বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল শিক্ষার ওপর ১৫ শতাংশ করারোপ প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা হয়েছে সংসদে। গতকাল সংসদে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী এর সমালোচনা করেন। এ ছাড়া প্রাণির খাদ্য তৈরিতে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারের বিধান রেখে ‘আয়োডিনযুক্ত লবণ বিল-২০২১’ সংসদে পাস হয়েছে।
রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘শিক্ষা খাতের ১৫দশমিক ৭শতাংশ বরাদ্দের ৪ শতাংশ ভাগই প্রযুক্তি খাতের। বিপর্যস্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় ছুটিই বাড়ছে, লেখাপড়ার বিকল্প ব্যবস্থার কথা বলা হচ্ছে না। এদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেখানে ৫ লাখ ছেলেমেয়ের লেখাপড়া করাচ্ছে, তাদের ওপর ১৫শতাংশ কর চাপানো হয়েছে, যা শেষ বিচারে শিক্ষার্থীদের ওপর পড়বে। জাসদের শিরীন আখতার কর নির্ভরশীলতাকে গরিববিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল বৈষম্যমূলক রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়া বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বেসরকারি শিক্ষার ক্ষেত্রে করের প্রস্তাবে জাসদ বিরোধিতা করছে। বাজেটে বেসরকারি শিক্ষা সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত বলে মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, বাজেটে ন্যক্কারজনকভাবে বেসরকারি শিক্ষার ওপর ১৫ শতাংশ করারোপ করা হয়েছে। এ সম্পর্কে একজন শিক্ষার্থী বলেছেন, অন্য দেশের সরকার শিক্ষায় ভর্তুকি দেয়, আর আমরা করারোপ করি। বেসরকারিতে পড়া স্টুডেন্টরা আম নাকি যে দেখলেই পাড়তে মন চাইবে?
বাজেট প্রস্তাবের পর থেকেই বেসরকারি শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা এর প্রতিবাদ করে আসছে। বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ট্রাস্টের অধীন অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়ায় ট্যাক্সভ্যাট প্রযোজ্য নয়।
এদিকে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন প্রাণির খাদ্য তৈরিতে আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহারের বিধান রেখে ‘আয়োডিনযুক্ত লবণ বিল-২০২১’ সংসদে উত্থাপন করে পাসের সুপারিশ করলে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন।
১৯৮৯ সালের ‘আয়োডিন অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ আইন’ রহিত করে নতুন আইন করতে বিলটি আনা হয়েছিল। গত ২০ জানুয়ারি বিলটি সংসদে তোলা হয়। পরে সেটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল। বিলে মানুষের জন্য ভোজ্য লবণ এবং প্রাণি খাদ্য প্রস্তুতে ব্যবহৃত লবণে আয়োডিন না থাকলে সর্বোচ্চ তিন বছরের জেল এবং ১৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তবে খুচরা লবণ বিক্রেতা এই অপরাধে দন্ডিত হবেন না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন