বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

১৫ লাখ শ্রমিক নেবে মালয়েশিয়া

প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : জি-টু-জি প্লাস (সরকার থেকে সরকার) প্রক্রিয়ায় আগামী তিন বছরে ১৫ লাখ শ্রমিক নেবে মালয়েশিয়া। এজন্য মাথাপিছু খরচ হবে ৩৪ থেকে ৩৭ হাজার টাকা। এই টাকা নিয়োগদাতা কর্তৃপক্ষ বহন করবে। গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী পাঠানোর লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারকের খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, এই সমঝোতা স্মারক কার্যকর হলে ২০১২ ও ২০১৪ সালের এ-সংক্রান্ত চুক্তি বা সমঝোতাগুলো বাতিল হবে। এক প্রশ্নের জবাবে সচিব জানান, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে আগের নেওয়া উদ্যোগগুলোর ক্ষেত্রে জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) পূর্ণ সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। তবে জি-টু-জি প্লাস চুক্তির ক্ষেত্রে বায়রা সহযোগিতামূলক কিছু কাজে অংশ নেবে। এ ক্ষেত্রে তারা নির্ধারিত কিছু ফি-ও নিতে পারবে।
মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, আগামী এক মাসের মধ্যে দুই দেশ সমঝোতা স্মারকে সই করার পর জনশক্তি রপ্তানির মূল কাজ শুরু হবে।
সচিব জানান, এ প্রক্রিয়া আগের তুলনায় স্বচ্ছ হবে, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমবে, নারী-কর্মীদের যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করবে।
বাংলাদেশের বড় অর্জন হলো সোর্স কান্ট্রি (যেসব দেশ থেকে কর্মী নেবে) হিসেবে বাংলাদেশকে মালয়েশিয়া তালিকাভুক্ত করেছে। এর ফলে সেবা, উৎপাদন ও নির্মাণ খাতে কর্মী পাঠানো যাবে। আগে এটা প্লানটেশনে সীমাবদ্ধ ছিল। এই চুক্তির আওতায় কাজ নিয়ে মালয়েশিয়ায় যেতে মাথাপিছু ৩৪ থেকে ৩৭ হাজার টাকা খরচ হবে এবং এই টাকা নিয়োগকর্তাই বহন করবে বলে জানান তিনি।
জি-টু-জি প্রক্রিয়ায় দুই পক্ষের মধ্যে স্বচ্ছতার জন্য কিছু নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ার শুরুতে মালয়েশিয়া সরকার নিয়োগকর্তার সক্ষমতা ও চাহিদা যাচাই করে চাকরির সব সুবিধা নিশ্চিত করবে। তাতে মধ্যস্বত্বভোগীদের কোনো সংশ্লিষ্টতা থাকবে না।
নতুন পদ্ধতিতে কর্মীদের বেতন কত হবে তা না জানালেও মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কর্মীদের বেতন সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পরিশোধ করা হবে। নিয়োগ কর্তৃপক্ষকে ঢাকায় মালয়েশিয়ার হাইকমিশন থেকে সত্যায়িত হতে হবে।
জি-টু-জি প্লাস প্রক্রিয়ায় মহিলা কর্মী নেওয়ারও সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে জানিয়ে শফিউল বলেন, নিয়োগকর্তাই নিরাপত্তা জামানত, বায়োমেডিকেল ফি, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য বিনিয়োগ, ক্ষতিপূরণ বীমাসহ সবকিছু নির্বাহ করবে। মালয়েশিয়া সরকার নিয়োগকর্তার কর্মী চাহিদা যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত কোটা নির্ধারণ করবে। নিয়োগকর্তারা প্রাপ্ত কোটার ভিত্তিতে নিয়োগ দেবে। মালয়েশিয়া ওই প্রকৃত কোটার তথ্য অনলাইন সিস্টেমের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিএমইটির পোর্টালে পাঠাবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। আর বাংলাদেশ সরকার যথাযথ যোগ্যতাসম্পন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা মালয়েশিয়া সরকারের অনলাইন সিস্টেমে পাঠাবে জানিয়ে তিনি বলেন, ওই তালিকা থেকে রিক্রুটিং এজেন্সি নির্বাচন করা হবে।
বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো কর্মী সংগ্রহ, কর্মীদের বায়োমেডিকেল, নিরাপত্তা যাচাই, চুক্তি সম্পাদন, ভিসা প্রক্রিয়াকরণ এবং প্রশিক্ষণ ও বহির্গমন কাজে সহায়তা করবে বলে জানান শফিউল আলম।
তিনি বলেন, রিক্রুটিং এজেন্সি আগের কার্যক্রমে সম্পৃক্ত না হওয়ায় যথাযথ কাজ হয়নি। বায়রা ডাটা বেইজ থেকে কর্মী সংগ্রহ করবে। এজন্য তারা কিছু ফি পাবে। আশা করছি, এবারের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও জবাবদিহিপূর্ণ হবে।
এছাড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটিকে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন আইনের খসড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পুনরায় মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন