বগুড়ার সান্তাহার শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আজমেরী গ্রুপের বিরুদ্ধে আবারো ভারত থেকে নিম্নমানের ও বস্তায় চারা গজানো গম আমদানি করার অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভারত থেকে মেয়াদ উত্তীর্ণ ও পোকা খাওয়া গম আমদানির অভিযোগ উঠেছিল।
জানা যায়, আজমেরী গ্রুপ নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ দিন থেকে দেশীয় উৎস থেকে পাওয়া গম দিয়ে আটা, ময়দা, সুজি ও ভুষি উৎপাদন করে আসছে। বর্তমানে দেশীয় গমের দাম চড়া এবং প্রয়োজনীয় পরিমাণে না মেলায় ভারত থেকে পোকা খাওয়া নিম্নমানের ও গমের বস্তায় চারা গজানো গম আমদানি করছে। আমদানি করা গম ভারতের রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমে আসছে বগুড়ার সান্তাহার স্টেশনের মাল গুদাম ও কলেজ রোডের খালাস পয়েন্টে। গত তিনদিন ধরে এসব গম খালাস করা হচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, গমের অধিকাংশ নিম্নমানের এবং বস্তায় ফুটো করে চারা গজিয়েছে। অনেক বস্তায় গম পচে নষ্ট হয়ে গেছে। আজমেরী গ্রুপ গত ফেব্রয়ারি মাসে ভারত থেকে নিয়ে আসে পোকা খাওয়া ও মেয়াদ উত্তীর্ণ প্রায় আড়াই হাজার মেট্রিক টন গম। এবারও ৪২টি গম বোঝাই ভারতীয় ওয়াগনে প্রায় আড়াই হাজার মেট্রিক টন গম আনা হয়েছে। সেগুলো খুব দ্রুত গতিতে ওয়াগান থেকে খালাস করে ট্রাকযোগে ওই প্রতিষ্ঠানের মিল ও গুদামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সান্তাহার শহরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, আমরা আজমেরী গ্রুপের আটা, ময়দা ও সুজি বিক্রি করে আসছি দীর্ঘ দিন থেকে। কিন্তু শহরের মানুষের মুখে পোকা খাওয়া গম আমদানির কথা শুনে ওই প্রতিষ্ঠানের পণ্য বিক্রি করা নিয়ে আমরা আতঙ্কিত।
এ বিষয়ে খালাস এলাকায় থাকা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক আকরাম হোসেন বলেন, বৃষ্টিতে ভেজার কারণে কিছু গমের বস্তায় চারা গজিয়েছে বাকি সব গম ভাল। তিনি জানান, আজমেরী গ্রুপের মালিক অপরিচিত কারো ফোন ধরেন না বা কথা বলেন না। আদমদীঘি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দফতর থেকে পাওয়া গম আমদানি সংক্রান্ত কাগজপত্র অনুসন্ধান করে বিএসটিআই এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের মান নির্ধারণ সংক্রান্ত কোন কাগজপত্র মেলেনি।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক গোলাম রব্বানী বলেন, আমদানি করা গমের বিষয়ে আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই, এটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিষয়। বিষয়টি নিয়ে বিএসটিআই বগুড়া কার্যালয়ের পরিদর্শক জুলফিকার আলী বলেন, গম থেকে উৎপাদিত খাদ্য আমরা পরীক্ষা করে সনদ দেই। গম দেখভালের দায়িত্ব জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের বগুড়া কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক বলেন, দ্রুত বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রতিষ্ঠানের মালিক রাকেশ সাহার মোবাইল ফোনে একাধিকবার রিং করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন