শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিতর্কিত ব্যাংক কর্মকর্তার নাম সুপারিশ

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর পদে নিয়োগ

প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বিতর্কিত ব্যাংক কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর (ডিজি) পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে সরকার গঠিত সার্চ কমিটি। গত ৭ সেপ্টেম্বর ডিজি পদে নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠানো তালিকায় যে পাঁচজনের নাম সুপারিশ করেছে তাতে অনিয়মের অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া বেসরকারি খাতের দি সিটি ব্যাংক লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নামও রয়েছে। যে কর্মকর্তাকে এর আগে আমানতকারীর অর্থ ঝুঁকিগ্রস্ত করায় যথাযথ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্ট্রিগ্রিটি এন্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্ট গত বছরের ২০ ডিসেম্বর ব্যাংকটি পরিদর্শন করে এ বছরের ২৪ জানুয়ারি সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে এই নির্দেশ দিয়েছিলো। অথচ ৮ মাসের মাথায় সেই কর্মকর্তাকেই ডেপুটি গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এমন তথ্য জানা গেছে ডেপুটি গভর্নর নিয়োগে গঠিত সার্চ কমিটির পাঠানো নামের তালিকায়।
সূত্র মতে, চলতি বছরের শুরুর দিকে বেসরকারি খাতের দি সিটি ব্যাংক লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে আমানতকারীর অর্থ ঝুঁকিগ্রস্ত করায় যথাযথ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে সিটি ব্যাংক ব্যবস্থা নেয়ার আগেই তিনি পদত্যাগ করেন। পদত্যাগ পত্রটি গ্রহণ করলেও তার কর্মকা-ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট নয় বলে লিখিতভাবে জানিয়ে দেয়া হয় বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে। কিন্তু গত ৭ সেপ্টেম্বর ডেপুটি গভর্নর (ডিজি) পদে নিয়োগের জন্য সরকার গঠিত সার্চ কমিটি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠানো তালিকায় যে পাঁচজনের নাম সুপারিশ করে তাতে বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নামও রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গঠিত সার্চ কমিটি ডেপুটি গর্ভনর নিয়োগের তালিকা করেছে। তারা কোনো প্রার্থীর অপরাধের বিষয়ে জানে না। ওই তালিকায় যদি অভিযুক্ত কেউ থাকে তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত বিষয়টি অর্থমন্ত্রণালয়কে জানানো।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র মতে, গত ৫ সেপ্টেম্বর ডেপুটি গভর্নর নিয়োগের জন্য গঠিত সার্চ কমিটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সিটি ব্যাংকের বিতর্কিত সাবেক ডিএমডি বদরুদ্দোজা চৌধুরীরও সাক্ষাৎকার নেয়। ওইদিন মোট ১৬ জন প্রার্থীর মৌখিক সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। তাদের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নয়জন বর্তমান নির্বাহী পরিচালক, তিনজন সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও চারজন সরকারি-বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই রাজধানীর উত্তরায় নিজস্ব জমিতে ১৫ তলাবিশিষ্ট বহুতল ভবন নির্মাণ শুরু করেছিল দি সিটি ব্যাংক। যে প্রকল্পের প্রধান ছিলেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বদরুদ্দোজা চৌধুরী প্রকল্প গ্রহণে ব্যাংকের প্রকিউরমেন্ট পলিসির নিয়ম-নীতির লঙ্ঘনের বিষয়টি পরিচালনা পরিষদকে অবহিত করেননি। সিটি করপোরেশনের অনুমতি ছাড়াই বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটিয়ে কাজ করেছেন। আর তাই ভবন নির্মাণে অনিয়মের দায়ভার তিনি এড়াতে পারেন না। দায়িত্ব পালনের সময় অনিয়মের মাধ্যমে আমানতকারীদের অর্থ ঝুঁকিগ্রস্ত করার দায়ভার বদরুদ্দোজা চৌধুরীর উপর বর্তায়। এ ঘটনায় ১০ লাখ টাকা জরিমানাও দিতে হয়েছে সিটি ব্যাংককে।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশে ব্যবস্থা নেয়ার আগেই পদত্যাগ করেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী। অনিয়ম করেও দীর্ঘদিন পর তার ব্যাংকিং পেশায় ফেরা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ব্যাংক পাড়ায়। অনেকেই বলছেন, একটি ব্যাংকে অনিয়মের অভিযোগে তার চাকরি গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে তিনি কি করবেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সার্চ কমিটির ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, আমাদের দায়িত্ব আমরা পালন করেছি। কারো বিরুদ্ধে কোনো অনিয়ম থাকলে তা মন্ত্রণালয় দেখবে। ড. জায়েদ বখত বলেন, ডেপুটি গভর্নর নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি আবেদন চেয়েছে। কমিটি তাদের মধ্যে থেকে যোগ্যদের ভাইভার জন্য ডেকেছে। পরবর্তীতে সে অনুযায়ী একটি তালিকা মন্ত্রণালয়কে পাঠানো হয়েছে। আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি। এখানে অন্য কোনো তথ্য আমরা দেখিনি। নিয়মনীতির লঙ্ঘন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশের বিষয়ে জানার জন্য বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Nannu chowhan ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ৬:০৫ এএম says : 0
Thats the way placing,bd financial institution at high risk.
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন