অনলাইনে কেনাকাটা করা আর অনলাইনে শিক্ষা দান এক জিনিস নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর। তিনি বলেন, অনলাইন এডুকেশন শুধুমাত্র সংকট উত্তরণের জন্য চলতে পারে, অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য নয়। অনলাইন এডুকেশন কখনো হাতে কলমে শিক্ষা এবং মানুষের সম্পৃক্ততার বিকল্প মাধ্যম হতে পারে না।‘টার্নিটিন ভার্চুয়াল কনক্লেভ: লিভারেজিং টেকনোলজি ফর এনহেনসিং এডুকেশন’ শীর্ষক আন্তজার্তিক সম্মেলনের প্যানেল বক্তা হিসেবে বাংলাদেশ থেকে প্রফেসর ড. আলমগীর অংশগ্রহণ করেন এবং দেশের অনলাইন এডুকেশন নিয়ে সভায় গতকাল বৃহস্পতিবার তার অভিমত তুলে ধরেন।
সমাবেশে টার্নিটিনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিস ক্যারেন স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে অল ইন্ডিয়া টেকনিক্যাল এডুকেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রফেসর অনিল ডি সহস্রবুধেসহ ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপালের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে যুক্ত আগ্রহীরা অংশগ্রহণ করেন। সভায় সরাসরি পাঠদানের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রফেসর আলমগীর বলেন, শিক্ষার সাথে মানবিক গুণাবলি গুরুত্বপূর্ণ। দেশ ও জাতির সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের মাঝে নৈতিক ও মানবিক গুণাবলির বিকাশ ঘটানো খুবই জরুরি। সরাসরি পাঠদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মানবীয় গুণাবলি অর্জন করে থাকে। এসব কারণেই শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গমন করে, শুধু পাঠ্যবই পড়ার জন্য নয়।
তিনি বলেন, শ্রেণিকক্ষে নানা ধরনের শিক্ষার্থীরা থাকে, তাদের সমস্যাও ভিন্ন রকম। সরাসরি পাঠদানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকরা সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করে সমস্যার সমাধান দিতে পারেন। শিক্ষার্থীদের এসব মানবিক সমস্যা অনলাইনের মাধ্যমে দেওয়া সম্ভব নয়।
সংকটকালে অনলাইন শিক্ষাকে কার্যকর করতে ইউজিসি’র এ সদস্য বলেন, নানা রকম সংকট ও সীমাবদ্ধতা থাকার পরও এটিকে কার্যকর ও জনপ্রিয় করে তুলতে হবে। অনলাইন শিক্ষা কেবল পাঠদান সর্বস্ব না হয়ে এটিকে অংশগ্রহণমূলক ভার্চুয়াল ক্লাসরুম করতে হবে। অনলাইনে পাঠদানের চলমান সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে ব্লেন্ডেড লার্নিং ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। অনলাইনে পাঠদানে শিক্ষকদের জ্ঞান, দক্ষতা এবং উদ্ভাবন শক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
শিক্ষায় প্রযুক্তির ভূমিকা বিষয়ে প্রফেসর আলমগীর বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি গুণগত উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি রোধে এন্টি প্লেজারিজম সফটওয়্যার ‘টার্নিটিন’ অনবদ্য ভূমিকা রাখছে। বাংলা গবেষণাপত্র এবং পুস্তক ইত্যাদির জন্য ‘টার্নিটিন’- এর আদলে বাংলা ভাষায় উন্নত একটি সফটওয়ার তৈরির আহবান জানান। এক্ষেত্রে তিনি দেশীয় প্রযুক্তিবিদদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন