শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রুপালি ইলিশের ঝিলিক

চট্টগ্রামে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে দাম নাগালে

প্রকাশের সময় : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রফিকুল ইসলাম সেলিম : চট্টগ্রামে রুপালি ইলিশের ঝিলিক। জেলেদের জালে উঠছে ঝাঁকে ঝাঁকে। বাজারও সয়লাব ইলিশে। আর এ কারণে দামও নাগালে। ফলে দীর্ঘদিন পর পাতে পড়ছে ইলিশ। এ সুস্বাদু জাতীয় মাছের স্বাদ নিতে পারছে সাধারণ মানুষ। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি থাকায় দামও অনেকটা কম। পাঁচশ’ থেকে ছয়শ’ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে মাঝারি আকারের ইলিশ।
ভরা মৌসুমে ইলিশে সয়লাব বন্দরনগরীসহ চট্টগ্রাম অঞ্চলের হাটবাজার। জেলেদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ। সাগর থেকে মাছবোঝাই নৌকা নিয়ে ফিরছে মাঝিরা। চট্টগ্রাম ছাড়াও কক্সবাজার, চাঁদপুর থেকে ট্রাকে ট্রাকে ইলিশ আসছে নগরীর ফিশারিঘাটে। দেশের অন্যতম বিশাল এই পাইকারি বাজার থেকে ইলিশের চালান চলে যাচ্ছে বৃহত্তর চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে। ব্যবসায়ীরা জানান, ফিশারিঘাট হয়ে চট্টগ্রামে প্রতিদিন আড়াইশ’ থেকে তিনশ’ মেট্রিক টন ইলিশ লেনদেন হচ্ছে।
ইলিশের ছড়াছড়িতে খুশি জেলে, মাঝি-মাল্লা ও বেপারীরা। বাজারে কিছু সস্তায় মাছ কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারাও। সুস্বাদু হওয়ার কারণে ইলিশের চাহিদা আকাশছোঁয়া। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ার এর দামও থাকে চড়া। এ বছর কিছুটা ব্যতিক্রম। জেলেরা বলছেন, এ বছর তাদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মাছ। এ কারণে বাজারগুলো ভরপুর ইলিশ মাছে।
জেলেরা জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় মাছ ধরা পড়ছে বেশি। জাটকা মৌসুমে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকায় মাছ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। ইলিশের আকারও অন্যবারের তুলনায় এবার বড়। বাজারে দেড় থেকে ২ কেজি ওজনের ইলিশও মিলছে। বেশি মাছ ধরা পড়ায় দামও রয়েছে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে। ছোট সাইজের ইলিশ এবার বিক্রি হচ্ছে ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকায় আর বড় সাইজের ইলিশ ৯শ’ থেকে ১ হাজার টাকায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, এক কেজি ওজনের মাছ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকায়। দেড় কেজি ওজনের ইলিশের দাম দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত। মাঝারি সাইজের ইলিশ মিলছে ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকায়। গত বছর দেড় কেজি ওজনের মাছের দাম ছিল ২ হাজার থেকে ২২শ’ টাকা। আর এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম উঠেছিল দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত।
নগরীর ফিরিঙ্গিবাজার ফিশারিঘাটে প্রতিদিন শত শত টন ইলিশ মাছ আসছে। সাগর থেকে মাঝিমাল্লা ও জেলেরা মাছ নিয়ে আসছে এখানে। কক্সবাজার, চাঁদপুর থেকেও সড়কপথে ফিশারিঘাটে মাছ আসছে। এসব মাছ চলে যাচ্ছে এ অঞ্চলের বিভিন্ন হাটবাজারে। ফিশারিঘাটের ব্যবসায়ীরা জানান, এখানে প্রতিদিন ৫শ’ মেট্রিক টনের বেশি মাছ বিক্রি হয়। এখন এর অর্ধেক মাছই ইলিশ। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর ইলিশ আসছে বেশি।
ফিশারিঘাট থেকে ঠেলাগাড়ি বোঝাই করে ব্যবসায়ীরা মাছ নিয়ে যাচ্ছে বাজারে। বাজারগুলোতে শোভা পাচ্ছে তরতাজা চকচকে রুপালি ইলিশ। ক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় বাজারে দাম কিছুটা কমেছে। কয়েক বছর পর ইলিশ মাছের স্বাদ নিতে পারছে সাধারণ মানুষ। প্রচুর মাছ ধরা পড়ায় কিছু কিছু ব্যবসায়ী হিমাগারে মজুদ গড়ে তুলছে। অনেকে আবার চোরাপথে ইলিশ পাচার করছে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে। এ প্রবণতা ঠেকানো গেলে দাম আরও কমে যাবে বলে মনে করছেন তারা।
ফিশারিঘাট আড়তে প্রতি মণ বড় সাইজের ইলিশ ১৬ থেকে সাড়ে ১৬ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোরবানির আগে ছিল ৩০-৩২ হাজার টাকা। মাছ বেশি ধরা পড়ছে তাই দাম কমে যাচ্ছে। এ ছাড়া কোরবানির মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজারে ইলিশের চাহিদাও কম ছিল। এখন কাটা-ছেঁড়া-ফাটা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে সাড়ে নয় হাজার টাকা মণে। এ ধরনের নিম্নমানের মাছগুলোর বেশিরভাগই ‘নুনা ইলিশ’ করা হচ্ছে।
ফিশারিঘাটের মাছ চলে যাচ্ছে বিভিন্ন বাজারে। শৌখিন ক্রেতাদের অনেকে বাজার থেকে না কিনে সরাসরি ফিশারিঘাট থেকে মাছ কিনছেন। অনেকে আবার কাট্টলী ও পতেঙ্গা সৈকতে গিয়েও তাজা ইলিশ কিনে আনছেন। তবে এসব মাছের তুলনায় সুস্বাদু পদ্মার ইলিশ। বাজারে চাঁদপুর থেকে আসা এসব ইলিশের দাম এবং চাহিদা দুটোই বেশি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন