কর্পোরেট ডেস্ক :আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের বর্তমান দাম বজায় থাকলে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানিগুলোর (এনওসি) তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান বিনিয়োগের ওপর কর্তৃত্ব অব্যাহত থাকবে, যা বাজারে একটি নতুন গতিশীলতা তৈরি করবে বলে মন্তব্য করেছেন ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) প্রধান। আইইএ জানিয়েছে, এনওসিগুলো— যার মধ্যে রাষ্ট্র পরিচালিত সৌদি আরামকো, চীনের সিএনপিসি ও মেক্সিকোর পেমেক্সের মতো বিশালায়তন কোম্পানি রয়েছে— তেল-গ্যাস অনুসন্ধান প্রকল্পে বিনিয়োগ বাড়িয়ে ৪৪ শতাংশ করেছে, যা ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিগুলো (আইওসি), যার মধ্যে অ্যাংলো-ডাচ শেল, যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি জায়ান্ট এক্সনমবিল ও ফ্রান্সের টোটালের মতো কোম্পানি রয়েছে, দুর্বল দামের প্রভাবে মুনাফা সঙ্কুচিত হয়ে যাওয়ায় বিনিয়োগের আকার কমাতে বাধ্য হচ্ছে। এনওসিগুলো বিনিয়োগের আকার ছোট করে এনেছে, তবে স্বাধীন কোম্পানিগুলোর তুলনায় অনেক কম। আইইএর নির্বাহী পরিচালক ফাতিহ বিরোল আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম রয়টার্সকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এনওসিগুলো অসংখ্য স্বল্প উত্তোলন ব্যয়ের ক‚প মালিক। আমি বলব যে, তাদের অংশ না বাড়লেও অন্তত কমবে না। এদিকে আইইএর পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে ৩০ হাজার কোটি ডলারের বেশি তেল-গ্যাস অনুসন্ধান বিনিয়োগ হ্রাস পেয়েছে, যা জ্বালানি ইতিহাসে নজিরবিহীন। সর্ববৃহৎ আকারে ব্যয় সংকোচন ঘটিয়েছে অ্যাপাচি, মারফি অয়েল, ডেভন এনার্জি ও ম্যারাথনের মতো উত্তর আমেরিকান স্বাধীন কোম্পানিগুলো। এসব কোম্পানি ২০১৪ থেকে ২০১৬ সালে মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ ব্যয় সংকোচন করেছে। অন্যদিকে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ও কাতারের এনওসিগুলো সরকারি বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে নতুন বিনিয়োগের জন্য মূলধন বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। ফলস্বরূপ এ জাতীয় তেল কোম্পানিগুলো কম দামের ফলে সৃষ্ট তেল রাজস্বের স্বল্পতা পূরণ করতে পেরেছে। তেল-গ্যাস অনুসন্ধান খাতে এনওসিগুলোর বিনিয়োগের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে জ্বালানি বাজার এক নতুন গতিশীলতা লাভ করতে পারে, যেখানে উৎপাদন সিদ্ধান্ত বাজার মূলনীতি দ্বারা কম প্রভাবিত হবে। বিরোল বলেন, কিছু এনওসি রয়েছে যেগুলো সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় অন্যান্য কিছু দিক বিবেচনায় রাখে, যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি বা রাজনৈতিক ইস্যুসহ বাজার রক্ষার মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন