শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

রঙ বদলাচ্ছে বুড়িগঙ্গা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ জুন, ২০২১, ১২:০৩ এএম

খরস্রোতা বুড়িগঙ্গা। রাজধানীর যাবতীয় নোংরা আবর্জনায় পানির রঙ থাকে কালো কুচকুচে। কিন্তু বর্ষা এলেই বুড়িগঙ্গায় কিছুটা হলেও তার আগের রূপ ফিরে আসে। পানি বাড়তে থাকে। ফলে পানির রঙ বদলে স্বচ্ছতে রূপান্তরিত হতে থাকে। এবারও বর্ষা আসার সঙ্গে সঙ্গে বুড়িগঙ্গায় একই দৃশ্য বিরাজ করছে। পানির থইথই শব্দ, বাতাসে হালকা ঢেউ, ডিঙ্গি নৌকায় যাত্রী পারাপারের দৃশ্য সে এক অন্যরকম পরিবেশ। বিকেল হলে কেউ কেউ শহরের চার দেয়াল থেকে বুড়িগঙ্গার মনোরম দৃশ্য দেখতে ভিড় করেন। সদরঘাটের বুড়িগঙ্গার বিভিন্ন ঘাট পথকে ঘণ্টা হিসেবে নৌকা ভ্রমণ করা যায়। বিকেল হলে বুড়িগঙ্গার মনোরম দৃশ্য আরো বেড়ে যায়।

এ সময় বুড়িগঙ্গায় ঢেউয়ের ওপর ঢেউ আছড়ে পড়ে। যেন যৌবন ফিরে পেয়েছে। স্বচ্ছ পানি কখনো কখনো পাল তোলা নৌকার দেখা মিলে। এমন মনকাড়া দৃশ্য দেখে নদীর দু’পাড়ের মানুষ আনন্দে আটখানা। এতদিন বুড়িগঙ্গার পানি ছিল ঘোলা কালো আর দুর্গন্ধযুক্ত। আকস্মিক পানির স্বচ্ছতা বুড়িগঙ্গার সব কিছুকেই পাল্টে দিয়েছে। মুক্ত হাওয়া বইছে এখন বুড়িগঙ্গার দু’পাড়ে। মাঝি-মাল্লাদের কণ্ঠেও এখন সুমধুর গান। বিকাল হলেই দূরদূরান্ত থেকে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসছেন বুড়িগঙ্গার পাড়ে।

নদীপাড়ের বাসিন্দা এম এ মাসুম বলেন, হাজারীবাগের ট্যানারি স্থানান্তরের পর বুড়িগঙ্গা কিছুটা হলেও প্রাণ ফিরে পেয়েছে। তবে বর্ষা মৌসুমে এবার বুড়িগঙ্গা পেয়েছে ভরা যৌবন। বাতাস ছাড়লেই নদীতে ঢেউ তুলে। সেই ঢেউয়ে নৌকা দোল খায়। তার সঙ্গে দোলে যাত্রীরা।

সদরঘাট এলাকার জাকি হোসেন বলেন, বুড়িগঙ্গা নদী একটি জীবন্ত ইতিহাস। বর্ষা মৌসুমের আগে নদীটি মৃতপ্রায় অবস্থায় থাকে। বর্ষা মৌসুমে পাল্টে যেতে শুরু করে বুড়িগঙ্গা। রূপ আর রঙে বদলে গেছে বুড়িগঙ্গা। বদলে গেছে বুড়িগঙ্গার পানি এবং পানির রঙে ফিরেছে স্বচ্ছতা। নদী ভ্রমণে আসা রিনা বেগম বলেন, পড়ন্ত বিকেলের সূর্যালোকে মনে হচ্ছে বুড়িগঙ্গা যেন হাসছে। কিন্তু তার এ হাসি ক্ষণস্থায়ী। সারা বছর তার এ হাসি ধরে রাখতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে সমাজের সর্বস্তরের বিবেকবান মানুষজনকে।

বুড়িগঙ্গা তীরবর্তী বসবাসকারীরা জানান, এবার বর্ষা আসার আগেই নদীর পানির রঙ বদলাতে শুরু করেছে। এটাকে তারা ভালো লক্ষণ হিসেবে মনে করছেন। কিন্তু বর্ষা মৌসুম শেষ হতে না হতেই বুড়িগঙ্গার পানি কালো রঙ ধারণ করে। তখন গোসল করা তো দূরের কথা বুড়িগঙ্গার পানি হাতে নেয়াই মুশকিল হয়ে যায়। পচা পানির গন্ধে দুই তীরের বাসিন্দাদের মাঝে দেখা দেয় পানিবাহিত নানা রোগ-ব্যাধি।

কোনারীগঞ্জের কামাল হোসেন বলেন, স্বচ্ছ পানি। মৃদু ঢেউ। মাঝির পাল তোলা নৌকা। বুড়িগঙ্গায় এমন দৃশ্য দেখে অবাক মনে হয়। যে নদীর কাছে যাওয়া মুশকিল হতো। নাকে রুমাল চেপে পারাপার হতে হতো। পানি স্পর্শ করা তো দূরের কথা। অথচ সেই নদীতেই প্রতিদিন আসতে শুরু করেছে বহু দূরদূরান্তের ভ্রমণপিয়াসীরা। ঘাটে মাঝি আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমরা এখন মনের সুখে নৌকা চালাই। শান্তিতে নদী পারাপার করি। বিকেল হলে বহু লোকজন ঘুরতে আসে। ঘণ্টা হিসেবে ভ্রমণ করে। অনেকে শখ করে নৌকা চালায়। আনন্দে তাদের সন্ধ্যা গড়ায়। তবে রাত হওয়ার আগেই সবাই ফিরে যায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন