৬ জনকে আসামি করে পিতার মামলা
স্টাফ রিপোর্টার : এলাকার প্রভাব বিস্তার নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দলেই খুন হয়েছেন যুবলীগ কর্মী রিজভী হাসান বাবু।
প্রাথমিক তদন্ত শেষে পুলিশ এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে। এদিকে বাবু খুনের ঘটনায় তার বাবা ছয় জনের নামোল্লেখ করে মতিঝিল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ এদের কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি।
গত শুক্রবার মধ্যরাতে রাজধানীর মতিঝিল থানাধীন এজিবি কলোনির যুবলীগ ক্লাবের সামনে সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি গুলিতে আহত হন রিজভী হাসান বাবু ও তার বন্ধু আহসানুল হক ইমন। পরদিন ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বাবু। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ইমন। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
মতিঝিল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, নিহত বাবুর বাবা আবুল কালাম আজাদ বাদি হয়ে গত শনিবার রাতে মামলা করেছেন। মামলায় আসামি হিসেবে যে ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তারা হলোÑ হিরক (৩০), মিলন (৩১), সানী (৩০), আমিনুল (৩১), রাজা (৩০), আলম (৩০)। এছাড়াও অজ্ঞাত আরো চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার আসামিরা সবাই এজিবি কলোনির বাসিন্দা। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, এলাকার প্রভাব বিস্তার নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের শিকার হয়েছেন বাবু। এজাহার নামীয় আসামিদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। তাদের গ্রেফতারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাবু খুনের রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একই ওয়ার্ডের একাধিক যুবলীগ নেতার সঙ্গে রিজভী হাসান বাবুর চরম বিরোধ ছিল। দীর্ঘদিন এটি চলে এলেও তা রাজনীতিক নেতাদের হস্তক্ষেপে শান্ত ছিল। কয়েকদিন দিন আগে বাবুর লোকজন কলোনির আইডিয়াল জোনের মিল্কি স্মৃতি ক্লাবে এক যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। ওই যুবকের দেহের বিভিন্ন স্থানে ২৮টি সেলাই দেয়া হয়। কিন্তু বাবুর লোকজনের হাতে প্রতিপক্ষ গ্রুপের সদস্য ওই যুবকের জখমের পর তা প্রকাশ্যে চলে আসে।
নিহতের বাবা আবুল কালাম বলেন, তার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। মৃত্যুর আগে খুনিদের ব্যাপারে এবং তাদের নাম বাবু নিজেই বলে গেছে, যা পুলিশকে জানানো হয়েছে। তার বাবার দাবি বাবু রাজনীতির পাশাপাশি ঠিকাদারিও করত। তবে পুলিশ বলছে, বাবুর কোনো পেশা ছিল না। যুবলীগের নাম ভাঙিয়ে চলত। সারাদিন কলোনিতেই আড্ডা দিত। ১০ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি মারুফ রেজা বলেন, যুবলীগের আগামী সম্মেলনে রিজভী ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী ছিলেন। এ নিয়ে একই ওয়ার্ডের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের (মিলন) সঙ্গে রিজভীর বৈঠক হয়। সেখানে এ নিয়ে দু’জনের ঝগড়া হয়। এ থেকেও ঘটনার সূত্রপাত হতে পারে।
এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিঝিল থানার এসআই আবু তাহের ভুইয়া গত রাতে ইনকিলাবকে বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকা-। যাদের সঙ্গে বাবু আড্ডা দিত তারাই বাবুর শত্রু হয়েছে। চাঁদাবাজির ভাগ-বাটোয়ারা ও এলাকার প্রভাব বিস্তার নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বলি হয়েছেন বাবু। এজিবি কলোনিতে যেখানে এ ঘটনা ঘটেছে সেখানে বাইরের কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর সুযোগ নেই। তিনি বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এদিকে বাবু খুনের পর থেকে যুবলীগের ওই ক্লাবটিতে তালা ঝুলছে। গেটের সামনে রয়েছে পুলিশি প্রহরা। এলাকায় বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন