স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর মতিঝিলে মুখোশধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে রিজভী হাসান ওরফে বাবু (৩৪) নামে এক যুবলীগ কর্মী নিহত হয়েছেন। একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন অপর যুবলীগ কর্মী আহসানুল হক ওরফে ইমন (৩০)।
অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কোন্দল কিংবা চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে দলীয় প্রতিপক্ষের হামলায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে ধারণা করছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িতরা ধরা পড়েনি। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নিহত রিজভী হাসান বাবুর বন্ধু রায়হান জানান, যুবলীগ কর্মী বাবু ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। শুক্রবার রাত ১১টার দিকে মতিঝিলের এজিবি কলোনি এলাকায় যুবলীগের ১৯ নম্বর ওয়ার্ড ক্লাবের সামনে বাবু ও ইমনসহ কয়েকজন মিলে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় মুখোশধারী চার-পাঁচজন সন্ত্রাসী খুব কাছ থেকে তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে। এতে বাবু ও ইমন গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। গুলির শব্দ ও আহতদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ দু’জনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে রাত ১২টায় বাবুকে স্কয়ার হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে নেয়া হয় এ্যাপোলো হাসপাতালে। গতকাল ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এ্যাপোলো হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাবু। মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি মারুফ রেজা সাগর গণমাধ্যমকে জানান, গুলিবিদ্ধ দু’জনই তার শাখার সদস্য। প্রতিপক্ষ যুবলীগ কর্মীর কয়েকজন এই হামলা চালিয়েছে। গতকাল দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল মর্গে বাবুর লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নিহত বাবুর মাথা, বাম পাঁজরে, বুকে ও পিঠে গুলি লেগেছে। নিহতের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার আলেকজান্ডার থানাধীন চরআফজাল এলাকায়। বাবার নাম আবুল কালাম হাসান। দুই ভাই বোনের মধ্যে বাবু ছিলেন বড়। তিনি দুই সন্তানের জনক। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তিনি সবুজবাগ থানাধীন ওয়াপদা রোডের ১০/৩/৩ পূর্ব বাসাবোর ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। ময়নাতদন্ত শেষে বাসাবো এলাকায় নামাজে জানাজা শেষে তার লাশ আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে এ হত্যাকা- প্রসঙ্গে পুলিশ জানায়, নিহত বাবু ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। এতে তার প্রতিপক্ষ ক্ষিপ্ত থাকতে পারেন। এছাড়া রাজনৈতিক ও অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং এজিবি কলোনি এলাকার চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করেও এ ঘটনা ঘটতে পারে। এর আগে নিহত মিল্কি হত্যাকা-কে ঘিরেও এ ঘটনা ঘটতে পারে। পুলিশ সবগুলো ঘটনা খতিয়ে দেখছে। এদিকে গুলিবিদ্ধ যুবলীগ কর্মী আহসানুল হক ইমন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি ডান পাঁজরে ও পেটে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এ সময় পর্যন্ত কোনো মামলাও হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন