শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

মানবতাবিরোধী অপরাধ শুনানির অপেক্ষায় ১৪ আপিল

প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মালেক মল্লিক : মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার দায়ে আরো ১২ মামলায় ১৪টি আপিল নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে। ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২৬টি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এদের মধ্যে চূড়ান্ত বিচার প্রক্রিয়া শেষে ছয়জনের মৃত্যুদ- ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ৩১ আগস্ট জামায়াত নেতা মীর কাশেম আলীর রিভিউ শুনানি শেষে ফাঁসির দ- বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
এরপর ৪ সেপ্টেম্বর দ- কার্যকর করে সরকার। আরেক জনের আপিলের রায়ে একজনের মৃত্যুদ-র সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাভোগের আদেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিচার চলাকালে মারা গেছেন ১০ জন। পলাতক রয়েছেন ২২ জন আসামি। আর বাকি ১৯ জনের মধ্যে অধিকাংশই আপিল বিভাগে আপিল করেছেন। তাদের আপিল বর্তমানে আপিল বিভাগে বিচারাধীন। যার আপিল আগে দায়ের হয়েছে, সেটাই আগে শুনানি হওয়ার কথা বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
সূত্রে জানা যায়, আপিল বিভাগে ১২টি মামলায় ১৪ যুদ্ধাপরাধীর আপিল শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। ১৪ জন হলেনÑমৃত্যুদ-প্রাপ্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার মোবারক হোসেন, জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার, জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুস সুবহান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম, নেত্রকোনার ওবায়দুল হক তাহের, রাজাকার আতাউর রহমান ননী এবং আমৃত্যু কারাদ-প্রাপ্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাহিদুর রহমান। আমৃত্যু কারাদ-প্রাপ্ত জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি আবদুল জব্বারের সাজা চেয়ে আপলি করেছেন রাষ্ট্রপক্ষ। বিচার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে সাতজনের। এতে ফাঁসি কার্যকর হয়েছে ছয়জনের। আর আপিলের রায়ে একজনের মৃত্যুদ-ের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাভোগের আদেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, যার আপিল আগে দায়ের হয়েছে, সেটাই আগে শুনানি হওয়ার কথা।
ছয়জনের মৃত্যুদ- কার্যকর : মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ছয় নেতার ফাঁসির দ- কার্যকর করা হয়েছে। তারা হলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লা ও মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী এবং জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী ও জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর।
আপিলে সাজা কমেছে : আপিলের রায়ে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদ-ের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদ- দেন আদালত। ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ এবং খালাস চেয়ে আসামিপক্ষ পৃথক দুটি রিভিউ আবেদন দায়ের করেছে। রিভিউ আবেদন দুটি আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
বিচার চলাকালে ১০ জনের মৃত্যুবরণ : আপিলে দুইজনসহ বিচার চলাকালে মারা গেছেন ১০ যুদ্ধাপরাধী। আপিল শুনানির অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় জামায়াত সাবেক আমীর গোলাম আযম ও সাবেক মন্ত্রী বিএনপি নেতা আবদুল আলীমের মৃত্যু হয়েছে। তাদের আপিল পরে আপিল বিভাগ অকার্যকর ঘোষণা করেন। এছাড়া বিচার শেষ পর্যায়ে থাকা অবস্থায় জামায়াত নেতা একেএম ইউসুফ ও রায় অপেক্ষমাণ থাকা অবস্থায় বাগেরহাটের আব্দুল লতিফ তালুকদার মারা গেছেন। যশোরের কেশবপুরের মো. লুৎফর রহমান মোড়ল, তদন্ত শেষে কক্সবাজারের মহেশখালীর শামসুদ্দোহা ও মো. জিন্নাহ ওরফে জিন্নাত আলী, নেত্রকোনার পূর্বধলার আহাম্মদ আলী, ময়মনসিংহের মো. আমজাদ আলী এবং তদন্তাধীন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের এমদাদুল হক ওরফে টাক্কাবালী।
পলাতক ২২ জন : ট্রাইব্যুনালের রায়ে দ-প্রাপ্ত ২২ জন এখনও পলাতক রয়েছেন। পলাতকরা হলেনÑমৃত্যুদ-প্রাপ্ত জামায়াতের নেতা আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার, আলবদর নেতা মৃত্যুদ-প্রাপ্ত চৌধুরী মাইনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামান খান, বিএনপি নেতা মৃত্যুদ-প্রাপ্ত জাহিদ হোসেন ওরফে খোকন, আমৃত্যু কারাদ-প্রাপ্ত জাতীয় পার্টির নেতা ইঞ্জিনিয়ার আবদুল জব্বার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সৈয়দ মো. হাছান আলী, কিশোরগঞ্জের ক্যাপ্টেন মো. নাসির, রাজাকার কমান্ডার গাজী আবদুল মান্নান, হাফিজ উদ্দিন ও আজহারুল ইসলাম। তাদের মধ্যে আজাহারুল ইসলাম ছাড়া অন্যরা মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত জামালপুরের মো. আশরাফ হোসেন, মো. আবদুল মান্নান ও মো. আবদুল বারী এবং আমৃত্যু কারাদ-প্রাপ্ত শরীফ আহাম্মেদ ওরফে শরীফ হোসেন, মো. আবুল হাশেম ও হারুন পলাতক রয়েছেন।
সর্বশেষ গত ১০ আগস্ট ট্রাইব্যুনালের রায়ে আমৃত্যু কারাদ-প্রাপ্ত যশোরের মো. ইব্রাহিম হোসাইন, শেখ মো. মজিবুর রহমান, এমএ আজিজ সরদার, আবদুল আজিজ সরদার, কাজী ওহিদুল ইসলাম ও মো. আবদুল খালেক পলাতক রয়েছেন। পলাতক থাকায় এসব আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে আপিলও দায়ের করেননি। ট্রাইব্যুনালের রায়ে দ-প্রাপ্ত কারাবন্দি বাকি ১৯ যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে অধিকাংশই আপিল করেছেন। এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বর্তমানে ২০টি মামলার কার্যক্রম চলছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন