রাজধানীর উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টরে এক গৃহকর্মীকে (১৮) নির্যাতনের ঘটনায় গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। একই সঙ্গে এ ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করে দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এবং এমন ঘটনা বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আহবান জানানো হয়েছে। অন্য দিকে নির্যাতনে শিকার ওই গৃহকর্মীকে ঢাকেমের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। গৃহকর্মীর গায়ে গরম ভাতের মাড় ঢেলে দগ্ধ করার অভিযোগে গ্রেফতার গৃহকর্ত্রী তানজিলা রহমানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল শনিবার বিকেলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠানোর এ আদেশ দেন। এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তর পশ্চিম থানার এসআই কাঞ্চন রায়হান আসামি তানজিলাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এ সময় তার পক্ষে আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিনের আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই কাঞ্চন রায়হান জানান, এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।
গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের সদস্য সচিব নাজমা ইয়াসমীন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওই কিশোরী (১৮) উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরের একটি বাসায় গত একবছর ধরে কাজ করে আসছে। গত বুধবার দুপুরে ভাত রান্না করতে দেরি হওয়ায় গৃহকর্তার মেয়ে শিক্ষানবিশ আইনজীবী তাজিনা সৌরভ চুলায় বসানো পাতিল থেকে ভাতের গরম মাড় নিয়ে কিশোরীর পিঠে ঢেলে দেন। এতে তার ঘাড় ও পিঠ ঝলসে যায়। ১১ জুন জাতীয় জরুরি সেবা ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন দিলে উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। গুরুতর আহত ওই গৃহকর্মী বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, সা¤প্রতিক বছরগুলোতে গৃহকর্মে নিযুক্ত শ্রমিকের ওপর নির্যাতন, হত্যা, ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে। গৃহশ্রমিক হিসেবে যেমন তাদের রয়েছে কিছু ন্যায্য অধিকার, তেমনি রয়েছে মানুষ হিসেবে মর্যাদা পাওয়ার অধিকার। করোনাকালে গৃহশ্রমিকরা সরকারি ও বেসরকারি পর্যায় থেকে তেমন কোনো সাহায্য বা সহযোগিতা পায়নি এবং তাদের একটি বড় অংশই চাকরিচ্যুত এবং কর্মহীন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন