শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ওরা যাত্রী নয় ছিনতাইকারী

চক্রের ৬ সদস্য গ্রেফতার ছিনতাইকৃত প্রাইভেটকার সিলেটে বেশি বিক্রি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ জুন, ২০২১, ১২:০০ এএম

প্রথমে তারা যাত্রীবেশে মাইক্রোবাস ভাড়া করে। পরে সুযোগ বুঝে চালকের হাত-পা বেঁধে ফেলে। সুবিধাজনক স্থানে চলন্ত মাইক্রো থেকে চালককে ফেলে দেয়। এমনই ভয়ঙ্কর গাড়ি ছিনতাইকারী চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

নরসিংদী ও কুমিল্লার একাধিক স্থানে গত শুক্রবার অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মীর মিজান মিয়া, হাবিব মিয়া, ফারুক, কামাল মিয়া, আলামিন ও মোবারক। গতকাল ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ছিনতাইকারী এই চক্রের তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

গ্র্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, গত ২১ এপ্রিল হাবিব মিয়া তার বিদেশ ফেরত এক আত্মীয়কে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে আনার কথা বলে কিশোরগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি হায়েস মাইক্রোবাস ভাড়া করেন। পরদিন ২২ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মাইক্রোবাস চালক মো. আবুল বাশার হাবিবের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী করিমগঞ্জ থেকে চারজন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।

রাত ১১টায় তাদের বহনকৃত মাইক্রোবাসটি ঢাকার আব্দুল্লাহপুরে পৌঁছালে তারা লুঙ্গি, গামছা ও দড়ি দিয়ে মাইক্রোবাস চালকের হাত-পা বেঁধে মাইক্রোবাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। এরপর ফারুক মাইক্রোবাসটি চালিয়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার গাউছিয়া নরিকান্দী রোডে নিয়ে যান। সেখানে মাইক্রোবাসের চালক আবুল বাশারকে চলন্ত গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে সোনারগাঁয়ের দিকে চলে যান।

পরে হাবিব গাড়িটি চালিয়ে কুমিল্লার চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নিয়ে গিয়ে সেখানে অবস্থানরত মিজানের কাছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। এরপর মিজান ভুয়া নম্বর প্লেট ও কাগজপত্র সংগ্রহ করে কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানার বিভিন্ন এলাকায় ভাড়ার বিনিময়ে ওই গাড়িটি চালাতেন।

ডিবির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, চক্রটি এখন পর্যন্ত কতগুলো গাড়ি চুরি করেছে তার তদন্ত চলছে। তবে তারা জানিয়েছেন, তাদের ছিনতাইকৃত প্রাইভেটকারগুলো সিলেটে বেশি বিক্রি করেছেন। কারণ, সিলেটে বিদেশ ফেরত বহু প্রবাসী কয়েক মাসের জন্য দেশে এসে অল্প দামে গাড়ি কিনতে চান। আর চক্রটিও ওই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছিল।

তিনি আরো বলেন, চক্রটি ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে গ্রামের বিভিন্ন সহজ-সরল মানুষদের কাছ থেকে অব্যবহৃত সিম কিনে ব্যবহার করতো। চক্রের সদস্যরা ভাবতেন সেই সব সিম ব্যবহার করলে তাদের ধরা যাবে না। মাইক্রোবাস ছিনতাই ঘটনায় উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনার আরও তথ্য জানার জন্য আদালতের অনুমতি নিয়ে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আসামি হাবিব পেশাদার অপরাধী। তার নামে একাধিক মামলা আছে। একটি দস্যুতার মামলার রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে এ চক্রটির সন্ধান মিলেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন