শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে হনুমান

মোজাম্মেল হক, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০২১, ১২:০১ এএম

মাসখানেক ধরে হনুমানটিকে গোয়ালন্দ শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যাচ্ছে। প্রথমদিকে এটি মানুষজন থেকে দূরে দূরে থাকতো। গাছের ডালে, ঘরের চালে, ভবনের ছাদে উঠে থাকতো। অনেকেই বিরক্ত বোধ করে তাড়িয়ে দিত। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে এটি অনেকটাই স্বাভাবিকভাবে মিশে গেছে লোকজনের সাথে। টিকে থাকার তাগিদে সঙ্গীবিহীন হনুমানটি মানুষের সাথে এভাবে মিলেমিশে থাকার চেষ্টা করছে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় মাসখানেক আগে হনুমানটিকে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দেখা যায়। সেখানে কয়েকদিন থাকার পর এটি শহর এলাকায় চলে যায়। দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে আসা কোন যানবাহনের ছাদে উঠে হনুমানটি এ এলাকায় চলে আসে। এভাবে মাঝে মধ্যেই এ এলাকায় হনুমান চলে আসার ঘটনা ঘটছে। নিরাপদ আবাসস্থল ও খাদ্যের অভাবে এগুলো নিজস্ব এলাকা ত্যাগ করে চলে আসছে বলে ধারণা অনেকের।
গত সোমবার দুপুরে হনুমানটিকে গোয়ালন্দ বাজার রেলগেট এলাকায় দেখা যায়। ক্ষুধার্ত হনুমানটি মজিবর রহমান নামে এক ফল ব্যবসায়ীর দোকানে ঢুকে পড়ে। দোকানদার একটি আনার খেতে দিলে দীর্ঘ সময় ধরে ফলটি খায়। এ সময়ের মধ্যে এটি দোকানের অন্য কোন কিছু খায়নি কিংবা ক্ষতি করেনি।
তারপর হনুমানটি পাশের একটি খাবার হোটেলে গিয়ে মানুষের মতো বেঞ্চে বসে পড়ে। নারী হোটেল মালিক তাড়িয়ে না দিয়ে কিছু খাবার খেতে দেন। এসময় আরো অনেকেই হনুমানটিকে আম, কলা, বাদাম, পাউরুটি প্রভৃতি খাবার দেয়। যতটা সম্ভব খেয়ে সেখান থেকে চুপচাপ চলে যায়। এসময় হোটেলের অন্য কাস্টমাররা বিষয়টি বেশ উপভোগ করেন। কিন্তু কাউকে বিরক্ত করেনি এটি।
এর আগে গত শুক্রবার দুপুরের প্রচণ্ড রোদে ক্লান্ত হনুমানটি গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি দোকানে ঢুকে মেঝেতে শুয়ে পড়ে। দোকানদার ফ্যান ছেড়ে দিলে ঠান্ডা বাতাসে দীর্ঘক্ষণ ঘুমিয়ে নেয়। জেগে ওঠার পর রফিকুল ইসলাম নামে এক যুবক মাথায় হাত বুলিয়ে পরম মমতায় আদর করেন। হনুমানটি সে আদর বেশ উপভোগ করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মানুষের সাথে এভাবে কোন হনুমানের মিশে যাওয়া এর আগে তারা দেখেননি। লোকজনের মানবিকতা দেখে খুব ভালো লেগেছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নুরুল ইসলাম বলেন, হনুমানটি হয়তো কোন কলাবাহী ট্রাকে করে সুন্দরবন এলাকা হতে এদিকে চলে এসেছে। এখানে আসার পর সঙ্গীবিহীন হয়ে গেছে। তাই বেঁচে থাকার তাগিদে মানুষের সাথে স্বাভাবিক আচরণ করছে। কারো কোন ক্ষতি করছে না। মানুষও ক্ষতি করে না এমন কোন প্রাণি পেলে স্বভাবতই ভালোবাসে, খাবার দেয়, সহযোগিতা করে। তিনি আরো বলেন, হনুমান ও বানরের জ্ঞান-বুদ্ধি অনেক প্রবল। ওরা বোঝে কোন পরিবেশে কিভাবে নিজেকে খাপ খাওয়াতে হয়। এসময় তিনি সকল প্রাণির প্রতি মানবিক হওয়ার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন