করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে নওগাঁয় চলমান বিধিনিষেধের পাশাপাশি জেলার সকল পশুর হাট বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। পরবতী নিদেশ না দেয়া পযন্ত পশুরহাট বন্ধের এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে। তবে খামার ও গৃহস্থের বাড়ি থেকে এবং অনলাইনে পশু ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানো হয়।
কোরবানির আগ মুহূর্তে পশুর হাট বন্ধ রাখার ঘোষণায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে পশু খামারি ও গৃহস্থের কপালে। কোরবানীর আগে হাট না বসলে বড় ধরণের লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা। জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদ স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নওগাঁ জেলায় করোনার সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় জারি করা চলমান বিশেষ বিধিনিষেধের পাশাপাশি জেলার সকল পশুর হাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি। তবে খামার ও গৃহস্থের বাড়ি থেকে এবং অনলাইনে পশু ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ জেলায় ছোট-বড় ১০৪টি হাটবাজার রয়েছে। এর মধ্যে স্থায়ী পশুর হাট রয়েছে ৩৮টি। জেলার মান্দা উপজেলার চৌবাড়িয়া ও সতিহাট, নিয়ামতপুর উপজেলার ছাতড়া, পোরশা উপজেলার মশিদপুর, মহাদেপুরের মাতাজীহাট, বদলগাছীর কোলাহাট ও রাণীনগরের আবাদপুকুর বৃহৎ পশুর হাট। প্রতি বছর কোরবানীর ঈদ মৌসুমে এসব হাটে স্থানীয় ক্রেতারা ছাড়াও ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা গরু কিনতে আসেন।
জেলা প্রাণীসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার বিভিন্ন খামার ও গৃহস্থের বাড়িতে এ বছর ৩ লাখ ২০ হাজার কোরবানী যোগ্য পশু প্রস্তুত আছে। এর মধ্যে জেলায় কোরবানীর পশুর চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ৩৫ হাজার। জেলায় চাহিদার চেয়ে কোরবানির পশু ৮৫ হাজার বেশি রয়েছে।
নওগাঁ পৌরসভার শিবপুর এলাকার খামারী সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বছর কোরবানীর হাটে বিক্রির জন্য আমার খামারে ১২টি গরু লালন-পালন করেছি। গুরু কেনা ও লালন-পালন খরচ বাবদ প্রতিটি গরুর পেছনে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। গরু যে রকম হৃষ্টপুষ্ট হয়েছে তাতে প্রতিটি গরু ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায় বিক্রির আশা আছে। কিন্তু পশুর হাট বন্ধের যে ঘোষণা শুনলাম তাতে তো চিন্তার বিষয়। হাটে দর-কষাকষি করে গুরু বিক্রি করলে একটু বেশি লাভের আশা থাকে। কোরবানীর আগ পর্যন্ত হাট বন্ধ থাকলে মনে হয় বড় ধরণের লোকসানে পড়তে হয়।
নওগাঁ জেলায় বেশ কয়েকটি পশুর হাটের ইজারাদার নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, পশুরহাট একেবারে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত আমার মনে হয় সঠিক নয়। কারণ, কোরবানীকে কেন্দ্র করে বহু খামারী ও গৃহস্থ পশু লালন-পালন করে থাকেন একটু লাভের আশায়। এসব সময় গবাদিপশু বিক্রি করে যেটুকু লাভ হয় তা দিয়ে বছরের অধিকাংশ সময় খরচ করে থাকে। কিন্তু এই সময়ে পশুর হাট বন্ধ রাখলে তাঁদের বড় ধরণের লোকসানে পড়তে হবে। আমি মনে করি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুর হাটে কেনাবেচা চালু রাখা উচিত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন