শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

স্কুলছাত্র আব্দুল্লাহ হত্যার প্রধান আসামি মোতাহার ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) উপজেলা সংবাদদাতা : ঢাকার কেরানীগঞ্জের রোহিতপুর ইউনিয়নের পশ্চিম মুগারচর এলাকায় স্কুলছাত্র আব্দুল্লাহ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মোতাহার হোসেন র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন ।
র‌্যাব-১০-এর পরিচালক ও অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর জানান, গতকাল (সোমবার) ভোর সাড়ে ৪টায় চিতাখোলা সাবান ফ্যাক্টরি এলাকা দিয়ে দু’টি মোটরসাইকেলযোগে মোতাহারসহ চারজন আসছিলেন। এ সময় র‌্যাব-১০-এর একটি টহল দল সন্দেহবশত তাদের থামাতে বললে তারা না থেমে উল্টো হামলা চালায়। এক পর্যায়ে র‌্যাবের পাল্টা হামলায় বেশ কিছুক্ষণ গোলাগুলি চলে। এরপর একজন মাটিতে পড়ে থাকে ও বাকিরা মোটরসাইকেল নিয়ে পালিয়ে যান। তাকে দ্রুত স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে নিহতের পকেট তল্লাশি চালিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের একটি কার্ড পাওয়া য়ায়। এই পরিচয়পত্রের সূত্রধরেই জানা যায়, নিহত ব্যক্তিটি স্কুলছাত্র আব্দুল্লাহ হত্যার প্রধান আসামী মোতাহারের। ঘটনাস্থল থেকে গুলিভর্তি ম্যাগজিনসহ একটি বিদেশী পিস্তল ও একটি রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ উপ-পরিদর্শক সালাহউদ্দিন জানান, খবর পেয়ে আমরা স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল হাসপাতালের মর্গের সামনে নিহত মোতাহারের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করি।
এদিকে মূল ঘাতক মোতাহারের মৃত্যুর সংবাদে রোহিতপুরের মুগারচর এলাকায় নেমে আসে আনন্দের বন্যা। সকাল থেকেই তারা শুরু করেন আনন্দ মিছিল মিষ্টি বিতরণ। আব্দুল্লাহর বাবা মোঃ বাদল মিয়া বলেন, র‌্যাবের সাথে বন্দুকযুদ্ধে ঘাতক মোতাহার নিহত হওয়ার খবর শুনে তার লাশ দেখে আমি খুব আনন্দিত হয়েছি। বাকি আসামীদের আমি ফাঁসি দেখতে চাই। রোহিতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ার হাজী আব্দুল আলী বলেন, বন্দুকযুদ্ধে মোতাহারের নিহতের ঘটনায় রোহিতপুরবাসী কলংকমুক্ত হলো। বাকি আসামীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আর কেউ এই ধরনের ঘটনা ঘটাতে সাহস পাবে না।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ জানুয়ারি দুপুরে মুগারচর এলাকায় বাড়ির সামনে থেকে কুয়েত প্রবাসী বাদল মিয়ার ছেলে ও পশ্চিম মুগারচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র মো. আব্দুল্লাহকে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টকা মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করা হয়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আড়াই লক্ষ টাকা অপহরণকারীদের বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ করেও অপহরণকারীদের হাত থেকে রেহাই পায়নি আব্দুল্লাহ। ২ ফেব্রুয়ারী দুপুরে প্রতিবেশী এবং চাচাতো দাদা মোতাহার হোসেনের বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষ থেকে ড্রামে ভরা অবস্থায় এসিডে ঝলসানো আব্দুল্লাহর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে আনা হয়। ইতিমধ্যে এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার অন্যতম আসামী খোরশেদ আলম ও মেহেদী হাসান আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়ায় আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।
কে এই মোতাহার
পশ্চিম মুগারচরের মৃত আসম আলীর পাঁচ ছেলের মধ্যে মোতাহার সবার ছোট। প্রায় ১১ বছর আগে আপন বোন জামাই মারফত আলীকে অপহরণ করে তার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করে। এই ঘটনায় মোতাহারের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হলে সে সউদি আরবে চলে যায়। সেখানে মায়ানমারের এক মেয়েকে বিবাহ করে । সেই ঘরে তিন সন্তান রয়েছে। সউদি আরবে থাকা অবস্থায় সে বিভিন্ন কোম্পানীতে শ্রমিক সরবরাহের কাজ করতো। এক পর্যায়ে স্ত্রীর জমানো টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার ও চারশ’ শ্রমিকের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে দেশে এসে একটি বিলাস বহুল বাড়ি নির্মাণ করে। বাড়িতে সংযুক্ত করেন সিসি ক্যামেরা । নিকটাত্মীয় ছাড়া তার বাড়িতে কাউকে ঢুকতে দিতো না ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন