শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

উপকূলে ভারী বর্ষণ

বঙ্গোপসাগরে ঘনঘোর মেঘমালা : জেঁকে বসেছে বর্ষার মৌসুমী বায়ু : দেশজুড়ে বৃষ্টিপাত সর্বোচ্চ হাতিয়ায় ১২৬ মি.মি.

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০২১, ১২:০৩ এএম

উত্তর বঙ্গোপসাগরে ঘনঘোর মেঘমালা। সমুদ্রে মৌসুমী বায়ু মাঝারি থেকে জোরালো অবস্থায় রয়েছে। বর্ষারোহী মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর এখন পুরোদমে জেঁকে বসেছে। এর সক্রিয় প্রভাবে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশজুড়ে বৃষ্টিপাত হয়। সমুদ্র উপকূলভাগ, চর, দ্বীপাঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হয়েছে। এ সময়ে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় হাতিয়া দ্বীপে ১২৬ মিলিমিটার। এছাড়া সন্দ্বীপে ১০৩, পটুয়াখালীতে ৮০, খুলনায় ৬৬, কুতুবদিয়ায় ৫৬, সীতাকুণ্ডে ৫২, টেকনাফে ৪৫, নোয়াখালীতে ৪৩ মি.মি.সহ উপকূলীয় অনেক স্থানে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ ভারী বর্ষণ হয়েছে।

অন্যদিকে ঢাকায় ৫, চট্টগ্রামে ১২, সিলেটে ৩৭, রাজশাহীতে ৪৪, রংপুরে ১৯, বরিশালে ২৯ মি.মি. বর্ষণ হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সৈয়দপুরে ৩৪.৫ ডিগ্রি সে.। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৯.৪ এবং সর্বনিম্ন ২৬.৪ ডিগ্রি সে.।

আজ বৃহস্পতিবার বিশেষত উপকূলীয় অঞ্চলে ভারী বর্ষণের সতর্কতায় জানা গেছে, সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। আসছে সপ্তাহে আবহাওয়ায় কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে।
সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। সমুদ্র বন্দরসমূহ, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

নদ-নদী পরিস্থিতি
পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে গতকাল জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর নদের পানি হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে। যা আগামী ৪৮ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আপার মেঘনা অববাহিকায় প্রধান নদ-নদীর পানি হ্রাস পাচ্ছে। এ অঞ্চলের নদীগুলোতে আগামী ২৪ ঘণ্টায় পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলা ও এর সংলগ্ন এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ সময়ে ওই অঞ্চলের নদীসমূহের পানি সময়বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। কোথাও কোথাও আকস্মিক বন্যা হতে পারে।

প্রধান নদ-নদীসমূহের ১০১টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৪৫টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৫২টিতে হ্রাস পায়। ৩টি স্থানে অপরিবর্তিত থাকে। মঙ্গলবার ৪১টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি, ৫৬টিতে হ্রাস পায়।
দেশের অভ্যন্তরে এবং প্রধান নদ-নদীসমূহের অববাহিকায় উজানে উত্তর-পূর্ব ভারতে বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় উজানে দার্জিলিংয়ে ৪৫, চেরাপুঞ্জিতে ৪৩, গ্যাংটকে ৩২ মি.মি. বৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে অভ্যন্তরে সাতক্ষীরায় ৯০, কক্সবাজারে ৭৫, বরগুনায় ৬৩, পটুয়াখালীতে ৫৪ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়।
এদিকে পাউবোর নদ-নদী প্রবাহের সর্বশেষ তথ্যে জানা যায়, উজানে ভারতের ঢলে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে গতকাল বিকাল পর্যন্ত ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন