টঙ্গী সংবাদদাতা : টঙ্গীর ট্যাম্পাকো ফয়েলস কারখানার ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও এক ব্যক্তির কঙ্কাল উদ্ধার করেছেন সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। গতকাল (শনিবার) দুপুর সোয়া ২টার দিকে কঙ্কালটি উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে জেলা প্রশাসনের হিসাব মতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৩৬ জনে। এছাড়া দুর্ঘটনার অগ্নিবিস্ফোরণের মুহূর্তে আসমা নামে একজন মহিলা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ট্যাম্পাকো কারখানার ভবন ধসে পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে টঙ্গী হাসপাতালে পাঠানোর পর তার পরিবার ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ গ্রামে নিয়ে দাফন করেন। ময়না তদন্ত না করায় জেলা প্রশাসনের মৃতের তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি বলে জানিয়েছেন আসমার পরিবার। ফলে নিহত আসমাসহ ট্যাম্পাকো কারখানায় এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭ জনে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান জানান, দুপুরে উদ্ধার কাজ চালানোর সময় ওই কারখানার ধ্বংসস্তূপ থেকে একটি লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে ওই ব্যক্তির নাম-পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। লাশ গলে কঙ্কাল হয়ে যাওয়ায় তা নারী না পুরুষের এই ব্যাপারেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এই নিয়ে ট্যাম্পাকো দুর্ঘটনায় ৩৭টি লাশ উদ্ধার করা হল। এর মধ্যে ২৯জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। গতকাল উদ্ধারকৃত এক জনের কঙ্কালসহ ৭ লাশের পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া আরো ৪ জনের (জীবিত বা মৃত) কোন সন্ধান এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। সনাক্তহীন ৭ জনসহ এখনো মোট ১১ জন নিখোঁজের তালিকায় রয়েছে।
এদিকে ১৫তম দিনে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিস ও সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। সেনাবাহিনী ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ধসে যাওয়া ভবনের বর্জ্যগুলো অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।
বিস্ফোরণ ও অগ্নিকা-ের ঘটনায় কারখানার মালিক সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হেসেনকে প্রধান আসামি করে টঙ্গী মডেল থানায় এ পর্যন্ত দুটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১২ সেপ্টেম্বর কারখানা মালিকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে প্রথম মামলাটি করেন নিহত শ্রমিক জুয়েলের বাবা আব্দুল কাদের। পরে গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে টঙ্গী মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) অজয় চক্রবর্তী বাদী হয়ে কারখানা মালিকসহ ১০ জনকে আসামি করে দ্বিতীয় মামলাটি করেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
উল্লেখ্য, গত ১০ সেপ্টেম্বর সকালে টঙ্গীর বিসিক শিল্পনগরীর ট্যাম্পাকো কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন