সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

মালয়েশিয়া-ফেরত বাংলাদেশীর সঙ্গে জঙ্গি সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি -ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশের সময় : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা অথবা জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে মালয়েশিয়া থেকে ফেরত অস্ত্র মামলার আসামি পেয়ার আহম্মদ আকাশের কোনো সম্পৃক্ততা এখনো পাওয়া যায়নি।
এই বিষয়ে যে খবরাখবর এসেছে সেগুলো পরবর্তী সময়ে যাচাই করা হবে। গতকাল শনিবার দুপুরে এফডিসিতে অনুষ্ঠিত ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট বিতর্ক প্রতিযোগিতা শেষে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশ যে ভূমিকা পালন করছে তা তাদের দক্ষতা, দূরদর্শিতা, দেশপ্রেম এবং জবাবদিহিতার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় অর্জিত সাফল্যকে টেকসই করার জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি সন্ত্রাস দমনে অংশিদারিত্বমূলক পুলিশি ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বলেন, জনগণকে সম্পৃক্ত করে উদ্বুদ্ধকরণ সভা এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের পরিচালনা পর্ষদের সাথে জঙ্গিবাদ দমনে সংলাপ অব্যাহত রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ পুলিশের সক্রিয় উদ্যোগের কারণে ইতোমধ্যে আরো কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা প্রতিরোধ করা হয়েছে। তিনি আরো উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ পুলিশের পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দিয়ে আসছে, জাপান সরকারও এ বিষয়ে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সক্রিয় প্রচেষ্টার পাশাপাশি ছাত্র-যুবকসহ রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সুশাসন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ চর্চার মাধ্যমে জঙ্গিবাদ নামক ভয়াবহ সমস্যা থেকে জাতিকে মুক্ত করা জরুরি। মফস্বলের শিক্ষার্থীদের ব্যাচেলার বাসায় থাকার ব্যাপারে যাতে অহেতুক বিড়ম্বনা তৈরি না হয় সেদিকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানান তিনি।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে প্রতিযোগিতায় সরকারি দল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালসবিরোধী দল বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী বিতার্কিকদের ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডিএমপি’র যুগ্ম কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, এটিএন বাংলার সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট তাশিক আহমেদ। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক রোকেয়া পারভিন জুঁই, ড. এ্স এম মোর্শেদ, এবং ড. এ এইচ এম সোলায়মান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ন্যাশনাল ডিবেট ফেডারেশনের মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান খান।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, পেয়ার আহম্মদ আকাশ ফেনী জেলার একটি অস্ত্র মামলার আসামি। ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছিল। এই রেড নোটিশের আলোকেই তাঁকে ফেরত দেয়া হয়। হলি আর্টিজান বা জঙ্গিবাদের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা আছে কিনা, তা এখনো আমরা পাইনি। তবে আন্তর্জাতিক পত্রিকায় এ ধরনের যে খবরাখবর এসেছে, সেগুলো আমরা পরবর্তী সময়ে যাচাই করে দেখব।
৬ জঙ্গির লাশের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ওই লাশের ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও আবেদন করা হয়নি।
প্রসঙ্গত, ১১ বছর আগে বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার খোয়া যাওয়া অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আকাশ। পরে তিনি জামিন নিয়ে মালয়েশিয়ায় পালিয়ে যান। ফেনীর অস্ত্র মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট ছিল। গত বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়া পুলিশের মহাপরিদর্শক খালিদ আবু বাকের এক বিবৃতিতে পেয়ার আহম্মদের নাম উল্লেখ না করে বলেন, সন্দেহভাজন বাংলাদেশীকে গত ১৯ আগস্ট গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে ইন্টারপোল ‘রেড নোটিশ’ জারি ছিল। গত ২ সেপ্টেম্বর তাঁকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।
মালয়েশিয়ার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশী বুকিত বিনতাং এলাকায় রেস্তোরাঁ চালাতেন। সন্দেহ করা হচ্ছে, তিনি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ব্যবহারের জন্য অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত।
গত ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার পুলিশ পেয়ার আহম্মদকে দাগনভূঞা থানায় হস্তান্তর করে। সেখান থেকে তাঁর স্থান হয় ফেনী কারাগারে। ফেনীর জেল সুপার শংকর কুমার পেয়ার আহম্মদের ফেনী কারাগারে থাকার কথা নিশ্চিত করেন। এর আগে গত শুক্রবার সিঙ্গাপুরের সংবাদ মাধ্যম দ্য স্ট্রেইটস টাইমস জানায়, গ্রেপ্তার বাংলাদেশী নিজ দেশের মানুষের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করতেন। তিনি বাংলাদেশে হামলার পরিকল্পনা করছিলেন বলে ধারণা করছে মালয়েশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন