মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠানোর সঙ্গে যুক্তদের খুঁজে বের করে প্রতিবেদন দাখিল করতে সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক ক্রিমিনাল মিসেলিনিয়াস পিটিশনের (সিএমপি) পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি শেষে গতকাল রোববার বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী এবং বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছেন। ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদনটি দাখিল করতে হবে।
একই সঙ্গে ভুয়া মামলা দায়ের কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং দায়ীদের কেন আইনের আওতায় আনা হবে নাÑ এই মর্মে রুল জারি করা হয়েছে। রুলের জবাব দাখিল করতে হবে চার সপ্তাহের মধ্যে। আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ’(এইচআরপিবি)র প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা মহানগর হাকিমের আদালতে ঝালকাঠি থানার রাজাপুরের রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে জাকির হোসেন নামক একজন ভুয়া বাদী সাজিয়ে ‘৫২/ক/১, রোড-৮এ, ধানমন্ডি, ঢাকা ’ এই ঠিকানা দেখিয়ে দণ্ডবিধির ৪২০/৪০৬/৫০৬ ধারায় পিটিশন মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়ের করে একটি চক্র। তাকে গ্রেফতার করে হাজতে পাঠানো হয়। ৮ দিন জেলখাটার পর জামিনে বের হয়ে তিনি অনেক খোঁজাখুঁজি করেও বাদীর ঠিকানা ও ব্যক্তির কোনো অস্তিত্ব পাননি। পরে জানতে পারেন যে, ব্যবসায়িক শত্রুতাবশত কয়েকজন লোক পাতানো এই মামলাটি দায়ের করেছেন।
বিষয়টি সম্পর্কে প্রতিকার চেয়ে আদালতে দরখাস্ত দাখিল করে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন জানান রফিকুল ইসলাম। এ পরিপ্রেক্ষিতে আদালত শুধুমাত্র বাদীর ঠিকানা যাচাইয়ের আদেশ দেয়া দেন। কিন্তু পুলিশ বাদীর উল্লেখিত ঠিকানার কোনো অস্তিত্ব নেই-মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতারণামূলক মামলার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করতে কোনো প্রতিকার না পেয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১এ ধারায় হাইকোর্টে একটি ক্রিমিনাল মিসসেলিনিয়াস পিটিশন দায়ের করেন।
শুনানিতে মনজিল মোরসেদ বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১এ ধারায় ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার জন্য হাইকোর্টকে অসীম ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। একজন সাধারণ নাগরিক প্রতিপক্ষের ভুয়া বাদী সাজিয়ে প্রতারণার মামলায় হযরানি ও ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিচারিক আদালত বাদী অনুপস্থিত থাকার কারণে ২৪৭ ধারায় মামলা খারিজ করতে পারলেও অপরাধীদের বের করে শাস্তি নিশ্চিত করতে পারবে না। একটি আবেদন দাখিল করে প্রতিকার চাইলেও তা মঞ্জুর করা হয়নি।
মনজিল মোরসেদ আরও বলেন, ইদানিং কালে মিডিয়ার মাধ্যমে এধরনের হয়রানিমূলক মামলার সংবাদ প্রচারিত হয়েছে যা আইনের শাসনের পরিপন্থি। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করে তিনি বলেন এর মাধ্যমে এ ধরনের অপরাধ কমাতে ভূমিকা রাখবে। আবেদনের ওপর শুনানি শেষে উপরোক্ত আদেশ দেন হাইকোর্ট। আগামী ৮ আগস্ট মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়। রুলের শুনানি না হওয়া পর্যন্ত পিটিশন মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন