ভিতরে রোলআউট টার্গেট পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য ১৬৪তম, ১৬৯তম, ১৭২তম ও ১৭৪তম কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হলেও পিবিজি কর্তনের বিষয়ে কমিশন কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। ইতোমধ্যে কিউবি ও বাংলালায়নের জমা করা পিবিজি’র মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটিকে তাদের পিবিজি’র মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে একাধিকবার নির্দেশনা প্রদান করা হলেও এখন পর্যন্ত তা করেনি। ফলে পিবিজি’র মেয়াদ না থাকায় এই মুহূর্তে নগদায়ন করারও সম্ভব হবেনা বলে বিটিআরসির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
কমিশন সভায় বলা হয়, ইতোপূর্বে ইস্যু করা লাইসেন্সপ্রাপ্ত যেসকল প্রতিষ্ঠান বিটিআরসির বকেয়া পরিশোধ না করে অপারেশনাল কার্যক্রম চালিয়ে গেছে তাদের লাইসেন্স বাতিলের কার্যক্রম গ্রহণের পূর্বে কমিশনের ইঅ্যান্ডও (ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন) বিভাগ প্রয়োজন অনুযায়ী অপারেশনাল কার্যক্রম সীমিত করেছে। বাংলালায়ন ও কিউবির ক্ষেত্রেও তাদের লাইসেন্স বাতিলের পূর্বে অপারেশনাল কার্যক্রম সীমিত করা উচিত এবং এরপরও যদি বকেয়া অর্থ জমা না করে সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান দুটির লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন