ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর অন্তত ৮০ জন সেনা নিহত হয়েছে বলে দ্য সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান মনিটরিং গ্রুপ জানিয়েছে। অপরদিকে রাশিয়া বলেছে, মার্কিন বিমান হামলায় সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর ৬২ জন নিহত এবং বহুসংখ্যক সদস্য আহত হয়েছেন। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার মাধ্যমে রাশিয়া সরকারের কাছে এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশের কথা জানিয়েছে। ওয়াশিংটন থেকে ওবামা প্রশাসনের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিমান হামলায় সিরীয় সেনা নিহতের ঘটনাটি অনাকাক্সিক্ষত। রাশিয়া অভিযোগ করে বলে যে, আইএসের বিরুদ্ধে হামলা চালাতে গিয়ে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা চালায় মার্কিন বিমান বাহিনীর জঙ্গি বিমান। এজাতীয় অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় আইএস জিহাদিদের আরো সুবিধা করে দিয়েছে বলে দাবি করেছে রাশিয়া। গত শনিবার পূর্ব সিরিয়ার ডের আল-জউর এলাকায় আইএস অবস্থানের ওপর মার্কিন জঙ্গি বিমান হামলা চালায়। কিন্তু সেখানে যে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী অবস্থান করছে, তা তাদের জানা ছিল না। এর আগে রাশিয়া অভিযোগ করেছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি না মেনে চলায় জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো আরো সংগঠিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে এবং তারা পাল্টা হামলা চালাতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যৌথবাহিনী ধারণা করেছিল, তারা ইসলামিক স্টেট (আইএস) জিহাদিদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। পরে রাশিয়ার কর্মকর্তারা বিষয়টি তাদের জানালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিমান হামলা তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে। কিন্তু ততক্ষণে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর অন্তত ৬২ জন সৈন্য নিহত হন।
অপর খবরে বলা হয়, মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় সিরীয় সরকারি সেনা নিহতের ঘটনায় জরুরি বৈঠকে বসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে এ বৈঠকে বসে নিরাপত্তা পরিষদ। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ বিমান হামলার ঘটনায় সিরিয়ায় অস্ত্রবিরতি চুক্তি ভেঙে পড়তে পারে। মার্কিন সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সিরিয়ার সরকারি বাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে, রাশিয়ার এ দাবির পর মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অবস্থানে হামলা বন্ধ করেছে। এদিকে রাশিয়ার দাবি মোতাবেক গত শনিবার রাতেই নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি অনুষ্ঠিত হয়। রাশিয়ার দাবি, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার অস্ত্রবিরতি চুক্তিকে নস্যাৎ করছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূত সামান্তা পাওয়ার রাশিয়ার এ উদ্যোগকে সমালোচনা করেছেন। বৈঠকের পূর্বে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়ার উচিত এরকম ফালতু কিছু না করে মূল বিষয়ে মনোযোগ দেয়া। যে আস্থার ভিত্তিতে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে তাতে নজর দেয়া। তিনি আরো বলেন, জাতিসংঘ বিমান হামলার ঘটনাটি তদন্ত করছে। যদি সিরীয় সেনাদের লক্ষ্য করে হামলা হয়ে থাকে তা অনাকাক্সিক্ষত ছিল। নিহতের ঘটনায় অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র দুঃখ প্রকাশ করছে। বিমান হামলায় সিরীয় সেনা নিহতের ঘটনায় সিরিয়ার অস্ত্রবিরতি চুক্তি ভেস্তে যেতে পারে কিনা জানতে চাইলে জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ান দূত ভিটালি চারকিন বলেন, এটা অনেক বড় প্রশ্ন। আমি দেখতে খুব আগ্রহী ওয়াশিংটন এ ঘটনায় কী প্রতিক্রিয়া দেখায়। কূটনীতিক সামান্তা পাওয়ার আজ যা করেছেন তা যদি যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার ইঙ্গিত হয় তাহলে আমরা অনেক বড় সমস্যায় আছি। রয়টার্স, বিবিসি, এএফপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন